২০ বছর ধরে শিকলবন্দি পিতা-পুত্র !
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ পিতা-পুত্র মানসিক রোগী। তাই তাদের পায়ে শিকল বেঁধে রাখা হয়েছে ২০ বছর ধরে। এ বিষয়ে তার স্বজনরা সরকারি সহায়তা চেয়েছেন। কিন্তু কোন সাড়া মেলে নি। অর্থের অভাবে কোন চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে তারা শিকলবন্দিই থাকছেন। এ ঘটনা ভারতের মধ্যপ্রদেশের নরসিংহপুরের একটি গ্রামের। ওই গ্রামের একটি ছোট্ট বাড়ি। তার পেছনদিকে একটি গরু বাঁধা। একই রকমভাবে শিকলে বাঁধা ৬৫ বছর বয়সী চূড়ামন কৌরব ও তার এক ছেলে। এক দশকেরও বেশি আগে পরীক্ষা করে তাদের মানসিক সমস্যা ধরা পড়ে। তাদের দেখভালের দায়িত্ব পড়ে আরেক ছেলে দিনেশ কৌরবের ওপর। কিন্তু দিনেশ হতদরিদ্র। মাসে তার আয় ৩০০০ রুপি। পরিবারে সদস্য ৭ জনের। এত বড় সংসার চালিয়ে পিতা ও ভাইয়ের চিকিৎসা খরচ চালানো তার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। কারণ, যা উপার্জন করেন তার এক-তৃতীয়াংশই চিকিৎসা খাতে খরচ করতে হয়। আর্থিক ও মানসিক এক যন্ত্রণা তাকে দংশন করছে। তা সত্ত্বেও কিছু করার নেই। পিতা-পুত্রকে একসঙ্গে বেঁধে রাখা ছাড়া তার সামনে আর কোন পথ খোলা ছিল না। তাদের তিনি মাঝেমাঝে ঘর থেকে বের করে বাড়ির বাইরে নিয়ে যান। আবার নিয়ে যান বাড়ির ভেতরে। দিনেশ বলেন, যদি বাবা ও ভাইয়ের পায়ের শিকল খুলে দিই তাহলে তারা নিজেদের ওপর আঘাত করতে পারে অথবা অন্যদের ওপরও আঘাত করতে পারে। তাদের ছবি নিয়ে আমি কালেক্টরের কাছে গিয়েছিলাম কিছু সাহায্যের আশায়। কিন্তু আমার জন্য কিছুই করে নি প্রশাসন। দিনেশ বলেন, এর আগে আমি বাবা ও ভাইকে জাবালপুর ও গোয়ালিয়রে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে ক্ষেত্রে আমার জমানো অর্থ শেষ হয়ে যায়। নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে আমাকে কাজ থেকে সরে আসতে হয়। স্থানীয় ট্যাক্স কালেকটর রাজেশ শাহ বলেন, ওই পরিবারটি তার কাছে গিয়েছিল সাহায্যের জন্য। আমরা তাদের চিকিৎসার জন্য সহায়তা করতে না পারায় তাদের বিপিএল তালিকাভুক্ত করেছি। দিনেশ তার পিতা ও ভাইকে চিকিৎসা করাতে পারে এমন হাসপাতাল তাদের বাড়ি থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে।