মন্ত্রিসভায় রদবদল, আসছে নতুন মুখ!
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সম্প্রতি ধর্ম নিয়ে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর দেয়া বক্তব্যের পর তাকে মন্ত্রিসভা ও দল থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। আর এতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় শূন্য হওয়ায় এ মন্ত্রাণালয়ে নতুন নিয়োগের পাশাপাশি কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রির দপ্তর বদলের জোর আলোচনা চলছে। আর এ নিয়ে মুখিয়ে আছেন সরকারের ভেতরে-বাইরের অনেকেই।
মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করা হলে আগে মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করা কয়েকজন শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেতে পারেন। কোন মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী না দেয়া হলে সেই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন প্রধানমন্ত্রী। আর এতে প্রধানমন্ত্রীর উপর থাকবে কাজের বাড়তি চাপ।
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার জানান, শূন্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বণ্টন করা হলে প্রধানমন্ত্রীর উপর চাপ কমবে, কাজের গতিও বাড়বে। বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে লতিফ সিদ্দিকীকে অপসারণের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান মন্ত্রিসভায় ২৯ মন্ত্রী, ১৮ প্রতিমন্ত্রী এবং দু’জন উপমন্ত্রী রয়েছেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের দায়িত্ব পালন করা প্রধানমন্ত্রীর উপর যোগ হয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। বর্তমানে ১৮ জন প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে পাঁচজন পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। এরা হলেন- শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ড. ইয়াফেস ওসমান, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ।
আরো আটটি মন্ত্রণালয়ে একজন করে প্রতিমন্ত্রী আছেন। এগুলোর মধ্যে স্বরাষ্ট্র; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সামলাচ্ছেন দুই মন্ত্রী, যদিও এ দুই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একজন প্রতিমন্ত্রীর পাশাপাশি পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে বর্তমানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে দেয়া হতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। এর আগেও আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন নাসিম।
আর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হতে পারে শেখ ফজলুল করিম সেলিমকে। লতিফ সিদ্দিকীর অপসারণের পর ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে আসার আলোচনা চলছে জুনাইদ আহমেদ পলক ও আগে এই মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করা সাহারা খাতুনের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পালন করেছেন সাহারা খাতুন।
দৌড়ের তালিকায় প্রাক্তণ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির নামও শোনা যাচ্ছে। শিক্ষা এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ে একজন করে প্রতিমন্ত্রী আসার জোর আলোচনাও চলছে। ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফের দফতর পরিবর্তন হতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছে। মন্ত্রিসভায় ফিরে আসতে পারেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক।
এছাড়া সাবেক পরিবেশমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও শেখ ফজলে নূর তাপস মন্ত্রী হতে পারেন বলেও শোনা যাচ্ছে। এছাড়াও বিতর্কিত দু’একজন বাদও পড়তে পারেন মন্ত্রিসভা থেকে। নতুন মুখ ঢুকলে এ সপ্তাহের মধ্যে তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে পারে বলেও আলোচনা আছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় সফরে বুধবার ইতালী যাওয়ায় এই প্রক্রিয়া কিছুটা বিলম্বিত হতে পারে।
সরকারের একজন মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রিসভায় রদবদল সরকারের রুটিন ওয়ার্ক। মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি বাড়াতে সরকার প্রধান যে কোনো সময় তা করতে পারেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশররাফ হোসাইন ভূইঞা জানান, কলেবর বৃদ্ধি বা দপ্তর বদলের ব্যাপারে কোন নির্দেশনা তারা পাননি।