মেঘনায় লঞ্চডুবি: ২৭ লাশ উদ্ধার
মেঘনার পাড়ে স্বজনদের আহাজারি
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় মেঘনা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চডুবিতে ২৬টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার সকাল আটটা পর্যন্ত এসব লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া উদ্ধার হওয়া এক শিশু হাসপাতালে মারা গেছে। এখনো দুই শতাধিক যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধারকাজ চলছে। তবে উদ্ধারে ধীর গতির অভিযোগ এনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিখোঁজ যাত্রীদের স্বজনেরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার তিন শতাধিক যাত্রী নিয়ে এমভি মিরাজ-৪ নামের যাত্রীবাহী লঞ্চটি ডুবে যায়। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ৫০ জনের মতো যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান মো. শাসছুদ্দোহা খন্দকার জানান, ৫০ জনের মতো যাত্রী নানাভাবে রক্ষা পেয়েছেন। অন্যরা নিখোঁজ।
লঞ্চটি বেলা দুইটার দিকে ঢাকার সদরঘাট থেকে শরীয়তপুরের সুরেশ্বরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। পথে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে গজারিয়ার ইমামপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর কালিপুরা এলাকায় পৌঁছালে লঞ্চটি ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়।
দুর্ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন উদ্ধারকাজ শুরু করেন। পরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উদ্ধার তত্পরতা জোরদার হয়। বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে ডুবুরি দল ৫০ মিটার পানির নিচে লঞ্চটি শনাক্ত করে।
মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, আজ সকাল আটটা পর্যন্ত ২৩টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮টি লাশের পরিচয় পাওয়া গেছে। স্বজনদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে লাশগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে জেলা প্রশাসন থেকে ২০ হাজার ও সরকার থেকে আরও ৫০ হাজারসহ মোট ৭০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
দুটি লাশের পরিচয় পাওয়া যায়নি। লাশ দুটি নদীর তীরে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া প্রশাসনকে না জানিয়ে নদী থেকে উদ্ধার করে দুটি লাশ নিয়ে গেছেন স্বজনেরা।
গতকাল একটি শিশুকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। গতকালই সেখানে শিশুটির মৃত্যু হয়। প্রশাসনকে না জানিয়ে শিশুটির লাশ তার স্বজনেরা নিয়ে গেছেন।
উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় ও দুর্বার ডুবে যাওয়া লঞ্চটি উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে। আজ সকাল নয়টা পর্যন্ত লঞ্চটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
লাশ উদ্ধারেও তত্পরতা চলছে। বিআইডব্লিউটিএ, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিসের মোট ১৫ জন ডুবুরি উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় লোকজনও উদ্ধারকাজে অংশ নিচ্ছেন।