মৃত্যুর আগে তিনি দলকে আরো যোগ্য অবস্থায় দেখে যেতে চান
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ জন্মদিনে দলের নেতা-কর্মীদের নিজের দিকে ডেকে আবারো সুদিনের আশা দিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মাদ এরশাদ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে নিজের ‘৮৫তম’ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ দূত বলেন, “তোমরা আমার হাতে হাত রাখ। আবার সুদিন আসবে। জাতীয় পার্টি আবারো নির্বাচনে জয়ী হবে।”
‘ইমানুয়েলস কনভেনশন সেন্টারে’ এই অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারসহ উপদেষ্টামণ্ডলীর কয়েকজন উপস্থিত থাকলেও এরশাদের স্ত্রী ও সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদকে দেখা যায়নি।
বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়া আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মুজিবুল হক চুন্নু, সংসদে বিরোধী দলের প্রধান হুইপ তাজুল ইসলাম এবং দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদও অংশ নেননি এই উদযাপনে।
এরশাদ ২০ মার্চ কেক কেটে নিজের জন্মদিন উদযাপন করলেও জাতীয় পার্টির ওয়েবসাইটে তার জন্মতারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৩০। -এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও চেয়ারম্যানের প্রেসসচিব সুনীল শুভ রায় বলেন, “আজই স্যারের আসল জন্মদিন। আর ১ ফেব্রুয়ারি হলো সার্টিফিকেটের জন্ম তারিখ।”
নুষ্ঠানে উপস্থিত নেতাকর্মীদের বাহাবা দিয়ে এরশাদ বলেন, “আজ সমবেত নেতা-কর্মীদের দেখে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে, তারা হতাশ নয়। জাপাকে সুসংগঠিত করতে তারা প্রস্তুত। তারা দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
জাতীয় পার্টিকে নিজের ‘যোগ্য সন্তান’ অভিহিত করে অশীতিপর এই নেতা বলেন, মৃত্যুর আগে তিনি দলকে আরো যোগ্য অবস্থায় দেখে যেতে চান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার আগে জন্মদিনের কেক কাটেন সাবেক এই সেনা প্রধান। অন্যদের মধ্যে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইদুর রহমান টেপা, যুগ্ম সম্পাদক নুরুল ইসলাম নুরু, যুগ্ম দফতর সম্পাদক আবুল হাসান আহমেদ জুয়েল, মেরিনা রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার প্রথম প্রহরে নিজের বাড়ি প্রেসিডেন্ট পার্কে সহযোগী সংগঠন ‘যুব সংহতির’ নেতা কর্মীদের নিয়েও এক দফা কেক কাটেন এরশাদ। রংপুরের সন্তান এরশাদ ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অফ আর্মি স্টাফ থাকা অবস্থায় তিনি ক্ষমতা নেন এবং ১৯৮৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসাবে দেশ শাসন করেন।
পরে বিচারপতি আহসান উদ্দিন চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অপসারণ করে নিজেই রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন এরশাদ। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর গণঅভ্যুত্থানের মুখে তার সরকারের পতন ঘটে। ক্ষমতায় থাকতেই ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি জাতীয় পার্টি গঠন করেন এরশাদ। শুরু থেকেই তিনি দলের চেয়ারম্যান।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে বারবার নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে আলোচিত হন সাবেক এই একনায়ক। পরে রংপুর-৩ আসন থেকে তিনি নির্বাচিত হন। বিএনপিবিহীন ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয় বার সরকার গঠন করার পর জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রওশন এরশাদ হন বিরোধী দলীয় নেতা।
আর সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদকে মন্ত্রী মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়।