যৌনপল্লী উচ্ছেদকারীদের শিরোচ্ছেদের ‘ফতোয়া’ সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর
ঝাড়ুদার নিয়োগে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর সুপারিশ!
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ‘হু ইজ বিএনপি’, প্রকাশ্য মঞ্চে ‘সিগারেটে সুখটান’, ‘মুখ ঢাকলে চলবে না, খুলতে হবে’ এসব মন্তব্য ও কর্মকাণ্ডের কারণে দেশজুড়ে আলোচিত সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী এবার যৌনপল্লী উচ্ছেদকারীদের শিরোচ্ছেদের ফতোয়া দিলেন। তিনি বললেন, ‘টাঙ্গাইলের প্রাচীন যৌনপল্লী যেসব মাওলানা উচ্ছেদ করেছেন তাদের সৌদি আরবের আইনে শিরোচ্ছেদ করা প্রয়োজন।’
মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ভিক্ষুক পুনর্বাসন বিষয়ে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি টাঙ্গাইল শহরে প্রায় দুইশ বছরের পুরোনো একটি যৌনপল্লী উচ্ছেদ করেন স্থানীয় জনতা ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা। নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনা নিয়ে মিডিয়া অনেক বাড়াবাড়ি করেছে। এজন্য মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার নতুন আইন করছে।
উল্লেখ, প্রথমবার মন্ত্রী হওয়া মৌলভীবাজার থেকে নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য শপথ গ্রহণের পর থেকে বিভিন্ন মন্তব্য ও কর্মকাণ্ডের কারণে গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময় আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন।
মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী জানান, সরকার ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও ভিক্ষুকমুক্ত দেশ গঠনে কাজ করছে। ঈদের পর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে রাজধানীকে ভিক্ষুকমুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে সোমবার ইসি সচিবকে নিজের ‘পরিচিত’ ব্যক্তিকে ঝাড়ুদার পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ডিও লেটার দিয়েছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী। আধা-সরকারি পত্রটিতে মন্ত্রী লিখেছেন, প্রিয় সচিব- আমার আন্তরিক সালাম ও শুভেচ্ছা নেবেন। আশাকরি ভালো আছেন। আপনার সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, নিম্নলিখিত তালিকার প্রার্থী আমার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা এবং পরিচিত ব্যক্তি। উক্ত ব্যক্তিকে নিয়োগ প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে একান্তভাবে অনুরোধ করা হলো।
পত্রটির নীচের অংশে একটি ছকে মন্ত্রীর সুপারিশ করা ব্যক্তির নাম সুরুজ বাসপর, পিতা গোপিয়া বাসপর লেখা হয়েছে। তিনি ঝাড়ুদার পদপ্রার্থী। যার মৌখিক পরীক্ষার রোল নম্বর ৪১। তিনি সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বাসিন্দা। মন্ত্রীর পাঠানো পত্রের নম্বর, ডি/ও-সকম মন্ত্রী/১১/২০১৪-৪৪৮। ইসি সচিবালয় ও এর অধীন মাঠ পর্যায়ের উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের জন্য ঝাড়ুদার নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা গত ২৬ জুন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংসদ সদস্যরা শত-শত অনুরোধ আর সুপারিশ করেন প্রতিনিয়ত। মন্ত্রীরাও তা থেকে দূরে নয়। হরহামেশাই এমপি-মন্ত্রীরা বিভিন্ন নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে নানা ধরনের তদবিরে দিয়ে থাকেন ডিও লেটার (আধা সরকারি পত্র)। তাই বলে ঝাড়ুদার নিয়োগেও মন্ত্রীর ডিও লেটার! কিন্তু তাই ঘটেছে নির্বাচন কমিশনে (ইসি)।