কামারচাক ইউপি’র সাবেক মেম্বার তাহির আলী এখনও হাসপাতালে : পুলিশী ভূমিকা নিয়ে হতাশ তার স্বজনরা
মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজারঃ পুলিশী ভূমিকায় হতাশ সাবেক মেম্বার তাহির আলী এখনও হাসপাতাল ছেড়ে বাড়ি ফিরতে সাহসী হচ্ছেননা। এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউপির সাবেক মেম্বার তাহির আলী জানান- করাইয়ার হাওরস্থ একখন্ড ক্ষেতের জমি ও বাড়ির ভেতরের একখন্ড জমি নিয়ে চাচাতো ভাইদের সাথে বিরোধের ব্যাপারে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ হয়েছে। সালিশে তাহির আলী মেম্বার করাইয়ার হাওরস্থ তার ক্ষেতের জমিটুকু চাচাতো ভাইদের নামে লিখে দেয়ার সিদ্ধান্ত দেয়া হলেও, বাড়ির ভেতরের জমিটুকু তার চাচাতো ভাইয়েরা তার নামে লিখে দেয়ার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত না দেয়ায় একতরফা ঐ সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি তাহির আলী মেম্বার। একপর্যায়ে, চাচাতো ভাইয়েরা দেওয়ানি আদালতে মামলা ঠুকে দিলে বিরোধে যোগ হয় নতুন মাত্রা। মামলার শুনানীতে হাজিরা না দিয়ে মামলাটি যাতে চাচাতো ভাইদের পক্ষে একতরফা রায় হয় সেজন্যে তাকে হুমকী-ধামকী দিয়ে আসছিল তারা। এরই জের ধরে তাহির আলীকে গত ১৫ জানুয়ারী রাত ১০টার দিকে স্থানীয় করাইয়া বাজারস্থ তার নিজ দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে একই বাজারস্থ চাচাতো ভাইদের চায়ের দোকানের সামনে চাচাতো দুই ভাই মবশ্বির আলী ও আছকন আলী, মবশ্বির আলীর তিন পুত্র রুকন আলী, ফয়ছল আলী, কয়ছর আলী সংঘবদ্ধভাবে তাহির আলীকে বেধড়ক মারপিট করে। উপর্যুপরি কিল-ঘুষি ও লাথির চোটে তাহির আলী মাটিতে পড়ে গেলে হামলাকারীরা তার গলায় চাঁদর পেঁচিয়ে টানতে শুরু করে বলে। একপর্যায়ে তাহির আলীর ভাগ্না এবং আরও দুজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন। বেধড়ক মারের চোটে অবচেতন তাহির আলীকে ঐ রাতেই মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্ত্তি করা হয়েছে। তবে, সরেজমিন এলাকা ঘুরে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে আরও একটি তথ্য। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী- জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলমান অবস্থায় চাচাতো ভাইদের দেয়া তাহির আলীর ২য় কন্যার জন্য একটি বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় বিরোধে যোগ হয় তৃতীয় মাত্রা। সার্বিক বিষয়কে কেন্দ্র করেই ঘটনার আগের দিন রাতে উপরোলিখিত চাচাতো ভাইয়েরা, চাচাতো ভাতিজারা ও চাচাতো ভ্রাতৃবধু ছালাতুন বেগম চড়াও হয়েছিল তাহির আলীর পরিবারের উপর। ঘেরাও করা হয়েছিল তার বসতগৃহ। উল্লেখিত ঘটনার ব্যাপারে তাহির আলীর স্ত্রী রওশন আরা চৌধুরী উপরোলিখিত চাচাতো ভাইয়েরা, চাচাতো ভাতিজারা ও চাচাতো ভ্রাতৃবধু ছালাতুন বেগমকে আসামী করে রাজনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করলেও, তা এফআইআর করা হচ্ছিলনা। ঘটনার প্রায় একসপ্তাহ পর জেলা সদরের একজন সিনিয়র সাংবাদিকের হস্তক্ষেপে মামলাটি(নং- ১৫, জিআর- ১৫, তারিখ- ২১/০১/২০১৫ইং) রেকর্ড করা হলেও এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্তও আসামীদেরকে গ্রেফতারে পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানা গেছে। সরেজমিন দক্ষিন করাইয়া বাজারের অধিকাংশ ব্যবসায়ীসহ উপস্থিত লোকজন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।