একই দিনে হবিগঞ্জে হাসিনা, কুমিল্লায় খালেদা

Khaleda Hasinaসুরমা টাইমস ডেস্কঃ শনিবার সকালে হবিগঞ্জ যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যাচ্ছেন কুমিল্লায়। হবিগঞ্জে কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধনের পাশাপাশি জেলা শহরের নিউফিল্ড মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখবেন তিনি।
ওদিকে নির্দলীয় সরকারের অধীনে দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে জনমত গড়তে কুমিল্লা যাচ্ছেন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। শহরের টাউন হল মাঠে ২০ দল আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখবেন তিনি। এর আগে সকাল ১০টায় গুলশানের বাসভবন থেকে গাড়িবহর নিয়ে রওনা হবেন খালেদা জিয়া। এরপর যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার, কাঁচপুর ব্রিজ হয়ে দুপুরে কুমিল্লায় পৌঁছবেন। জেলা সার্কিট হাউজে মধ্যাহ্নভোজ শেষে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেবেন তিনি। এরপর বিকালে টাউন হল মাঠের জনসভামঞ্চে উপস্থিত হবেন বিএনপি চেয়ারপারসন। প্রধান অতিথির বক্তব্য দিয়ে সড়কপথেই ঢাকায় ফিরবেন।
কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, দীর্ঘ ৮ বছর পর খালেদা জিয়ার জনসভাকে ঘিরে কুমিল্লা মহানগরীসহ সর্বত্রই এখন সাজসাজ রব। জেলা সদরসহ বিভিন্ন সড়কে নির্মাণ করা হয়েছে সহস্রাধিক তোড়ন। ডিজিটাল ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে সর্বত্র। বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে কুমিল্লা মহানগরীসহ জেলার বিভিন্ন সড়ক। নেতাকর্মীদের পদচারণায় এখন মুখরিত উপজেলা থেকে মহানগরী। কুমিল্লার জনসভাটিকে স্মরণকালের বৃহত্তম জনসভায় রূপ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দলীয় নেতারা। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জনসভা সফল করতে ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ২০ দলীয় জোট নেতৃবৃন্দ। ১৬ উপজেলার ১১টি সংসদীয় আসন থেকে ২০ দলের কর্মী-সমর্থকরা জনসভায় যোগ দেবেন। জনসভাস্থল ও নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে ২২৬টি মাইক টানানোর পাশাপাশি এবং নগরীর ৬টি স্থানে বড় পর্দায় সমাবেশের অনুষ্ঠান সরাসরি দেখানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এদিকে জনসভাকে ঘিরে এরই মধ্যে পুরো নগরী, সমাবেশস্থল এবং মহাসড়কের পাশে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার ছবিসংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন টানানো হয়েছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সভানেত্রী বেগম রাবেয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে বেলা ২টায় সমাবেশ শুরু হবে। এতে জিসাসশিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করবেন। এর আগে ২০০৮ সালে খালেদা জিয়া টাউন হল মাঠের সমাবেশে বক্তব্য রেখেছিলেন।
এদিকে হবিগঞ্জ ও নবীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, হবিগঞ্জের জনসভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তায় ১৩৫০ পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকবে। ৪ স্তরে পোশাকধারী ১২০০ পুলিশসহ সাদা পোশাকে অতিরিক্ত ১৫০ পুলিশ মোতায়েন করা হবে। শুক্রবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল শহরের নিউফিল্ডের পাশে দ্য রোজেস কিন্ডারগার্টেনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য জনসভাস্থল ও তার আশপাশে ২০টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে একটি ওয়াচ টাওয়ার। এ ছাড়া শহরের সব বাসা ও ভাড়াটিয়ার তথ্য নেয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি হোটেল-মোটেল ও রেস্ট হাউজ তল্লাশি করা হয়েছে। নতুন কোন লোক হোটেলে উঠলেই পুলিশ তার সম্পর্কে সব তথ্য নিচ্ছে।
শনিবার সকালে সকালে হেলিকপ্টারযোগে নবীগঞ্জের বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ডের পাশে অবতরণ করবেন প্রধানমন্ত্রী।
সুইচ টিপে বিবিয়ানা গ্যাস সঞ্চালন প্রকল্প, বিবিয়ানা ধনুয়া গ্যাসপাইপ সঞ্চালন লাইন প্রকল্প, বিবিয়ানা বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট-২ প্রকল্পের ৩৪১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র (সামিট বিদ্যুৎ পাওয়ার কোং লি.), ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে বিবিয়ানা পাওয়ার প্ল্যান্ট পর্যন্ত সংযোগ সড়ক ছাড়াও নবীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন উদ্বোধন করবেন। বিবিয়ানা বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট ১-এর (দক্ষিণ) ৩৮১ মেগাওয়াট কেন্দ্র এবং বিবিয়ানা বিদ্যুৎ প্রকল্প-৩ (উত্তর) ৪০০ মেগাওয়াট কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, বিজনা নদীর ব্রিজ ছাড়াও নবীগঞ্জ রসুলগঞ্জ পানি উমদা রাস্তার ৯০ দশমিক ১০০ মিটার গাইডার ব্রিজ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। বেলা পৌনে ১টা থেকে পৌনে ২টা পর্যন্ত নামাজ ও মধ্যাহ্নভোজের জন্য জেলা সার্কিট হাউজে অবস্থান করবেন প্রধানমন্ত্রী। বেলা ২টা ২০ থেকে ২টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত হবিগঞ্জ নিউফিল্ডের জনসভাস্থলে আধুনিক স্টেডিয়াম, ডায়াবেটিক হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট, নতুন জেলা পরিষদ অডিটরিয়াম ও কমিউনিট সেন্টার, জেলা শিল্পকলা একাডেমিক ভবন, সার্ভার স্টেশন, আলেয়া জাহির কলেজ, জেলা কমান্ডেন্ট, আনসার ও ভিডিপি কার্যালয় ভবনের উদ্বোধন এবং শাহজীবাজার (৩৩০ মেগাওয়াট) কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্টের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। বেলা ২টা ৩০ মিনিটে হবিগঞ্জের নিউফিল্ডে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন।