জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নেরর সংবাদিক সন্মেলন
সড়ক দূর্ঘটনা রুধে দক্ত চালক গড়ে তোলতে সাড়ে ৭ হাজার শ্রমিককে প্রশিক্ষনের উদ্যোগ নিয়েছে ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন
সড়ক দূর্ঘটনা রুধে দক্ত চালক গড়ে তোলতে আধুনিক পদ্ধতিতে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার শ্রমিককে প্রশিক্ষনের উদ্যোগ নিয়েছে সিলেট জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন। দেশের মধ্যে এই প্রথম তারা এই উদ্যোগ গ্রহণ করে। গতকাল মঙ্গলবার সিলেট জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের কার্য্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সন্মেলনে সংগঠনের সভাপতি শ্রী আবু সরকার এ কথা জানান। সংবাদ সন্মেলনে তিনি উল্লেখ করেন শ্রমিকদের ভোটে দুইবার সভাপতি নির্বাচিত হয়ে অসহায় শ্রমিকদের উন্নয়নে ও সংগঠনের সার্থে নিজস্ব ভূমি ক্রয় করা সহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে সফল হয়েছেন। যা অতীতে ছিলোনা। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের অন্তর্ভূক্ত একটি রেজিস্ট্রেশনভূক্ত ট্রেড ইউনিয়ন। (যার রেজিস্ট্রেশন নং-চট্ট-২১৫৯)। সিলেটের পরিবহণ জগতের মধ্যে ইহা একটি অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। আমাদের মাঝে নেই কোন বিরোধ। নেই কোন মতানৈক্য। নেই কোন দ্বিধা বিভক্তি। যার ফলে আমরা সকল ট্রাক শ্রমিকরা এখনো একই প্লাট ফরমে দাঁড়িয়ে দেশ ও জাতির সেবা করে যাচ্ছি। আর ঘাম ঝরিয়ে উপার্জিত সেই অর্থ দিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে দিনযাপন করে আসছি। আমাদের নেই বিশাল কোন চাওয়া-পাওয়া। সাধ্য আর পরিশ্রমিক যা পাই, তাই-ই আমাদের সম্পদ। সব মিলিয়ে আমরা রে রোদে শুকিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে মানুষের জন্য সেবক হিসেবে সভ্যতার চাকাকে সচল রাখার চেষ্টা করছি। নির্বাচিত হয়ে সংগঠন ও শ্রমিকদের উন্নয়ন এবং সুবিধার্তে প্রত্যেক উপজেলাসহ গুরুত্বপূর্ন অঞ্চলে নির্বাচনের মাধ্যমে ১১ টি উপ-কমিটি গঠন করি। পরে বয়স্ক সদস্যদের জন্য বয়স্ক ভাতা, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের জন্য পঙ্গু ভাতা, অসহায়, চিকিৎসা, বিয়ে, রমজান ও ঈদ’সহ বিভিন্ন উপলক্ষ্যে সাহায্য ভাতা চালু করেছি। ২০১১-১২ সালে বিভিন্ন সময় ভাতা বাবদ খরছ হয় ৫ লক্ষ ২৩ হাজার ৬ শ’ টাকা। ২০১৩-১৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত শ্রমিকদের বিভিন্ন ভাতা বাবদ ব্যয় হয়েছে ৫ লক্ষ ৯৬ হাজার ৪শ’ টাকা। সংগঠনের সাধারণ সভা ও সময় মতো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হওয়ার নিয়ম চালু করেছি। হাইওয়ে পুলিশসহ চাঁদাবাজদের অত্যাচার-নির্যাতন অনেকটাই বন্ধ হয়েছে।বাশঁকলের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে আমি নিজে বাদী হয়ে হাইকোর্টে একটি মামলা করেছি, যা এখনো চলমান রয়েছে। তাছাড়া নগরীকে যানজট মুক্ত রাখতে ট্রাক ও মিনি ট্রাক চলাচলের নিয়ম নির্ধারণ করে দিয়েছি। আমাদের আন্দোলনের ফলে সিলেটে কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনাল নির্মানের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়কের সংস্কার কাজ অল্প দিনের মধ্যে শুরু হবে।
তিনি বলেন ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের জন্য কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনালের পাশে নিজস্ব ভূমিতে অফিস নির্মানের জন্য সম্প্রতি ৪ শতক ভূমি ক্রয় করা হয়েছে। তাছাড়া শ্রমিকদেরকে আরো দক্ষ ও মানসম্পন্ন চালক হিসেবে তৈরি করতে বাংলাদেশের মধ্যে সিলেটে এই প্রথম প্রায় সাড়ে ৭ হাজার ট্রাক চালককে আমরা প্রশিক্ষন দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। কিন্তু এর জন্য বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে একটি কুচক্রি মহল। তারা আমাদের ইতিবাচক কর্মকান্ডে ইর্ষান্বিত হয়ে আমি ও আমার সংগঠনের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। বিভ্রান্ত করছে বিভিন্ন পেশার সন্মানীত ব্যক্তিবর্গ ও সমাজকে। সংগঠনের পক্ষ থেকে সকল প্রকার অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানিয়ে তিনি বলেন আমি বা আমার সংগঠনের কেউ অতীতে কোন প্রকার দূর্নীতির সাথে জড়িত ছিলেন না। বর্তমানেও নেই। সংবাদ সন্মেলনে অসহায় ট্রাক শ্রকিদের সুঃখ-দুঃখের সঠিক চিত্রটা সবার কাছে তোলে ধরতে তিনি সবার প্রতি অনুরোধ জানান। সাংবাদিক সন্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সিনিয়র সহ সভাপতি মোঃ দিলু মিয়া, সহ সভাপতি আব্দুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক গফুর মিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, সহ সাধারণ সম্পাদক রহমত আলী তারেক, সাংগঠনিক সম্পাদক আমীর উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক মানিক মিয়া, দফতর সম্পাদক বাবুল হোসেন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ রাজু আহমদ তুরু, সদস্য হাসমত আলী হাসু, কুনু মিয়া, আলা উদ্দিন, বিলাল আহমদ, ফয়ছল আহমদ, নুর উদ্দিন, সুহেল আহমদ, সাহাব উদ্দিন, লায়েছ আহমদ প্রমূখ। বিজ্ঞপ্তি