জেএফকে বিমান বন্দরে বিএনপির কালো পতাকা প্রদর্শন : আওয়ামী লীগের শুভেচ্ছা
নিউইয়র্ক থেকে এনা: জাতিসংঘের ৬৯তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২২ সেপ্টেম্বর ( নিউইয়র্ক সময়) সকাল সোয়া ১০টার সময় জেএফকে বিমান বন্দরে অবতরণ করেন। বিমান বন্দরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভ্যর্ত্থনা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবু হাসান মাহমুদ আলী, ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন, জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং রাষ্ট্রদূত ড. এ কে মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর সেক্রেটারি আব্দুস সোবহান এবং স্থায়ী মিশন এবং ওয়াশিংটন দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ম্যানহাটানের গ্যান্ড হায়াত হোটেলে প্রবেশ করেন সেই তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী প্রতিনিধির স্ত্রীর সেলিনা মোমেন এবং ওয়াশিংটন বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতের স্ত্রী মিসেস জিয়া উদ্দিন। এ
সময় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, মশিউর রহমান, মন্ত্রী পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, কামরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন মঞ্জুসহ এমপি, সচিব, সাংবাদিক এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দুই ঘন্টা দেরিতে জেএফবে এয়ারপোর্টে অবতরণ করেন। তার অবতরণের সিডিউল ছিলো সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে কিন্তু তার বিমান দুই ঘন্টা দেরিতে অবতরণ করেন। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে মোমেন এনাকে জানান, এমিরার্টস এয়ারলাইন্সের ২০৩ এর যে ফøাইটে প্রধানমন্ত্রী আসছিলেন সেই ফ্লাইটে একজন বাংলাদেশী অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় তাকে দুবাইতে অপলোড করা হয়। যে কারণে ফ্লাইট দেরি হয়। ২২ সেপেম্বর জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর কোন অধিবেশনে যোগ দেবেন না। যদিও অধিবাসীদের নিয়ে জাতিসংঘে প্রথম অধিবেশন চলছে। জনসংখ্যা বিষয়ক অধিবেশনে মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমসহ অন্যান্যরা যোগ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর ২৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় জলবায়ু সংক্রান্ত অধিবেশনের যোগদানের মাধ্যমে জাতিসংঘে তার কর্মকান্ড শুরু করবেন। এ ছাড়া বিকেলের তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং মিশেল ওবামার ডিনার পার্টিতে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন এনাকে বলেন, আমরা যে তালিকা পেয়েছি। সেই তালিকায় রয়েছে ১১৮ জন। আরো এসেছেন ৭৫ জন ব্যবসায়ী। অন্য একটি সূত্র জানা গেছে, অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে এবার প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীর সংখ্যা হচ্ছে ২২২ জন।
এ দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন জেএফকে এয়ারপোর্টে অবতরণ করেন সেই যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির পক্ষ থেকে তাকে কালো পতাকা প্রদর্শন করা হয়। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ তাকে লাল গোলাপ শুভেচ্ছা জানান। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ স¤্রাট, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ, সাবেক সহ সভাপতি শরাফত হোসেন বাবু, যুব দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এম এ বাতিন, সাবেক কোষাধ্যক্ষ জসীম ভুইয়া, আজাদ বাকির, মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম, গিয়াস উদ্দিন, জাসাসের সভাপতি গোলাশ ফারুক শাহীন, জাতীয়বাদী ফোরামের সভাপতি রাফেল তালুকদার, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির সভাপতি মাওলানা অলিউল্যাহ আতিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাঈদুর রহমান যুব দলের সভাপতি জাকির চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ আহমেদ, ছাত্র দলের সভাপতি আতাউর রহমান আতা, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম জনি, বিলাল চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম ডালিম প্রমুখ।
অন্য যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গোলাপ শুভেচ্ছা জানানো হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, সহ সভাপতি আকতার হোসেন, সহ সভাপতি লুৎফর করিম, সৈয়দ বসারত আলী, আবুল কাশেম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিজাম চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, কোষাধ্যক্ষ মনসুর খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম, সাংগঠননিক সম্পাদক আব্দুর রহিম বাদশা, মহিউদ্দিন দেওয়ান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরী, স্টেট আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজমল, শ্রমিক লীগেন সভাপতি কাজী আজিজুল হক খোকান, সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রুনেল চৌধুরী, মাওলানা সাইফুল আলম সিদ্দিকী, জাসদের সভাপতি আব্দুল মুসাব্বির, সাধারণ সম্পাদক নুলে আলম জিকো প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে জলবায়ূ পরিবর্তন বিষয়ক সেমিনারে অংশ নিবেন, বিকালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি এসএএম খামবা ফুটেসার সঙ্গে বৈঠক, সন্ধ্যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও মিশেল ওবামার নৈশভোজে অংশ নিবেন। ২৪ সেপ্টেম্বর সকালে জাতিসংঘ মহাসচিবের রিসিপশনে যোগদান, সকালে জেনারেল এ্যাসেম্বলির জেনারেল ডিবেটের ওপেনিং সেশনে উপস্থিত থাকবেন, সকালে বেলারোশের প্রধানমন্ত্রী মিখাইল ভি মায়াসিনকোভিচের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে, দুপুরে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিবেন, বিকালে ‘এডুকেশন ফাস্ট ইনিশিয়েটিভ’ শীর্ষক হাই লেবেল বৈঠকে যোগদান করবেন। সাবেক ব্রিটিশ প্রধানন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন এতে মডারেটরের দায়িত্ব পালন করবেন। ২৫ সেপ্টেম্বর মধ্যাহ্নে আমেরিকান চেম্বার ও আমেরিকান বিজনেস কাউন্সিলের সঙ্গে বৈঠক, বিকালে কাতারের আমীর শেখ তামিম বিন হামিদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে, সন্ধ্যায় নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালার সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। সন্ধ্যায় ড. ফ্রেড আর ভলকমারের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে পিস কিপিং সামিটে কো-চেয়ার করবেন। এখানে বিভিন্ন দেশের প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে বাংলাদেশ, জাপান, রোয়ান্ডা, যুক্তরাষ্ট্র এ চারটি দেশের প্রধানমন্ত্রীর কো-চেয়ার করার কথা রয়েছে। বিকালে বাংলাদেশের জাতিসংঘে সদস্যপদ লাভের ৪০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মিশন কর্তৃক প্রকাশিত বইয়ের মোড়ক উম্মোচন করবেন। এতে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনসহ ব্রিটেন, রাশিয়া ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা উপস্থিত থাকবেন। বিকাল ৫ টায় জাতিসংঘ বাংলাদেশ মিশনে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস ব্রিফিং। ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ, মধ্যাহ্নে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যায় ম্যানহাটনের সেন্ট্রাল পার্কে গ্লোবাল পোভার্টি প্রোজেক্ট আয়োজিত ‘গ্লোবাল সিটিজেন কনফারেন্সে দক্ষিন এশিয়ার হেলথ, সেনিটেশন এবং উইম্যান ইমপাওয়ারমেন্ট’র উপর বক্তব্য দিবেন। এই অনুষ্ঠানটি হচ্ছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর জন্য সম্মানের এবং গুরুত্বের। এখানে বিশ্ব নেতাদের সামনে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন তুলে ধরবেন। যদি এই বৈঠকের বিরোধীতা করে কেউ কেউ আয়োজকদের ই-মেইল দিচ্ছেন। সেন্ট্রালপার্কের এই অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী রাতে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সার্বজনীন নাগরিক সম্বর্ধনার যোগ দেবেন।