মাধবপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, নিহত-২ : আটক-৭
মাধবপুরে বেজুরা গ্রাম এখন পুরুষ শূূন্য
আবুল হোসেন সবুজ, মাধবপুর (হবিগঞ্জ) থেকে: হবিগঞ্জের মাধবপুরে গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপে দুই দিন ব্যাপী সংঘর্ষে মহিলা সহ দুই পরে ২ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় বেজুরা গ্রাম এখন পুরুষ শুন্য। শুক্রবার সকালে সরজমিনে বেজুরা উত্তর গ্রামে কুনো পুরুষ লোকের দেখা পাওয়া যায়নি।তারা রাতের অন্ধকারে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র পালিয়েছে। অপরাধী গ্রেফতার সহ শান্তি বজায় রাখতে গ্রামে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নিহত ২জনের লাশ ময়না তদন্ত শেষে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়নি তবে নিহতদের আতœীয় স্বজন নিজনিজ পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফনের প্রস্ততি সম্পন্নকরেছে। ২খুনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ দু-পক্ষের শির্ষ নেতা সহ ৭জনকে গেফতার করে শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাটিয়েছে। জানা যায়, উপজেলার বেজুড়া গ্রামের উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোঃ আরজু মেম্বারের ভাতিজা তাজু মিয়া ও উপজেলা যুবদলের সভাপতি একই গ্রামের এনায়েত উল্লাহের ছেলে মইনুল মিয়ার মধ্যে গত বুধবার বিকেলে গ্রামে ক্রিকেট খেলার সময় তর্কবিতর্কের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে বোধবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে আরজু মেম্বার ও এনায়েত উল্লাহর পরে শত শত লোক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ২ ঘন্টা ব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় উভয় পরে প্রায় ১০ জন আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এর জের ধরে গত বৃহষ্পতিবার ১১টার দিকে উভয় পরে কয়েকশত লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বেজুড়া গ্রামে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় ২ ঘন্টা ব্যপি চলা সংঘর্ষে প্রতিপরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বেজুড়া গ্রামের খুর্শেদ আলীর মেয়ে রিনা বেগম (১৫) ও ইউনুস মিয়ার ছেলে জালাল মিয়া (৫০) ঘটনাস্থলে নিহত হয়। সংঘর্ষের খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহিদুল হক,সহকারি পুলিশ সুপার সাজ্জাত ইবনে রায়হান, মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ভারপ্রাপ্ত আজমিরুজ্জামান থানা পুলিশ ও ব্যাটালিয়ানের বিপুল সংখ্যক পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় ৬০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। সংঘর্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহিদুল হক,এএসপি সাজ্জদ ইবনে রায়হান, ওসি তদন্ত আজমিরুজ্জামান সহ ১৬ পুলিশ ও প্রায় শতাধিক লোক আহত হয়েছে বলে হাসপাতাল ও ৃস্থানীয় লোকদের মাধ্যমে জানা যায়।আহতদের মধ্যে ফুল মিয়া,আলী আকবর সহ কয়েকজনের অবস্থা আশংকা জনক বলে পারিবারিক সুত্রে জানাজায়।সংঘর্ষের সময় রেন ুমিয়ার ২টি জমসিদ মিয়ার ৪টি মামুন মিয়ার ২টি সাহজাহান মিয়ার ২টি কবির মিয়ার ২টি ও মনু মিয়ার ১টি ঘর সহ কয়েকটি ঘর ভাংচুর হয়েছে বলে জানা যায়। মাধবপুর ানার উপ-পরিদর্শক হুমায়ুন কবীর জানান, প্রায় ৬০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে পুলিশ। এ ব্যাপারে উভয়পরে মামলার প্রস্তুতি চলছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি বেজুড়া গ্রামের আরজু মিয়া মেম্বার ও উপজেলা যুবদলের সভাপতি এনায়েত উল্লাহের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোষ্টিগত বিরোধ চলে আসছে। এনিয়ে প্রতিবছর এগ্রামে কয়েক দফা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘঠে। ২জন নিহতের ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আরজু মিয়া মেম্বার (৬০),হাজি মহিবুল্লাহ (৫৫),সায়েদ আলী (৫৫),মাসুদ খান (৩২),হাজী বাদশা মিয়া (৭০),আলফু মিয়া (৮০) ও আব্দুল কাদির (৩৫) কে গ্রেফতার করে ঝেল-হাজতে পাঠিয়েছে।এদিকে সিলেটের ডিআইজি মিজনুর রহমান ,হবিগঞ্জের জেলা প্রসাষক জয়নাল আবেদীন,পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র, সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘটনাসস্থল পরিদর্শন করেছেন বলে পুলিশ সুত্রে জানা যায়।পরিদর্শন কালে ডিআইজি মিজানুর রহমান খুনিদের গ্রেফতার করে আইনের হাতে সুপর্দ করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন।