নাইকোর মামলায় বাংলাদেশের জয় (ভিডিও)
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ নাইকোর দায়ের করা মামলায় ওয়াশিংটন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত ইকসিড (ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিসপিউট) বাংলাদেশের পক্ষে রায় দিয়েছে বলে জানিয়েছেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর। সোমবার এই রায়ের কপি হাতে পেয়েছেন বলে তিনি জানান।
এই রায়ের মাধ্যমে ২০০৫-০৬ সালে সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনকারী ও বর্তমানে কারারুদ্ধ আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের কৌশলের জয় হয়েছে। তার কৌশলের অংশ হিসেবেই তখন টেংরাটিলা গ্যাস ফিল্ডে ক্ষতিপুরণ আদায় করতে নাইকোরই আরেক গ্যাসফিল্ড ফেনীর গ্যাস ক্ষেত্র থেকে উত্পাদিত গ্যাসের তাদের অংশ কেনার বিল পরিশোধ বন্ধ করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি দেশের ও আন্তর্জাতিক আদালতে গড়ায়। তবে নাইকোকে ক্ষতিপূরণ না দেয়া পর্যন্ত তাদের পাওনা বিল পরিশোধের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে।
গতকাল পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জানান, গত রোববার এই রায় হয়েছে। আর সোমবার তারা হাতে পেয়েছেন। নাইকো দু’টি মামলা করেছিলো। একটির চূড়ান্ত রায় দিয়েছে অপরটির বিষয়ে ডিসেম্বরে অধিকতর শুনানি হবে। এই রায়ের ফলে নাইকোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ে আর কোনো বাধা থাকলো না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর জানান, ছাতক গ্যাস ফিল্ডের টেংরাটিলায় দুর্ঘটনার কারণে কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর পাওনা পরিশোধ স্থগিত ও তাদের কাছে ক্ষতিপূরণ আদায়ে মামলা দায়ের করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পদক্ষেপ চ্যালেঞ্জ করে ইকসিডে যায় নাইকো।
২০১০ সালের জুলাইয়ে ইকসিডে মোট দুটি মামলা করা হয়। একটি গ্যাসের বকেয়া বিল আদায় সংক্রান্ত (আরবি/১০/১৮)মামলা আর অন্যটি টেংরাটিলা বিস্ফোরণে ক্ষতিপূরণের মামলা (আরবি/১০/১১)।
নাইকোর প্রধান দাবি ছিল, বাংলাদেশ সরকারের কাছে ২৭ দশমিক ৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাবে গ্যাস বিল বাবদ। কিন্তু সেই বিল বাংলাদেশ সরকার পরিশোধ করছে না। বিল পরিশোধের নির্দেশনা চাওয়া হয়। অথবা সমপরিমাণ অর্থ ব্যাংক গ্যারান্টি দিতে হবে বাংলাদেশকে।
অন্য দাবি হচ্ছে, বাংলাদেশে অবস্থিত তাদের স্থাবর-অস্থাবর বিক্রির অনুমতি। প্রথম মামলার বিষয়ে ডিসেম্বরে অধিকতর শুনানি হবে।
আর দ্বিতীয়টি পুরোপুরি খারিজ করে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের অনুমতি ছাড়া নাইকো তাদের স্থাবর-অস্থাবর কোনো মালামাল হস্তান্তর করতে পারবে না বলে জানান তিনি।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আরও জানান, নাইকোর মালামাল ক্রোক করার জন্য বাংলাদেশের আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সেই মামলা পরিচালনাতেও কোনো বাধা থাকলো না।
টেংরাটিলায় অনুসন্ধান কূপ খননের সময় নাইকোর অবহেলার কারণে ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি ও ২৪ জুন দুই দফা বিস্ফোরণর ঘটনা ঘটে।
বিস্ফোরণের ঘটনায় বিপুল পরিমাণ গ্যাসের ক্ষয়ক্ষতি হয়। একই সঙ্গে ওই এলাকার গাছপালা পুড়ে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এঘটনায় নাইকোর কাছে ৭৪৬ কোটি ৫০ লাখ ৮৩ হাজার ৯৭৩ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে পেট্রোবাংলা।