জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে গণবিরোধী সম্প্রচার নীতিমালা অবিলম্বে বাতিল করুন
২০ দলীয় জোট সিলেট মহানগরের বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা
২০ দলীয় জোট সিলেট মহানগর নেতৃবৃন্দ বলেছেন, গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার জন্য অবৈধ সরকার কর্তৃক প্রণীত গণবিরোধী জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার বিরুদ্ধে গোটা জাতি অবস্থান নিয়েছে। এই নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে দেশে দুর্নীতি ও লুটপাট মহামারী আকার ধারণ করবে। সরকার ও আমলাগণ দুর্নীতি করতে আরো বেশী উৎসাহিত হবে। প্রশাসনের সকল ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা না থাকলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়বে। এই কালো আইন দেশের সাংবাদিক, সুশীল ও বুদ্ধিজীবি সমাজ সহ দেশপ্রেমিক জনতা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। সরকারকে জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে গণবিরোধী নতুন নীতিমালা বাতিল করতে হবে। দেশে গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠায় জনগণকে সম্পৃক্ত করতে অবিলম্বে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সসরকার পুনর্বহাল করে জাতীয় সকল দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কোর্ট পয়েন্টে জোট-এর কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে গণবিরোধী সম্প্রচার নীতিমালা বাতিলের দাবীতে সিলেট মহানগর ২০ দলীয় জোট আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত কথা বলেন। মহানগর জোট-এর যুগ্ম আহবায়ক ও নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকীর সভাপতিত্বে ও নগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত চৌধুরী সাদেকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, মহানগর জামায়াতের আমীর এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি তারেক আহমদ চৌধুরী, মহানগর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী মাওলানা সোহেল আহমদ, লেবার পার্টির মহানগর সভাপতি মাহবুবুর রহমান খালেদ, জাতীয় পার্টি (বিজেপি-আন্দালিব পার্থ) সিলেট জেলা আহবায়ক মোজাম্মেল হোসেন লিটন, সিলেট জেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আতাউর রহমান কোম্পানীগঞ্জী, খেলাফত মজলিসের মহানগর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান ও জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মখলিছুর রহমান, মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী মো: শাহজাহান আলী প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী বলেন, সরকার নিজেদের পাহাড়সম ব্যর্থতা ও দুর্নীতি ঢাকতে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে চায়। তারা ৭৫ সালে বাকশাল করে একইভাবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করেছিল কিন্তু এর পরিণীতি ভালো হয়নি। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে গণবিরোধী সম্প্রচার নীতিমালা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। ২০ দলীয় জোট গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অক্ষুণœ রাখতে প্রয়োজনে আরো কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবে। ৭৫ সালে শেখ মুজিবকে হত্যার পর আওয়ামীলীগ নেতাদের ভূমিকা অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ভুলে গেলেও জাতি ভুলে নাই।
পংকী আরো বলেন, সরকার সিলেটে সরকার বিরোধী আন্দোলন দমিয়ে রাখতে সিলেটের বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৩ বছরের পুরনো একটি ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় চার্জশীট প্রদান করেছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এডভোকেট সামসুজ্জামান জামান, মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য আজমল বখত চৌধুরী সাদেক, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এডভোকেট এটিএম ফয়েজ ও সাধারণ সম্পাদক তাজরুল ইসলাম তাজুল, জেলা ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল মুর্শেদ, দক্ষিণ সুরমা ছাত্রদলের সভাপতি কুহিনুর আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক মকসুদ হোসেন সহ ৩৮ জন নিরীহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দেয়া চার্জশীট প্রত্যাহারের দাবী জানান তিনি। অবিলম্বে সিলেটের কোটি জনতার হৃদয়ের স্পন্দন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা সাবেক সভাপতি এম ইলিয়াস আলী সহ গুম হওয়া সকল নেতাকর্মীদেরকে তাদের পরিবারের কাছে অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে দেয়ার দাবী জানান তিনি।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আওয়ামী সরকার কর্তৃক প্রণীত নতুন সম্প্রচার নীতিমালা দেশের গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করে বাকশালী শাসন প্রতিষ্ঠার পূর্বাভাস। কিন্তু জনগণ এই নীতিমালার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। দেশকে দুর্নীতি রাজ্যে পরিণত করতেই এই নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কোন শাসক ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। আওয়ামীলীগও টিকে থাকতে পারবে না। জনমতের প্রতি ন্যুনতম শ্রদ্ধা থাকলে সরকারকে এই নীতিমালা বাতিল করতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। ২০ দলীয় জোটের ন্যায়সঙ্গত সকল দাবী সরকারকে মেনে নিতে হবে। সিলেটে জোট-এর সকল শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী সফলের জন্য আইন শৃংখলা বাহিনীকে অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহবান জানান তিনি। অন্যথায় যে কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে এর দায়ভার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে।
সিলেট মহানগর আমীর এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার একটি অবৈধ সরকার। তারা জনগণের ভোটে নয়, গায়ের জোরে ক্ষমতায় এসেছে। তাই সরকারের ভিতরে ভীতি কাজ করছে বিধায় তারা গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতেই একটি কালো আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত কোন সরকারের কাজ গণমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করা নয়। কিন্তু আওয়ামীলীগ মানুষের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে অবৈধ পথে তাদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে সুদুরপ্রসারী ষড়যন্ত্র করছে। গণবিরোধী সম্প্রচার নীতিমালা-এর বহিঃপ্রকাশ। জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখিত এই নীতিমালা অবিলম্বে বাতিল করতে সরকারকে বাধ্য করা হবে।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন-বিএনপি নেতা কামাল মিয়া, ডা: আশরাফ আলী, আফজাল হোসেন, সৈয়দ বাবুল, আফজল হোসেন, আব্দুর রহীম, হাবিবুর রহমান চৌধুরী শিলু, জামায়াত নেতা এডভোকেট জিয়াউদ্দিন নাদের, নুরুল ইসলাম বাবুল, আব্দুল্লাহ আল মুনিম, মু. আজিজুল ইসলাম, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ, মহানগর ছাত্রশিবির সেক্রেটারী মাসুক আহমদ, চৌধুরী আব্দুল বাছিত নাহির, বিএনপি নেতা আব্দুল আহাদ হেলাল, জিয়াউর রহমান দিপন, তফাজ্জুল আলী, খসরুজ্জামান, শেখ ইলিয়াছ আলী, আব্দুস শুকুর, মুফতি নেহাল উদ্দিন, সোহেল বেপারী, হুমায়ুন আহমদ, সিরাজ খান, তোফাজ্জুল হোসেন, কয়েছ আহমদ সাগর, পিয়ার উদ্দিন পিয়ার, সুরুজ আহমদ, পারভেজ আহমদ, আব্দুর রাজ্জাক গাজী, ছাত্রদল নেতা আহমদ চৌধুরী ফয়েজ, রাশেদুল হাসান খালেদ, অর্জুন ঘোষ, সোহেল আরেফিন, আক্তার হোসেন, মারুফ আহমদ, স্টালিং তারিয়ান, এনামূল হক চৌধুরী শামীম, অলি চৌধুরী, আক্তার হোসেন ভীরু, মীর্জা সম্রাট হোসেন, পারভেজ খান জুয়েল, শামীম রেজা, কফিল হোসেন, শাহাদত আহমদ, মুজিবুর রহমান, ময়নুল ইসলাম পিটু, আবুল হোসেন, মোজাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।