মিরপুরে প্লাস্টিক কারখানায় আগুন, ১২ জনের লাশ উদ্ধার
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ রাজধানীর মিরপুর ১-এ নাসিম প্লাজার পাশে একটি প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কারখানা ভবনে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত বার জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, দগ্ধ হয়েছে তিনজন, আহতও হয়েছে দু’জন।
শনিবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটে অ্যাপকো বাংলাদেশ লিমিটেড নামে ওই প্লাস্টিক পণ্য তৈরির চারতলা বিশিষ্ট কারখানার নিচতলায় বয়লার বিস্ফোরণে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের ২০ ইউনিটের প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
অগ্নিকাণ্ডে বার জনের মৃত্যু হয়েছে বলে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।
তিনি জানান, আগুনের খবর পাওয়ার পর পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। অগ্নিকাণ্ডে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, দগ্ধ হয়েছেন তিনজন এবং ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়েছেন আরও দু’জন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান সাংবাদিকদেরকে জানান, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বিভিন্ন স্থানে মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছড়িয়ে আছে বলে শুনেছি।
ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) মেজর শাকিল নেওয়াজ জানান, কারখানাটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এতে কেমিকেল দ্রব্য ছিল বিধায় আগুন নেভাতে সময় লেগেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আগুনের কারণ জানা যাবে।
প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টা পর ৭টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও দমকলকর্মী ও পুলিশ সদস্যরা তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান মেজর শাকিল নেওয়াজ।
তিনি আরও জানান, কারখানা ভবনটি এখনও ঝুঁকিপূর্ণ। এর ভেতরে এখনও অনেক রকমের কেমিকেল দ্রব্য রয়েছে। এ কারণে হতাহতদের অনুসন্ধানে দমকলকর্মীদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে।
অ্যাপকো লিমিটেডের নিরাপত্তাকর্মী আবুল কাশেম সাংবাদিকদেরকে জানান, শনিবার কারখানার সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শিফটে ৭৫-৮০ জন কাজ করছিলেন।
এদিকে, অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে তিনজনের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। এর মধ্যে দু’জন নারী এবং অপরজনের লাশ পুরোপুরি পুড়ে যাওয়ায় পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
এছাড়া, অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ কারখানার দুই নিরাপত্তাকর্মী ও এক শ্রমিককে উদ্ধার করে ঢামেকে ভর্তি করা হয়েছে। এরা হলেন- কারখানার নিরাপত্তা প্রধান তৌহিদুল ইসলাম (৪২) ও নিরাপত্তাকর্মী কামাল হোসেন (৩৫)। এদের মধ্যে তৌহিদের শরীরের প্রায় ২৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে, আর ৩৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে কামালের। এ দু’জনের পর কারখানার নিচতলার শ্রমিক রবিউল ইসলামকে (২৫) দগ্ধাবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেকে নিয়ে আসা হয়।
অ্যাপকো লিমিটেডের মালিকের নাম আনিসুজ্জামান খান। ওই কারখানায় ১৪৩ জন কর্মচারী কাজ করেন বলে জানান কারখানার নিচ তলার ফটোকপি দোকানের কর্মী জহির।
অ্যাপকো লিমিটেডের মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ মমিনুল ইসলাম টুটুল সাংবাদিকদেরকে বলেন, আমি কারখানার বাইরে ছিলাম। বিকেলে হঠাৎ বিকট শব্দ শুনি। কাছে গিয়ে দেখি বয়লার বিস্ফোরণে আমাদের কারখানায় আগুন লেগেছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নিয়ন্ত্রণকক্ষের ডিউটি অফিসার ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদেরকে জানান, আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।