বিশ্বনাথে উজাড় হচ্ছে বাশঁঝাড় : কমে যাচ্ছে আবাদি জমি
শাহ্ তোফাজ্জুল হোসেন ভান্ডারী বিশ্বনাথ প্রতিনিধিঃ জনসংখ্যার পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বাড়িঘর। র্নিমাণ হচ্ছে ছোট-বড় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মার্কেট, অফিস আদালতসহ অসংখ্য স্থাপনা, আবাদি জমি নষ্ট করার পরিবর্তে অধিকাংশ লোকজন বন-জঙ্গল ও বাশঁঝাড় কেটে এসব স্থাপনা র্নিমাণ করছে। ফলে প্রকৃতির আবাদি নিদর্শন বাশঁ-বনগুলো উজাড় হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় লন্ডন বলে খ্যাত ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে ঘটিত সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা। বিশ্বের প্রতিটি দেশে বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ইতালিসহ ইউরোপের সকল দেশে বিশ্বনাথের অধিকাংশ লোক বসবাস করছে ও কোটি কোটি টাকা উর্পাজন করে চলেছেন। আর দেশে ফিরে অতিরিক্ত বিলাশবহুল বাড়ি ঘর র্নিমাণ করছেন। ফলে আবাদি জমি কমে যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে বন-জঙ্গল ও বাশঁঝাড়ের উপর। বন-জঙ্গল উজাড় হয়ে যাওয়ার ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশ ভারসাম্য হারাচ্ছে। লোপ পাচ্ছে শত রকমের বন্যপ্রাণী। অন্যদিকে বাঁশের তৈরি আসবাব পত্রের চাহিদা কমে গেছে। বাঁশের তৈরি জিনিষের পরিবর্তে প¬াষ্টিকের জিনিষের দাম কম, দেখতে ও সুন্দর এবং আধুনিক। তার পরও বাঁশের তৈরি জিনিষপত্র যেমন ডালি, চাঙ্গারী, করপা, চালুনি, ঝুড়ি, কুলা, টুকরি, ডাম, ধাড়া, গোছাচ, খলই ও পাটিসহ বিভিন্ন জিনিষ পত্রগুলোর বিকল্প হয় না। এগুলো বাঁশের তৈরি হলেও বেশ আরামদায়ক ও টেকসই। কিন্তু বাঁশ শিল্পীরা তাদের পেশা পরির্বতন করায় বাঁশের তৈরি এসব জিনিসপত্র এখন বাজারে দেখা যায় না। পেশা পরির্বতনের কারণ হিসেবে এক বাঁশশিল্পী জানান আগে প্রচুর বাঁশ পাওয়া যেত, দামও কমছিল। ফলে বাঁশের তৈরি জিনিসপত্র অল্প দামে বিক্রি করতে পারতাম। এখন বাঁশের আমদানি কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। ফলে জিনিসপত্র অল্প দামে বিক্রি করা যায় না। বেশি দামে ক্রেতারা কিনতে চায় না। কারণ, এর চেয়ে প্লাষ্টিকের জিনিসপত্রের দাম সস্তা, দেখতেও সুন্দর। বাঁশের কাজ করে এ দ্রব্যমুল্যের বাজারে সংসার চালানো খুবই কষ্ট। কাজেই আমাদের পেশা পরির্বতন করতে হচ্ছে কথা বললেন বাঁশশিল্পী ময়না মিয়া। দু’যোগ পুর্বেও উপজেলার কয়েক শতাধিক পরিবারের বাঁশশিল্পীরা নিয়মিত বাঁশের কাজ করত। এখন এ বাঁশশিল্পীরা এসব কাজ না করে তাদের পেশা পরির্বতন করেছে। আগে জাগিরালা, মঙ্গলগিরি, র্দুলভপুর, পয়াগমহল, কাবিলপুর, পাকিচিরি, কান্দিগাও, চারিগ্রাম, আকিলপুর, ভাটপাড়া, রাজাপুর, আতাপুর, প্রতাপপুরসহ অসংখ্য গ্রামের মানুষ বাঁশের কাজ করত। এখন বাঁশের ঝাড় উঝাড় হয়ে যাওয়ার ফলে বাঁশশিল্পীরাও হারিয়ে যাচ্ছে। বাঁশের ব্যবহার শুধু গৃহস্থালি জিনিষ-পত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। বলা যায় এর প্রধান ব্যবহারই গ্রামবাংলায় সাধারণ মানুষের গৃহ নির্মাণের কাজে। গ্রামের ৫০% মানুষই বাঁশের বাড়িঘর নির্মাণ করে থাকে। বাঁশের ঘর আরামদায়ক ও ভুমি কম্পরোধক। এছাড়াও বাঁশের ঘর তৈরিতে খরচও অনেক কম। পরিত্যক্ত বাঁশ উন্নতমানের জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার হয়। বর্তমানে উপজেলার প্রতিটি গ্রামে ঘুরে দেখা যায় লন্ডন, আমেরিকা, কানাডা, ইতালিসহ বিশ্বের সকল দেশের প্রবাসিরা টাকা উপার্জন করে আবাদি জমি ও বনজঙ্গল উজাড় করে বড় বড় অট্টালিকা তৈরি করেছেন। আর এ সকল অট্টালিকায় থাকার কেউ নেই। অনেকে বাসাবাড়ী তালা দিয়ে বিদেশে পাড়ি জমান। পরিত্যাক্ত থাকাবস্থায় বাসাবাড়ীতে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় বাসা বেধে থাকে। অধিকাংশ বাসাবাড়ীতে দেশের অন্যান্য জেলার ভাসমান লোকজন তাদের পরিবার নিয়ে বসবাস করছে।
…………………………………
বিশ্বনাথে সড়ক দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যু
বিশ্বনাথ প্রতিনিধিঃ বিশ্বনাথ উপজেলার রাজনগর গ্রামের মুজিবুর রহমান (৩৫) সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৯ নভেম্বর রাত অনুমানিক ১২টায় সিলেট সিলেট থেকে অটোরিকশা সিএনজিযোগে বাড়ি ফেরার পথে সিলেট রেলগেইট ক্রসিং পেরুবার সময় রেলের ইঞ্জিনের সঙ্গে অটোরিকশাটি ধাক্কা খেলে মুজিবুর রহমান গুরুতর আহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত মুজিবুর রহমান রাজনগর গ্রামের মঞ্জুর আলীর পুত্র। গতকাল সকাল ১০টায় তাকে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।
বার্তা প্রেরক-
শাহ্ তোফাজ্জল হোসেন ভান্ডারী
মোবাইলঃ ০১৭১২-৪৫২৯৫৭
০৯/১০/১৪