নবীগঞ্জের বহুল আালোচিত অঞ্জনা হত্যাকান্ড : ২ মাসেও গ্রেফতার হয়নি খুনিরা
(ফলোআপ সংবাদ) উত্তম কুমার পাল হিমেল, নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ)থেকেঃ নবীগঞ্জের দত্তগ্রাম গ্রামের হত দরিদ্র ও দিনমজুর পিতা রাজেন্দ্র সরকারের এক কিশোরী কন্যা অঞ্জনা সরকারকে লেখা পড়া শিখিয়ে মানুষ করে ভাল জায়গায় বিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৮ বছর বয়সে তার পিতা-মাতার কাছ থেকে নিয়ে আসে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান সহকারী সজল দেব নামের ব্যাক্তি। কথা থাকে তাকে সন্তানের মত স্নেহে লালন পালন করবে। সেই মোতাবেক তাকে আনার পরে নবীগঞ্জ আদর্শ প্রাইমারী স্কুলে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি করে। ৫ম শ্রেণী পাশ করতে না পারায় আর লেখাপড়া এগিয়ে যায়নি তার কপালে। নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রজনী গন্ধা কোয়াটারে প্রধান অফিস সহকারী একাাধিক বিয়ের অধিকারী সজল কান্তি দেব’র বাসায় পরিবারের একজন হিসেবেই থাকতো অঞ্জনা। গৃহপরিচালিকার কাজও করতো নবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের দত্তগ্রামের হত দরিদ্র রাজেদ্র সরকারের কন্যা অঞ্জনা রানী নম। কিন্তু চলতি বছরের ১৫ ই আগষ্ট শুক্রবার সকালে হাসপাতালের প্রধান সহকারী বহু অপকর্মের হুতা সজল দেব ও স্বপরিবারের লোকজন অঞ্জনাকে (ময়না তদন্ত রির্পোট অনুযায়ী) গলা টিপে করে বাসার ফ্যানের সাথে পড়নের ওড়না দিয়ে গলায় ফাসঁ লাগিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় রেখে বাহিরে তালা ঝুলিয়ে তাদের গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার করাব গ্রামে ভাতিজির বিয়ের অনুষ্টানে চলে যায় এবং চাবি রেখে যান পাশের রোমের ডাঃ বিথী বনিকের কাছে। পরদিন ১৬ আগষ্ট সকালে সজল কান্তি দেবের ড্রইং রুম থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় কাজের মেয়ে অঞ্জনার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সজল দম্পতি ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে দাবী করলেও নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী অঞ্জনাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবী করে ঘাতক সজলকে গ্রেফতারের দাবী জানান। পরে সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রেখে এ হত্যাকান্ডের গুরুত্বপূর্ন চাঞ্চল্যকর রহস্য ও তথ্য দিয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্র পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশ করেন । এরই মাঝে অবস্থা বেগতিক দেখে সপরিবারে আত্মগোপন করে পালিয়ে যায় সজল। এদিকে ঘটনার পর হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশ হাসপাতাল কোয়াটারের সজল দেবের বাসার মালামাল জব্দ করে চাবি টিএইচও ডাঃ অর্ধেন্দু দেবের কাছে রেখে যান।
নবীগঞ্জ থানা পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েও রহস্য উদঘাটন ও খুনিদের গ্রেফতার করতে না পারায় অবশেষে মামলাটি ডিবির কাছে হস্তান্তরের পর তদন্তের দায়িত্ব গ্রহনের ১ দিনের মাথায় ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেন ডিবি’র ওসি আব্দুর রহমান। তিনি জানান, ময়না তদন্ত রির্পোট অনুযায়ী অঞ্জনা আত্মহত্যা করেনি, তাকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন ও খুনিদের অতিসত্ত্বর গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এ েেত্র তিনি বাদী, স্বাীসহ সকলের সহযোগীতা কামনা করেছে। এছাড়া তদন্ত কর্মকর্তা হাসপাতালের বিভিন্ন র্কমকর্তা ও কর্মচারীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় তারা ঘাতক সজল দেবকে দ্রুত গ্রেফতার ও ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য তদন্ত কর্মকর্তার নিকট দাবী জানান। এদিকে মামলার প্রধান আসামী হাসপাতালের প্রধান সহকারী সজল দেবকে ঘটনার ৩ দিনের মাঝে নবীগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার করে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলী করা হলেও এখনো নয়া কর্মস্থলে যোগদান না করে আত্মগোপনে রয়েছে।
এ ঘটনায় নবীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অঞ্জনা রানী সরকারের হত্যাকান্ডের বিচারের দাবীতে বিােভ মিছিল ও বিশাল প্রতিবাদ সভা,মানব বন্ধন অনুষ্টিত হয়েছে। উক্ত প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, নিরীহ গরীব কিশোরী মেয়ে অঞ্জনা রানী সরকারকে হত্যা করে সজল দেব ও তার পরিবার আত্মহত্যা বলে প্রচার করে বাঁচার অপচেষ্টা করছে। তারা বলেন, পুলিশ প্রশাসন ঘাতককে গ্রেফতার এবং তার বিরুদ্ধে মামলা না নিয়ে তাকে থানা থেকে বের হয়ে যেতে দিয়েছেন বলে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন। বিােভকারীরা ঐ ঘাতককে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার না করলে আরো কঠোর আন্নেদালনের হুমকী দেন। অসহায়, হত দরীদ্র অঞ্জনা সরকারের বিচার চেয়ে নবীগঞ্জ সচেতন নাগরীক সমাজের উদ্দ্যেগে নবীগঞ্জ শহরে বিশাল প্রতিবাদ সভার খবর পেয়ে সিলেট- হবিগঞ্জ মহিলা সংরতি আসনের এমপি আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জয়দেব ভদ্রসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়েছিলেন। এতে তাদের প থেকে বলা হয়েছিল অচিরেই অঞ্জনা সরকারের হত্যাকান্ডের সুষ্ট তদন্ত করে ঘটনার সাথে জড়িতদেও বিচারের আওতায় আনা হবে।
কিন্তু চাঞ্চল্যকর এ হত্যার আজ প্রায় ২ মাস অতিবাহিত হলেও এখ নপর্যন্ত আসামিদের গ্রেফতার দূরের কথা তার পরিবাররে লোকদের সন্ধানই পাচ্ছেনা পুলিশ। অঞ্জনার পিতা মাতা আত্মীয় স্বজন সহ নবীগঞ্জবাসী জানতে চপন এ হত্যাকান্ডের বিচার পাবে কবে ?