ছাতক প্রতিনিধিঃ ছাতকে রেলওয়ে নিয়ন্ত্রনাধিন দেশের একমাত্র স্লিপার উৎপাদনকারী রাষ্ট্রিয় প্রতিষ্ঠান কংক্রিট স্লীপার কারখানা আবারো বন্ধ হয়ে পড়েছে। কাঁচামাল সংকট ও সরবরাহ কম থাকার কারনে কারখানাটি সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। স্লীপার কারখানাটি বন্ধ হওয়ার কারনে কারখানার অর্ধশতাধিক শ্রমিক-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট দু’শতাধিক ব্যক্তি বেকার হয়ে পড়েছে। সরবরাহ কম থাকার কারনে কারখানায় উৎপাদিক স্লীপার ষ্টকইয়ার্ডে খোলা আকাশের নীচে পড়ে আছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি প্রাইভেটভাবে গজে উঠা একাধিক স্লীপার কারখানার কারনে রাষ্ট্রিয় এ প্রতিষ্ঠানটি স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। গত ২০ মার্চ থেকে কারখানাটি বন্ধ অবস্থায় রয়েছে।
এখানের কাঁচামালের উপর নির্ভর করে ১৯৮৮সালের ২৭অক্টোবর তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী আনোয়ার হোসেনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে ছাতক কংক্রিট স্লীপার কারখানায় উৎপাদন শুরু করে। কারখানায় কংক্রিট স্লীপার তৈরির প্রধান কাঁচামাল হাইটেনশন স্টিল রড, এমসিআই ইনসার্ট স্টিল পাত ভারত থেকে আমদানী করা হয়। এছাড়া ছাতক সিমেন্ট কারখানার স্পেশাল ডায়মন্ড ব্রান্ড সিমেন্ট, ভোলাগঞ্জ পাথর ও বালু দিয়ে উচ্চ মানসম্পন্ন কংক্রিট স্লীপার এ কারখানায় উৎপাদিত হচ্ছে। কারখানা প্রতিষ্ঠার ২৫ বছরের মধ্যে একাধিকবার কাঁচামাল সংকটের কারনে কারখানাটি বন্ধ হলেও বর্তমানে ষ্টকইয়ার্ডে ধারন মতার কারনে কারখানাটির উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে। উৎপাদিত স্লীপার যথা সময়ে সরবরাহ না হওয়ায় মারাত্মক তির সম্মুখিন হয়েছে কারখানাটি। বর্তমানে প্রধান কাঁচামাল ভোলাগঞ্জ বোল্ডার, এমসিআই ইনসার্ট পাত, মোল্ড ওয়েল ও ধারন মতা না থাকার কারনে কারখানাটি বন্ধ রাখা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এদিকে দেশের জামালপুরে ‘তমা’ ও পঞ্চগড়ে ‘ম্যাক্স’ নামের দু’টি প্রাইভেট স্লীপার কারখানা গড়ে উঠায় মারাত্মক বিরূপ প্রভাব পড়ে এখানের স্লীপার কারখানাটিতে। রেলওয়ের অবসর প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে প্রাইভেট কংক্রিট স্লীপার কারখানা গড়ে উঠায় কর্মকর্তারা ছাতক কংক্রিট স্লীপার কারখানার আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করলেও উন্নত মানের উপযুক্ত কাঁচামালের অভাবে তাদের প্রাইভেট কারখানায় উৎপাদিত হচ্ছে অপোকৃত নিুমানের স্লীপার। প্রাইভেট খাতে উৎপাদিত স্লীপার রেলওয়ের নিবন্ধিত ঠিকাদাররা বিভিন্ন প্রকল্পে সরবরাহ করছেন। অপোকৃত কমমুল্যে সংগ্রহ করা এসব স্লীপার রেললাইনে ব্যবহৃত হওয়ায় কম সময়ে নষ্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে তমা ও ম্যাক্স কংক্রিট স্লীপার কারখানায় উৎপাদিত স্লীপার টেষ্টিংয়ের জন্য ছাতক কংক্রিট স্লীপার কারখানায় পাঠানো হয়। ওই সময় কারখানার টেম্পারেচার অপারেটর ইসকন্দর আলী জানিয়েছিলেন, প্রাইভেট কারখানাতে উৎপাদিত স্লীপার অত্যন্ত নিুমানের। টেষ্টের জন্য পাঠানো স্লীপার কোম্পানীর মান সম্মত হলেও বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত স্লীপারে এ গুনগতমান অুন্ন থাকবেনা। কারখানার প্রিন্টার অপারেটর সালেহ আহমদ জানান, প্রাইভেট কারখানা গুলো গজে উঠার কারনে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটি মারাত্মক তিগ্রস্থ হচ্ছে। প্রাইভেট কারখানায় দেশীয় রড, অখ্যাত কোম্পানীর সিমেন্ট, লাল পাথর ও বালু দিয়ে উৎপাদিত স্লীপারের গুনগতমান অবশ্যই নিুমানের। এ ব্যাপারে রেলওয়ের ছাতকস্থ নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল জলিল জানান, কাঁচামালের সংকটের কারনে কারখানাটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে শীঘ্রই কারখানাটি চালু করার সম্ভাবনা রয়েছে।