ঝুলে ফেলানীর লাশ, দুলে জাতির বিবেক
৭ জানুয়ারী ফেলানী দিবস
ফকির মিলন শাহ্: ফেলানীর জন্ম উত্তরের প্রান্তিক জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় দক্ষিণ রামখানা ইউনিয়নের বানারভিটা গ্রামে ১৯৯৬ সনে। বাবা দিন মজুর নুরুল ইসলাম, নুরু আর মা জাহানারা খাতুন ফেলানীর জন্মের ৫ বছর পরে জীবিকার সন্ধানে সপরিবারে ভারতের দিল্লী চলে যায়। শিশু ফেলানী শৈশব পেরিয়ে যখন কৈশরে পৌঁছে তখন সহজাত বাঙালি পরিবারের মত মেয়ের সংসার গড়ার প্রশ্ন বাবা মার নিকট প্রবল হয়ে উঠে। মেয়ের বিয়ে দেয়ার জন্য বাবা তাকে নিয়ে দেশে ফিরে আশার পথে ২০১১ সনে ৭ জানুয়ারী ভারতের অন্তপুর- দিনহাটা সীমান্তের খিতারেরকুঠি এলাকায় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ ১৮১ ব্যাটালিয়নের চৌধুরীহাট ক্যাম্পের বিএসএফ জোওয়ানদের অমানবিক ও নির্মম নিষ্ঠুরতার স্বীকার হয়ে কাঁটাতারে ফেলানীর নিথর দেহ ঝুলে থাকে। কথিত আছে যে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের সময় বিএসএফ সদস্যরা তাকে গুলি করে হত্যা করে। কিন্তু আসল ঘটনা এখনও ফেলানীর ঝুলন্ত লাশের মত ঝুলন্ত রয়ে গেছে। ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে জানা গেছে যে, সীমান্ত অতিক্রমের সময় বিএসএফ সদস্যরা ফেলানীকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায় এবং সেখানে আটকে রেখে তার উপর নির্যাতন করা হয়। এ নির্যাতনের কারণে তার মুত্যু হতে পারে বা অসুস্থ হলে কৌশলে তাকে কাঁটাতারে ঝুলে রেখে মাতাল বিএসএফ সদস্যরা তাকে অমানবিকভাবে সকল দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনকে উপেক্ষা করে গুলি করে হত্যা করে উল্লাস্ প্রকাশ করেছিল। এ ঘটনায় অবাক হয়েছে বিশ্ববাসী, প্রতিবাদের ঝড় উঠে বাংলাদেশের সর্বত্র। এমনকি ভারতীয় বিভিন্ন মিডিয়া এ ছবি প্রকাশ করে এবং ভারতীয় মানবাধিকার সংস্থাগুলো সোচ্চার হয়ে উঠে।বাংলাদেশ ও ভারত ছাড়াও বিশ্ব মিডিয়ায় ঝড় উঠে এনিয়ে। ফেলানী খাতুনের ঝুলন্ত লাশের সাথে দুল লাগে জাতির বিবেকের কাজে। প্রশ্ন জাগে আমরা কি স্বাধীন দেশের নাগরিক না? ভারতীয় দন্ড বিধিতে অনুপ্রবেশকারীর শাস্তি কি বিনা বিচারে হত্যা?
ফেলানীরা কেন কাঁটাতারে ঝুলে আর জাতির বিবেকবান মানুষ কেন কাঁদে তার যথাযথ তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। মুঘল, ব্রিটিশ, পাকিস্তান পেরিয়ে ১৯৭১ সনের এক অসম জনযুদ্ধের মাধ্যমে এদেশের লাখ কোটি মানুষ হানাদার,বর্বর বাহিনীকে পরজিত করে এ দেশ ও তার মানুষকে মুক্তির সাধ দিয়েছেন। বিশ্বের ইতিহাসে আমারা এখন একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। আমাদের একটি নিদিষ্ট ভূমি আছে, আমাদের একটি মানচিত্র আছে, আমাদের একটি পতাকা আছে, আছে আমাদের ষোলকোটি মানুষের একটি জনগোষ্ঠি, আছে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী, আছে আমাদের একটি সরকার ব্যবস্থা। তবু কেন ফেলানীরা বিনা বিচারে নির্মমভাবে কাঁটাতারে ঝুলে মরে? আমাদের দেশের নাগরিকরা গড়ে প্রতিদিন একজন করে আমাদের বন্ধু প্রতিম প্রতিবেশী দেশ ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর হাতে হয় মৃত্যু বরণ করছে না হয় নানা ভাবে নির্যাতন ও হয়রানীর স্বীকার হচ্ছে। ভারত সরকার তার দেশের ভিতর আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারলেও সীমান্তে কেন তা করে না? আমাদের জানা মতে ভারতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে অনিয়ম ও দূর্নীতি খুব কম হয়। কারণ যারা এ কাজ করে তারা জানেন যে, ভারতীয় দূর্নীতি দমন সংস্থার হাতে একবার ধরা পড়লে তিনি যতই রাঘব বোয়াল হন না কেন তার কোন মাফ নেই। আমাদের দুর্নীতি প্রতিরোধ সংস্থা গুলোর মত খাজা বাবার দরবার না। যে যায় সে কামিয়াব হয়ে ফিরে আসে। সাধু শয়তানের কোন পার্থক্য থাকে না। ভারত সরকার সুপ্রতিবেশী সুভল আচরণ এবং দু‘দেশের সীমান্ত ও অভ্যন্তরিণ নিরাপত্তার জন্য কেন সীমান্তে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে না। যে ব্যক্তিটি সীমান্ত অতিক্রম করে বা ভারতীয়দের ভাষায় অনুবেশকারী তাকে ধরে আইনগতভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার, কেন সে এ কাজ করল, তার উদ্দেশ্য কি, তার গড ফাদার কে বা কারা। কারণ সীমান্ত এলাকায় যারা এ যাবত নিহত বা নির্যাতিত হয়েছে তাদের অধিকাংশই অশিক্ষিত বা অর্ধ শিক্ষিত এবং গরীব ও অসহায় পরিবারের লোক। তাদের একার পক্ষে চোরা কারবারী বা ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে কোন কাজ করা সম্ভব নয়। এসব অপকর্মের হোতারা যেমন বাংলাদেশে তেমনি ভারতের অভ্যন্তরে আছে। যারা সীমান্তে মারাপরে বা আহত হয় বা ধরা পরে তারা শুধুমাত্র ক্যারিয়ার হিসেবে কাজ করে। এদেরকে তো হত্যা করে সকল সমস্যার সমাধান হবে না। কারণ এদের মুল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে সৃষ্টি কর্তা প্রদত্ত আদম প্রজন্মের এ উর্ব্বর ভূমিতে তাদের নতুন ক্যারিয়ার তৈরীতে কোন অসুবিধা হয় না। চোরাকারবারীদের মূল হোতারা এখন দু‘দেশের ভূমিকে একাকার করে ফেলেছে। কারণ এখন আর তারা মালামাল এধার ওধার করে না। তারা এখন আন্তর্জাতিক মানের সন্ত্রাসী ও জঙ্গী গোষ্ঠির সাথে সংশ্লিষ্ট। এদের সহয়তাকারী হিসেবে কোন কোন সময় দু‘দেশের সীমান্ত রক্ষীদের একটি গোষ্ঠি সহায়ক ভূমিকায় থেকে যায় । তাই বাংলাদেশ ও ভারতের উচিত সীমান্ত সন্ত্রাসীদের সঠিক তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে দু‘দেশের যৌথ সিদ্ধান্তে সমস্যার সমাধান করা এবং সীমান্ত হত্যা ও চোরাকারবারি বন্ধ করা।
ফেলানীর বাবা অশিক্ষত গরীব অসহায় নুরু মিয়ার নিকট দিল্লি কত দুর তা স্বপ্নেও ভাববার কথা না। দিল্লিকা লাডু ‘ যোভি খাই গা, ওভি পস্থায় । আর ‘যোভি নেহি খায় গা ওসকো ভি পস্থায়’। এ লেখক বুহত্তর রংপুর এলাকার বাসিন্দা হবার কারণে তার নিকট এটি পরিস্কার যে ফেলানীর বাবার পক্ষে পরিবার পরিজনসহ একাই দিল্লি যাবার কথা ভাবনার বাইরে। তাকে ভাগ্য পরিবর্তনের চেরাগ দেখিয়ে ছিল নিশ্চিয় কোন দালাল। দিল্লি গিয়ে ভাগ্য পরিবর্তনের রঙ্গীন স্বপনে বিভোর হয়ে সাধারণ মানুষ নুরু মিয়া দালালের হাত ধরে পারি দেয় অবৈধ পথে দিল্লির উদ্দেশ্যে। নুরু মিয়ার স্ত্রী জাহানারা খাতুনের বক্তব্য সূত্রে জানা যায় যে, সেখানে তারা মানবেতর জীবন যাপন করেছে। তিনি বলেছেন “অসন্মান ও লজ্জা নিয়ে দ‘ুমোট ভাত খাওয়ার চেয়ে সন্মান নিয়ে দেশে একবেলা খেয়ে না খেয়ে থাকা অনেক ভাল।” দিল্লিতে ফেলানীর বাবা ইট ভাটায় চাকুরী করত এবং তার মা গৃহ কর্মী হিসেবে মানুষের বাসায় বাসায় কাজ করত বলে জানা যায় । এ কাজের মান বাংলাদেশের কাজের মানের চেয়ে কোন অংশে ভাল না। তবু কেন ফেরানীর বাবার মত লোকজন ভুল তথ্য শুনে প্রলোভনে পরে নিজের এবং পরিবারের সর্বনাশ করে বাংলাদেশ হতে ভারতে যায়। আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ভারতের সাধারণ মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থার চেয়ে অনেকাংশে ভাল বলে বর্তমান বিভিন্ন তুলনামূলক অর্থনেতিক পর্যালোচনায় দেখা যায়। এখনো সমগ্র ভারতে ধনী দরিদ্রের বৈষম্য আকাশ পাতাল। সেখানে এখনো কোন কোন অঞ্চলে সামন্তবাদী সমাজ ব্যবস্থা চালু আছে। মাত্রা পিছু গড় আয় বাংলাদেশের চেয়ে ভরতের বেশী হলেও সেখানে এখনো কোন সুষ্ঠু সমাজ ব্যবস্থা কায়েম হয়নি। এছাড়াও রাষ্ট্র সেখানে সকল নাগরিকের মৌলিক ও মানবিক অধিকার সমূহ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। পুঞ্জিবাদী অর্থনীতির দেশ ভারতে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করে। ভারতের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যেমন বৈষম্যমূলক তেমনি বিশ্বের বৃহত্তর ধর্মনিরপেক্ষ দেশের দাবীদার ভারতে সব চেয়ে বেশী ধর্মীয় ও বর্ণবাদী সমস্যা। যা কোন কোন সময়ে ধর্মীয় অসন্তোষ ও বিবাদের সৃষ্টি করে থাকে। বিশেষ করে ১৯৪৭ সনে ভারত বিভক্তের সময় থেকে ভারতের মুসলমানরা নানা প্রকার ধর্মীয় বিরম্বনার স্বীকার হয়ে আসছে। সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন নানা প্রকার সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক প্রতিকূলতার মধ্যে দিনাতিপাত করছে, সেখানে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারী মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন কিভাবে কোন সাহসে যায় তা ভেবে দেখার বিষয়। আমার জানা মতে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সময়ে যে সকল সাধারণ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক ভারতে গেছে তাদের অধিকাংশ নানা প্রকার দুঃখ কষ্টের মাঝে দিনাতিপাত করছে । তারা এখন আপসোস করে কেন তারা তাদের জন্মভূমি সোনার বাংলাদেশ ছেড়ে এখানে এল। এখন তারা না পারে দেশে ফিরে আসতে, না পারছে সেখানে স্বাচছন্দে বসবাস করতে। তারা এবং তাদের প্রজন্ম এখন নানা প্রকার হতাশা নিয়ে সেখানে রয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনেতিক পরাশক্তির দেশ ভারত। এখন বিশ্ব অর্থনীতির মোড়ল হবার স্বপ্ন দেখছে। সার্ক ভূক্ত দেশ গুলোর মানব উন্নয়ন রির্পোট অনুযায়ী ভারতের বর্তমান জনসংখ্যা ১২৫.৮৪ কোটি এবং মাথা পিছু আয় ৩,২৮৫ মার্কিন ডলার। মাথাপিছু এ আয়ের হিসাবের বাস্তবতা বাস্তব ক্ষেত্রে ভিন্ন। কারণ একবিংশ শতাব্দীতেও বিভিন্ন জায়গায় এখনো ভুত, প্রেতাত্মা, ডাইনী ইত্যাদিতে বিশ্বাসী লোকের অভাব নেই। সেখানকার সমাজ ব্যবস্থায় এখনো জ্ঞানগুরু, সমাজপতি, এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের শাসন ও শোষন ব্যবস্থা বলবত আছে । এ থেকে প্রমাণ করে যে ভারতের উন্নত অর্থনৈতিক অবস্থা কসমেটিক বা ফানুস সিস্টেমের উপর নির্ভরশীল। উন্নত অর্থনীতির দাবীর ভারত এখনো রাষ্ট্রে সুসম কোন অর্থনৈতিকও সামাজিক সমতা কায়েম করতে পারেনি। সেখানে এখনো বিশাল অংকের নারী নির্যাতিত হয়, মানুষকে বিনা বিচারের হত্যা করা হয়। এচাড়া পরষ্পর বিবাদের কারণে প্রতিহিংস্যার কারণে মানুষ খুন হয়। বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ছত্তিরগড়, ও ঝড়খন্ডের আদিবাসী সাঁওতালরা এখন মূল ধারার সাথে সম্পৃক্ত হতে পারেনি। সেখানে জ্ঞানগুরু ঈশ্বরের প্রতিভূ। সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা ডয়েছে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত দু‘বছরে ডাইনী অপবাদে চাবুক মেরে, লাঠিপেটা করে, ঢিল মেরে ২৭০ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার, অবাধ নেশা গ্রস্থতা এবং হীনব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধার ইত্যাদি কারণে ভারতের সামাজিক ন্যায় বিচার ও মানবাধিকার শব্দটি অশ্রুত রয়ে গেছে। ভারতের এ সমাজ ব্যবস্থা থেকে জন্ম নেয়া এবং বেড়ে উঠা ভারতীয় বর্ডার গার্ড বা বিএসএফ নিকট থেকে প্রতিবেশী বাংলাদেশের মানুষ ন্যায় বিচার বা মানবাধিকার কিভাবে আশা করে। ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত হত্যা বা সীমান্ত এলাকায় বাংলাদেশী নাগরিকের নির্যাতন বন্ধ করার জন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দক্ষতা, যোগ্যতা ও বিচক্ষণতা পূর্ণ আলোচনা এবং দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা। কিন্তু বাস্তবতা হলে উল্টো । যখন বাংলাদেশী কোন নাগরিক সীমান্তে নিহত বা নির্যাতিত হয় তখন আমাদের রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে সরকারের লোকজন তাদেরকে গরুচোরা, চোরাচালানী বা দুরবৃত্ত বলে অপবাদ দেয়, যা পরোক্ষভাবে ভারতীয় এ ন্যাকারজনক কাজকে সমর্থন যোগায়। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো তার দেশের নাগরিকের জনমাল রক্ষা করা । কিন্তু এ অধিকারটি থেকে দেশের নাগরিকরা বার বার যুগে যুগে প্রত্যারিত হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, সুশীল সমাজ এবং দেশী ও বিদেশী মানবাধিকার সংস্থা গুলোর এর তীব্র প্রতিবাদ করলেও রাষ্ট্র কেন যেন নিরব থেকে যায় বার বার। সম্প্রতি ভারতের জম্মু কাশ্মীরে ৩ যুবককে বিচার বহির্ভূত হত্যার জন্য সেনাবাহিনীর ৭ সদস্যর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের কিশোরী ফেলানীকে নির্মম নির্যাতন এবং হত্যার পর অমানবিকভাবে কাঁটা তারে ঝুলে রাখার জন্য ভারতীয় বিএসএফ সদস্যদের খালাস দেয়া হয়েছে। এ দৃষ্টান্ত সে দেশের বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্য করেছে। ফেলানীর নির্মম হত্যাযজ্ঞের কারণে দেশের বিবেকবান মানুষ কেঁদেছে। সারা বিশ্বের মিডিয়ায় ফলাও করে নিউজ করেছে । প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়েছে সারা বিশ্বে । তবু কেন ফেলানী হত্যার সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার হলো না। যতদিন এর কোন সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার হবে না, ততদিন এ দেশের বিবেকবান মানুষের হৃদয় নিরবে কাঁদবে ।
স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অস্থিতের প্রতিফলন এবং রাষ্ট্রের নাগরিকদের অধিকার রক্ষার জন্য দেশবাসী ফেনালীসহ সকল হত্যা, নির্যাতন ও গুমের ন্যায় বিচার চায় । আর সে সংগে দেশবাসীকে সর্তক ও সজাগ করতে হবে যেন তারা অবৈধভাবে দালালদের পাল্লায় পরে তাদের চাটুকরী লোভনীয় প্ররোচনা ও প্রলোভনে পরে অবৈধভাবে ভারতে গমন বা চোরাচালানী কাজে নিয়োজিত না হয়। কারণে সেখানে কোন সোনার হরিণের পদচিহৃ নেই। আছে পদে পদে বিড়ম্বনা আর লাঞ্চনা। এ দায়িত্ব রাষ্ট্র এবং সরকারকে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে দেশবাসীকে সচেতন করার জন্য ফেলানী হত্যার সেই ০৭ জানুয়ারী দিনটিকে ফেলানী দিবস হিসেবে প্রতি বছর জাতীয় পর্যায়ে পালন করতে হবে।
তারিখঃ রাজশাহী-০৬/০১/২০১৫
(ফকির মিলন শাহ্)
লেখকঃ শ্রমজীবী সংগঠক ও কলাম লেখক
E-mail: [email protected]