ভাংচুর-সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে সিলেটে হরতাল পালন
মদিনা মার্কেটে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, টিভি গেইটে পিকেটারদের ধাওয়ায় অটোরিকশা খাদে
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ সিলেটে নেতাকর্মীদের ঝটিকা মিছিল, গাড়ি ভাংচুর ও পুলিশ এবং তাদের সাজোয়া যানে হামলার মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে জামায়াতের হরতাল। গতকাল হরতাল চলাকালে দোকানপাট বন্ধ থাকলেও নগরী ও এর বাইরে বিচ্ছিন্নভাবে যানবাহন চলাচল করেছে। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের উপর টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। পিকেটারদের ধাওয়ায় একটি অটোরিকসা খাদে পড়ে ৩ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শহরতলীর টুকের বাজারে সংঘর্ষের পর পুলিশ ৪ জনকে আটক করে। এ ছাড়া গতকাল সন্ধ্যায় মদিনা মার্কেট এলাকায় হরতাল চলাকালে পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি নগরীতে বিজিবি সদস্যরাও টহল দেয়। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রহমত উল্লাহ জানান, হরতালে নাশকতা এড়াতে নগরীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে বড় ধরণের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরতলীর টুকেরবাজারের বালাউড়া এলাকায় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা ঝটিকা মিছিল বের করে। খবর পেয়ে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা তাদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়লে উভয় পক্ষে সংঘর্ষ বাঁধে। জালালাবাদ থানার ওসি আক্তার হোসেন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা একশ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ৫ টি টিয়ারসেল ছুড়েন। পরে বালাউড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে বাচ্চু মিয়া, কবির, শুয়াইব ও পারভেজ নামে চারজনকে আটক করা হয়।
বিকেল ৩ টার দিকে নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকায় পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান ভাংচুর করে জামায়াত-শিবির। দুপুর আড়াইটার দিকে ওই এলাকায় মহানগর ছাত্রলীগের হরতাল বিরোধী মিছিলের পরপর দুই মোটর সাইকেলযোগে হরতার সমর্থক ৬ ক্যাডার এসে পুলিশের পিকআপ ভাংচুর করে দ্রুত পালিয়ে যায়। জালালাবাদ থানার ওসি আক্তার হোসেন জানান ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা ওই সময় হামলাকারীদের ধাওয়া করে।
এদিকে দুপুর আড়াইটার দিকে নগরীর বালুরচর টিভি গেইট এলাকায় পিকেটাররা ধাওয়া করলে একটি সিএনজি অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশ্ববর্তী খাদে পড়ে ৩ যাত্রী আহত হয়। আহতরা হলেন, নগরীর আখালিয়া সুরমা আবাসিক এলাকার মতিউর রহমানের ছেলে ফাহিম, একই এলাকার সুলতান আহমদের ছেলে কাউসার ও সুবিদ বাজার এলাকার গুলজার মিয়ার ছেলে রোম্মান। তারা জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেনীর ছাত্র। পরবর্তিতে তাদের উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এছাড়া সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে জামায়াত-শিবিরের ১০-১৫ জন নেতাকর্মী ঝটিকা মিছিল করে এবং গাড়ি ভাংচুর করে। সকাল ৭ টার দিকে নগরীর আম্বরখানা এলাকায় ২টি লরি ও একটি ট্রাক গাড়ি ভাংচুর করে হরতাল সমর্থকরা। সকাল সাড়ে ৭টায় দক্ষিন সুরমা লাউয়াই এলাকায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে তারা। সকাল ৮টার দিকে নগরীর খাসদবির এলাকায় হরতালের সমর্থনে একটি মিছিল থেকে একটি মাইক্রোবাস ভাংচুর করা হয়। এছাড়া সকাল সাড়ে ৮টায় নগরীর সোবহানীঘাট ও সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর মেডিকেল রোড এলাকায় ঝটিকা মিছিল করে হরতাল সমর্থকরা।
এদিকে হরতালের মধ্যে নগরীর কমদতলীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কোন দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। অবশ্য ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। নগরীতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করলেও বড় বড় বিপনী বিতানগুলো বন্ধ ছিল।