নবীগঞ্জের ছাত্রী নির্যাতনকারী স্কুল শিক্ষিকার বিরুদ্ধে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও থানার ওসিকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ
স্টাফ রির্পোটারঃ নবীগঞ্জের বহুল আলোচিত সমালোচিত পানিউমদা রাগীব রাবেয়া স্কুল এন্ড কলেজের ৬ষ্ট শ্রেনীর ছাত্রী কিশোরী শাহিদা আক্তার এমি নামের ছাত্রীকে শিক্ষিকা নিলুফা ইয়াসমিন কর্তৃক কান ধরে উঠবস ও নির্যাতনের ঘটনায় অবশেষে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্যাতিত ছাত্রীর মাতা জোৎস্না বেগম। এদিকে একই ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট মানবাধীকার লংঘন কারীর বিরোদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লিখিত আবেদন করেছে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস্ ফাউন্ডেশন সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন খাঁন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই নবীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও নবীগঞ্জ থানার ওসীকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য জানাযায়, গত ২২ এপ্রিল পানিউমদা স্কুল এন্ড কলেজের ৬ষ্ট শ্রেণীতে পড়–য়া সুলতানা নামের এক ছাত্রীর বই থেকে ১০টাকা জনৈকা আরেক ছাত্রী নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় স্কুলে ছাত্র/ছাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক তুলপাড় সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে ওই ঘটনা সর্ম্পকে একই ক্লাসের ৬ষ্ট শ্রেনীর ছাত্রী ও পানিউমদা গ্রামের নকলু মিয়ার কন্যা শাহিদা আক্তার এমি (১২) নামের কিশোরী তার মা ও অভিভাবকদের কাছে সত্য ঘটনাটি বলে দেয়। যে ছাত্রী বই থেকে অপর ছাত্রীর টাকা নিয়েছিল তার বাড়িও পানিউমদা গ্রামে এমিদের পার্শ্ববতী বাড়ি। ওই সংবাদ আবারও স্কুলে চলে আসলে, এতে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনায় স্কুল শিক্ষিকা ও শিক্ষক মিজানুর রহমানের স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিন নিরপরাধ স্কুল ছাত্রী শাহিদা আক্তার এমিকে কান ধরে বিদ্যালয় প্রদক্ষিণ করে এক পর্যায়ে বেধরক প্রহার করে অমানুষিক নির্যাতন করেন। এ বিষয়ে এমির অভিভাবকরা স্কুল প্রধান শিক্ষক এনামূল হক এর নিকট বিচার প্রার্থী হলে গত বৃহস্পতিবার প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যান ইজাজুর রহমান সহ শিক্ষকদের সমন্বয়ে উক্ত শালিস বৈঠকে এমির অভিভাবকরা বিচার প্রার্থী হওয়ায় তাদেরকে উল্টো নাজেহাল করেন ইউপি চেয়ারম্যান ও জনৈক শিক্ষকরা। আরেকটি সূত্র জানায়, ইউপি চেয়ারম্যান ইজাজুর রহমানের ঘনিষ্ট আত্মীয় ও সর্ম্পকে ওই শিক্ষিকা ভাগিনী হওয়ায় তিনি স্কুল ছাত্রী ও তার অভিভাবকদের প্রতি ক্ষোভে উঠে বলেন, এমন ছাত্রীদের স্কুলে আসার প্রয়োজন নেই, যারা শিক্ষক/শিক্ষিকার উপরে বিচার প্রাথী হয়। উপরোক্ত ঘটনায় লজ্জায় ও নির্যাতনের কারণে নিরপরাধ স্কুল ছাত্রী শাহিদা আক্তার এমি গত কদিন ধরে স্কুলে ক্লাস করাতো দূরের কথা শিক্ষিকার নির্মম প্রহারে গুরুতর আহত এমির অবস্থার অবনতি ঘটলে গত ২৫ এপ্রিল নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে আশংকাজনক অবস্থায় চিকিৎসক তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। সেখানে দুই দিন চিকিৎসা শেষে শাহিদা আক্তার এমি বাড়িতে আসার পর তার অভিভাবক মাতা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মানবাধীকারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এতে স্কুল শিক্ষক মিজানুর রহমানের স্ত্রী শিক্ষিকা নিলুফা আক্তার ইয়াসমিন ও তার মামা ইউপি চেয়ারম্যান ইজাজুর রহমান উভয় গ্রাম পানিউমদা, থানা নবীগঞ্জ, জেলা হবিগঞ্জ কে বিবাদী করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় উপজেলার সর্বত্র তুলপাড় সৃষ্টির পাশাপাশি ছাত্রী নির্যাতনকারী শিক্ষিকার বিরোদ্ধে তদন্ত অনুযায়ী আইনী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলার শ্রেনী পেশার লোকজন দাবী জানিয়েছেন।