বিদ্যুতের লো ভোল্টেজ: চরম ভোগান্তিতে সাধারন মানুষ
বিশ্বজিৎ রায়: বিদ্যুতের লো ভোল্টেজের কারণে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ৬টি গ্রামের সাধারণ জনগণ চরম দূর্ভোগের মধ্য দিয়ে তাদের দিন কাটাচ্ছেন। নির্দিষ্ট স্থানে ট্রান্সমিটার না বসানোর কারণে এই লো ভোল্টেজ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের ৬টি গ্রামের সাধারণ মানুষ। গ্রামগুলো হলো হরিপুর, করেরগ্রাম আংশিক, বাগাজুড়া, মিনারমহল, দাসেরমহল, হাসনপুর আংশিক। এই গ্রামগুলোতে ৬ থেকে ৭ হাজার লোকের বসবাস। কুলাউড়া পৌরসভার দক্ষিণ লস্করপুর গ্রামে রাস্তার পাশে কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন বাচ্চুর বাড়ীর সম্মুখে ২৫০ কেভির একটি ট্রান্সমিটার বসানো হয়েছে। অথচ এই ট্রান্সমিটার থেকে বিদ্যুত সংযোগ হয়েছে পৌরসভার দক্ষিণ লস্করপুর, সদর ইউনিয়নের হরিপুর, করেরগ্রাম আংশিক, বাগাজুড়া, মিনারমহল, দাসেরমহল, হাসনপুর আংশিক গ্রামগুলোতে প্রায় ৭শতাধিক ছেলে-মেয়েরা উপজেলার বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেছে। বিদ্যুতের কম লো ভোল্টেজের কারণে ওইসব শিক্ষার্থীরা নিয়মিত পড়াশোনা করতে পারছেনা। তাদের পড়ালেখার অনেক ব্যাঘাত ঘটছে। বিদ্যুতের বিড়ম্বনা থাকার কারণে তারা সবসময় কেরোসিন জ্বালিয়ে রাতে পড়াশোনা করছে। সরেজমিন এলাকায় ঘুরে জানা যায়, এলাকাবাসীর প্রাণের দাবী যে, কুলাউড়া ইউনিয়নের দাসেরমহল বাজারে যদি একটি ট্রান্সমিটার বসানো যায় তাহলে ওই এলাকার ৫/৬টি গ্রামের কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ কিছুটা হলেও বিদ্যুত সুবিধা পাবে। করেরগ্রামের বাসিন্দা কুলাউড়া ইয়াকুব তাজুল মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা শাম্মি হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, বিদ্যুতের ভেলকিভাজির কারণে আমরা ঠিকমত পড়াশোনা করতে পারছিনা। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর বই নিয়ে পড়ার টেবিলে বসলে বিদ্যুতের লো ভোল্টেজ এবং ভেলকিবাজির কারণে আমরা পড়ালেখা করতে পারছিনা। আমাদের উন্নত পড়ালেখার কথা চিন্তা করে এই বিদ্যুত সমস্যা যেন অচিরেই শেষ হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা সুদৃষ্টি কামনা করছি। মিনারমহল গ্রামের বাসিন্দা কুলাউড়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী রাহিন আহমদ বলেন, প্রতিদিন রাতে পড়ার টেবিলে বই নিয়ে পড়তে বসলে শুরু হয় যত জটিলতা। বিদ্যুতের পর্যাপ্ত ভোল্টেজ না থাকার কারণে আমাদের পড়ালেখা করতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা মোঃ আব্দুল্লাহ বলেন, এই এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে এই বিদ্যুত সমস্যা চলে আসছে। বিদ্যুত লাইনগুলো খুবই দুর্বল। অনেক সময় আমরা ব্যক্তি উদ্যোগে এই লাইনগুলো সংস্কার করি। আমাদের এলাকাবাসীর এই দূর্ভোগের কথা চিন্তা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন এ ব্যাপারে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেন। এ ব্যাপারে হাসনপুর গ্রামের বাসিন্দা সমাজসেবক সুফিয়ান আহমদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই এলাকার বিদ্যুত সমস্যা অনেক দিনের। লাইনগুলো খুবই দুর্বল, যেকোন সময় বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। অনেক সময় লাইনগুলো ছিড়ে মাটিতে পড়ে যায়। তখন তাৎক্ষণিক পিডিবি কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা তাৎক্ষণিক কোন ব্যবস্থা নেননা, বরং ঘটনা ঘটার দুইদিন পর তারা ঘটনাস্থলে আসেন। এবং এসে তারা লাইনের জাম্পার কেটে দেন। আমরা এলাকাবাসী বিভিন্ন সময় লিখিতভাবে আবেদন করেছি পিডিবি কর্তৃপক্ষের কাছে কিন্তু তারা কোন সূরাহা না দিয়ে আমাদের কথাগুলোকে তারা কর্ণপাত করেছে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী যে বিদ্যুত লাইনগুলো যেন পূণঃসংস্কার করা হয় এবং দাসের মহল বাজারে একটি ট্রান্সমিটার বসানো হলে এলাকাবাসীর কষ্ট অনেকটা লাঘব হবে।