শফিউল হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান রাষ্ট্রপতি
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ কে এম শফিউল ইসলামের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মঙ্গলবার রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) চতুর্থ সমাবর্তনে অংশ নিয়ে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।
তিনি বলেছেন, “উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজন জ্ঞানতাপস শিক্ষক এভাবে খুন হবেন তা কারো কাম্য নয়। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়ার আহ্বান জানাই।”
গত শনিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শফিউলকে। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসাবে অর্ধশতাধিক লোককে আটক করে ১১ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে।
নিহতের ছেলে সৌমিন শাহরিদ জেভিনের ধারণা, তার বাবার হত্যার সঙ্গে জঙ্গিরা জড়িত। রুয়েট সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি বলেন, “আমি গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি, সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম শফিউল ইসলাম দুস্কৃতকারীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় গোটা জাতির সাথে আমিও গভীরভাবে ব্যথিত ও দুঃখিত।
“আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার ও নিহতের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি এবং তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।”
বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষকদের গবেষণার ক্ষেত্র বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, “এ কথা অনস্বীকার্য যে শিক্ষার সাথে গবেষণা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কারণ গবেষণার মাধ্যমে সৃষ্টি হয় নতুন জ্ঞানের, যা সমাজের বিদ্যমান চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিজেদের গবেষণায় সম্পৃক্ত রাখতে হবে, বাড়াতে হবে গবেষণার ক্ষেত্র।”
রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে কী ধরনের গবেষণা হচ্ছে তা যেমন জানতে হবে, তেমনি বাংলাদেশের বাস্তবতার নিরিখে কর্মপন্থা ঠিক করতে হবে। “বিশ্বায়নের সঙ্গে যুক্ত থেকেও সমুন্নত রাখতে হবে নিজস্ব কৃষ্টি আর গৌরবকে। শিক্ষা যেন মানবতার কল্যাণে ব্যবহৃত হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে। বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসমূহের প্রতি আহ্বান জানাই।”
সমাবর্তনে ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি জাতির প্রতি তাদের দায়িত্বও মনে করিয়ে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আবদুল হামিদ।
“মনে রাখবে, তোমাদের এ পর্যায়ে নিয়ে আসতে সমাজের মেহনতি মানুষের অবদান রয়েছে। তাদের কাছে তোমরা ঋণী। তোমরা তোমাদের অর্জিত জ্ঞান, মেধা ও মনন দিয়ে দেশমাতৃকার কল্যাণ করতে পারলে সে ঋণ কিছুটা হলেও শোধ হবে।”
সমাবর্তনে এবার মোট ২ হাজার ৫১৩ জনেক ডিগ্রি দেওয়া হয়। এছাড়া ৩৫ জন শিক্ষার্থীকে তাদের কৃতিত্বের জন্য দেওয়া হয় স্বর্ণপদক।এবার সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। রুয়েটের উপাচার্য মোহাম্মদ রফিকুল আলম বেগও বক্তব্য দেন।