শহীদ সান উলার পরিবার ৪৩ বছর ধরে শহীদ পরিবারের তালিকা থেকে বঞ্চিত
উত্তম কুমার পাল হিমেল,নবীগঞ্জ থেকেঃ আগামীকাল ১৬ ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। বিজয় দিবস এক দিকে যেমন আনন্দের অন্য দিকে বেদনা ও কষ্টের। ১৭৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে রক্তয়ী যুদ্ধের পর ৩০ল শহীদ আর দু’ল মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাঙ্গালী জাতি অর্জন করেছেন স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট বাংলাদেশ । যাদের আত্বত্যাগ আর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে লাল সবুজের পতাকা সেই সব শ্রেষ্ট সন্তানদের অনেক শহীদ পরিবার রয়েছেন যারা আজও সব ধরণের রাষ্ট্রিয় সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। সরকার কিংবা কোন মহলের প থেকেই তাদের খোঁজ খবর নেয়া হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের প্রজাতপুর গ্রামের মহান মুক্তিযোদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে এক মাত্র শহীদ সান উলার পরিবার স্বাধীনতা প্রাপ্তির দীর্ঘ ৪৩বছর অতিবাহিত হলেও আজও তারা শহীদ পরিবার হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি। পরিবারের প থেকে শহীদ পরিবারের স্বৃকৃতিটুকু পেতে বিগত এক যুগের ও বেশী সময় ধরে বিভিন্ন স্থানে ধরনা দিয়েও তারা প্রাপ্ত সম্মানটুকু পাননি। মহান বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার হিসাবে তারা সৃকৃতি না পাওয়ায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিবছর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্থিযোদ্ধা পরিবারকে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্টানে তাদের দাওয়াত ও করা হয়না। অথচ ৩০ল শহীদ এর মধ্যে শহীদ সান উলা ও একজন সেই খবরটি রাখার যেন কেউ নেই। এলাকাবাসী জানান,ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের প্রজাতপুর গ্রামের শহীদ সান উলা ছিলেন ততকালীন সময়ে একজন ইউপি সদস্য ও পেশায় ছিলেন ডাক্তার এবং মুক্তিযোদ্ধো। মুক্তিযোদ্ধ চলাকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘঠিত করে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে জনমত গঠন করেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যে সহযোগিতা করার অপরাধে বিজয় প্রাপ্তির আগ মুহুর্তে ৭১সালের সেপ্টেম্বর মাসে এলাকার কিছু সংখ্যক রাজাকার দেশ বিরোধী আলবদররা শহীদ সান উলাকে ইনাতগঞ্জ বাজারে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হাতে ধরিয়ে দেয়। পাকিস্থান সেনাবাহিনী তাকে ধরে নিয়ে তাদের ব্যবহৃত লঞ্চে নিয়ে এক দিন এক রাত নির্যাতন করে পর দিন ইনাতগঞ্জের পার্শ্ববর্তী আলীপুর গ্রামে বিবিয়ানা নদীর পাড়ে একটি গাছের সাথে বেধেঁ গুলি করে হত্যা করে। ছোট ২ মেয়ে ৪ সন্তান রেখে যাওয়া শহীদ সান উলার স্ত্রী তাদের সন্তানদের অনেক কষ্টে বড় করলেও তিনি আর বর্তমানে বেচে নেই। জীবদ্দশায় তিনি দেখে যেতে পারেননি যে তার সন্তানরা শহীদ পরিবার হিসাবে তালিকাভূক্ত হয়েছেন। নবীগঞ্জ শহীদ মিনারে শহীদ এর তালিকায় ৫৮ নাম্বারে শহীদ সান উলার নাম লিপিবদ্ধ আছে। তাছাড়া ২০১২ সালে ইনাতগঞ্জে সকারী গেজেটভূক্ত একটি রাস্তা ইউনিয়ন পরিষদের সুপারিশের ভিত্তিতে শহীদ সান উলার নামে নামকরণ হয়েছে। এলাকাবাসী জানান,মুক্তিযোদ্ধা শহীদ সান উলা ছিলেন এলাকার গরীব দু;খী মানুষের বন্ধু। গরীব ও অসহায় মানুষের সুখে দু:খে পাশে দাড়াতেন এবং যে কোন কাজে সহযোগিতা করতেন। সে জন্যই স্বধীনতার আজ ৪৩ বছর হলেও আজও এলাকার মানুষ শহীদ সান উলাকে ভুলতে পারেননি। মানুষকে আপে করে বলতে শুনা যায়,তিনি অন্তান্ত ভাল লোক ছিলেন। তিনি বেচে থাকলে হয়তো এত দিনে এলাকার ভাগ্যর অনেক উন্নত হত। এলাকাবাসী দাবী করে বলেন মুক্তিযোদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ বর্তমান রাষ্ট মতায় । অনেক শহীদ পরিবারই তালিকাভূক্ত হয়েছেন। তাই আগামী বছর বিজয় দিবসের আগেই শহীদ সান উলার পরিবারকে যেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবার হিসাবে সৃকৃতি প্রদান করা হয় এ ব্যাপরে তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন। শহীদ সান উলার পুত্র সিলেটের ডাক,চ্যানেল এস প্রতিনিধি রাকিল হোসেন জানান,আমার বাবা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। রাষ্টিয় সৃকৃতি না পেলেও একজন শহীদ এর সন্তান এবং শহীদ পরিবার হিসাবে আমরা গর্বিত। তিনি বলেন স্বাদীনতা যোদ্ধে যারা স্বজন হারিয়েছেন তার যে কতটুকু যন্ত্রনা একজন শহীদ এর সন্তান হিসাবে অনুভব করি। শহীদ পরিবার হিমাবে সৃকৃতি পেতে অনেক দপ্তরে যোগাযোগ করেছি। ৪৩বছর ধরে আমাদের শহীদ পরিবার হিসাবে সৃকৃতি না দিয়ে এ অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। শহীদ পরিবার হিসাবে শহীদ সান উলার নাম তালিকাভুক্ত করার জন্য তিনি সরকারের নিকট জোর দাবী জানান।