পিতার যৌন নির্যাতনে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: এক কলংকিত ইতিহাসের জন্ম দিয়ে বাবার অনৈতিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে স্কুলছাত্রী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার তালেবপুর ইউনিয়নের কাংশা গ্রামে বুধবার ভোরে গাছ থেকে স্কুলছাত্রী লায়লা আক্তারের (১৩) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে সিংগাইর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী।
একজন সন্তানের কাছে সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় তার বাবা। অথচ সেই বাবাই যখন সন্তানের সম্ভ্রম আর নিরাপত্তার প্রধান হুমকি হয়ে উঠে তখন সবার বিবেক প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। বাবা-মেয়ের নিস্পাপ সম্পর্ককে প্রশ্নবিদ্ধ করতে হয়ত কিছু কিছু পশু ‘বাবা’ নামকে কলংকিত করে এভাবেই।
এ ঘটনার পর এলাকাবাসী সেই নরপশু বাবা নামের কলংক হিরো মিয়াকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামান।
ওসি সৈয়দুজ্জামান বলেন, স্কুলছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছে মেয়েটি তার বাবার যৌন নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে।
সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) এমএ হক জানান, ওই স্কুলছাত্রীর লাশ উদ্ধার করার সময় প্রতিবেশীরা তাকে জানায়, হিরো মিয়া প্রায়ই তার মেয়েকে যৌন নির্যাতন করতেন।
প্রতিবেশী শমসের আলী বলেন, জীবিকার তাগিদে ৫ মাস আগে হিরো মিয়ার স্ত্রী মাজেদা খাতুন বাহরাইনে যান। এর পর থেকে হিরো তার মেয়েকে শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করতে শুরু করেন।
প্রতিবেশী রুহুল কুদ্দুস বলেন, গত মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে লায়লা আক্তার আমার কাছে আসে। এ সময় সে তার বাবার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আনে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি লায়লার আপন বড় চাচা সুরুজ মিয়াকে বিষয়টি জানাই । এর পর সুরুজ মিয়া লায়লাকে বাড়িতে নিয়ে যান। এর পর সুরুজ মিয়া তার ছোট ভাই হিরো মিয়াকে মারধর করেন। এর পর সন্ধ্যায় হিরো তার মেয়েকে মারধর করেন।’
তিনি জানান, এ ঘটনার পর লায়লা আক্তার বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। সকালে পাশের একটি পরিত্যক্ত বাড়ির গাছে তার ঝুলন্ত লাশ দেখে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়।