ঢাক-ঢোল পিটিয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী আল্লাদী’র বিয়ে!

alladiসুরমা টাইমস ডেস্কঃ ব্যপক প্রচার-প্রচারনা, নতুন করে আইন প্রণয়ন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সচেতনা বৃদ্ধিমূলক কার্য্যক্রম, কোনও কিছুর বিনিময়ে সমাজ থেকে বন্ধ করা যাচ্ছে না ‘বাল্য বিবাহ’। প্রশাসন বাল্য বিবাহ বন্ধে কঠোর অবস্থানে থাকলেও এক শ্রেণির অসচেতন মহল এবং রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় অব্যাহত আছে বাল্য বিবাহ। কখনও প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে আবার কখনও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় সংগঠিত হচ্ছে বাল্য বিবাহ।
শুক্রবার সন্ধ্যায় এমনই এক ঘটনা ঘটেছে বাঁকা গ্রামে। ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, অনুষ্ঠান করে একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হলো চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী আল্লাদী দাস (১১)।
পাইকগাছা উপজেলার বাঁকা গ্রামের যিশু দাস এর কন্যা সে। আল্লাদী স্থানীয় ৩১ নং বাঁকা-ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। একই সাথে আল্লাদী স্থানীয় দলিত স্কুলেরও চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।
এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, আল্লাদীর পিতা-মাতা নিজ বাড়িতে অনুষ্ঠান করে শুক্রবার সন্ধ্যায় পাশ্ববর্তি আশাশুনি উপজেলার বুড়িয়া গ্রামের রবীন মন্ডলের পুত্র সঞ্জয় মন্ডল (২৫) এর সাথে শিশু মেয়েটির বিয়ে হয়। স্থানীয় এক পুরোহিত হিন্দুধর্ম মতে আল্লাদীর কপালে সিদূর পরিয়ে বিয়ে সম্পাদন করেন। বিয়ের ঘটনায় এলাকার সচেতন কয়েক যুবক বাঁধা দিলেও একটি মহলের কারনে তা সফল হয়নি।
অভিযোগ উঠেছে, আল্লাদীর বিদ্যালয়ের শিক্ষক আলাউদ্দীন গোলদার ও দিপ্তি রানী কুন্ডুসহ কয়েকজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির ছত্রছায়ায় শিশু বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। এ ব্যাপরে জানতে চাইলে ওই দুই শিক্ষক বিয়ের বিষয়টিকে সমর্থন করে এ নিয়ে বেশী পিড়াপিড়ী না করার জন্য বলেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন, আল্লাদী আমার বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির নিয়োমিত ছাত্রী। তাঁর বিয়ের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে, বিদ্যালয়ের দু’জন শিক্ষকের সমর্থন রয়েছে এটি আমার জানা নেই।
এ ব্যপারে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের সহকারি শিক্ষা অফিসার নয়ন বলেন, আমি এই বিষয়ে খোজ নিচ্ছি। শিশু বিবাহ’র সাথে শিক্ষকদের সমর্থন থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিশু বিবাহ’র শিকার আল্লাদীর পিতা যিশু দাস শিশু বিবাহ’র ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী তাঁর আল্লাদীর জন্ম তারিখ ০৮/০৯/১৯৯৬ ইং হওয়ায় মেয়ের বয়স ১৮ বছর পার হয়ে গেছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, আল­াদীর বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না। এমনকি আল্লাদীর জন্ম নিবন্ধন সনদ তিনি কারও নিকট দেননি বলে দাবী করেছেন।
এ ব্যপারে নাম প্রকাশে, অনেচ্ছুক এলাকার এক সচেতন যুবক বলেন, আল্লাদীর জন্ম নিবন্ধন সনদ ভূয়া। এই ভুয়া সনদ দিয়ে পুরোহিত বিবাহ সম্পাদন করেছে। এ ব্যপারে এলাকাবাসী শিশু বিবাহ’র সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের নিকট দাবী জানিয়েছেন।