আরিফকে সিলেট কারাগারে আনা হচ্ছে!
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার ৬ষ্ঠ বারের মত চার্জ গঠনের নির্ধারিত তারিখ ছিল ১০ আগস্ট সোমবার সিলেটের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। মামলায় হাজতি আসামিদের সবাইকে আদালতে উপস্থিত করা হয়। কিন্তু আদালতে উপস্থিত হয়নি সিলেট সিটি করপোরেশনের বরখাস্তকৃত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। আদালত সূত্রে জানা গেছে, কিবরিয়া হত্যা মামলা চার্জ গঠনের তারিখ পর পর ৬বার পেছানো। সোমবার সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, মুফতি হান্নানসহ ১৩ আসামিকে আদালতে হাজির করা হলেও অসুস্থতার জন্য আদালতে হাজির হননি সিলেট সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এজন্য আগামী ১৮ আগস্ট চার্জ গঠনের পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক। ওই তারিখে সব আসামিকে উপস্থিত করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক মকবুল আহসান।
এর আগে ২১ জুন, ৬, ১৪ ও ২৩ জুলাই এবং ৩ আগস্ট আলোচিত এই হত্যা মামলার চার্জ গঠনের তারিখ পেছানো হয়েছিল। আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৮ আগস্টের পূর্বে যে কোন দিন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হতে পারে সিলেটের সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র আরফিুল হক চৌধুরীকে।কারণ তার জন্য মূলত কিবরীয়া হত্যা মামলার হত্যা মামলার চার্জ গঠনের তারিখ কয়েকবার পরিবর্তন করা হয়েছে।
পুলিশের আভ্যন্তরিন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসার পক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী কয়েকদিনের ভিতরে মেয়র আরিফকে নিয়ে আসা হবে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে। সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকেই আগামী ১৮ আগস্ট সাবেক অর্থমন্ত্রীর কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জ গঠনের জন্য সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কারান্তরীন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর অবস্থার অবনতি ও পঙ্গুত্বের শঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। জানা যায়, ঢাকা মেডিকেল জকলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর জন্য গঠন করা হয়েছে জরুরী মেডিকেল বোর্ড। তাকে রাখা হয়েছে সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষণে। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহএসএম কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জশীটভূক্ত আসামী হিসেবে আরিফুল হক বর্তমানে কারাবন্দি রয়েছেন। কারবান্দি অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মেডিকেল বোর্ড সূত্রে জানা যায়, আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে তার এমআরআই করার পর মাথা ও মেরুদন্ডের মাঝামাঝি স্থানে কয়েকটি ক্রেক ইনজুরি ধরা পড়ে। ৪, ৫ ও ৬নং কডে ক্রেক ছাড়াও আরিফের রয়েছে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ।
মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আরিফুল হক চৌধুরীর মেরুদন্ডের জোড়ার জায়গাটি ভাঙ্গা। সার্ভাইকাল কোডের উপর বড় ধরনের চাপ রয়েছে। যদি হঠাৎ চাপ পড়ে তাহলে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হতে পারে।’ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমআরআই করার পর আরিফের যে সমস্যা ধরা পড়েছে তা ঝুঁকিপূর্ণ। এমন অসুস্থতা থেকে স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ব এমনকি জীবনের ঝুঁকিও হতে পারে। এমতাবস্থায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে আরিফের চিকিৎসায় গঠন করা হয়েছে একটি মেডিকেল বোর্ড। এই বোর্ডের প্রধান হিসেবে আছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউরো সার্জারী বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা: এহসান মাহমুদ। এই বোর্ডে এই বোর্ডে আরো আছেন- প্রফেসর ডা: অদুদ চৌধুরী, প্রফেসর ডা: জিল্লুর রহমান ও প্রফেসর ডা: আজিজুল কাহার। গতবছর মেয়র আরিফ হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তার হৃদযন্ত্রে রিং পরানো হয়।
এর আগে ২০০০ সালে ঢাকায় সড়ক দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। ওই সময় তিনি ঘাড়ে প্রচন্ড আঘাতপ্রাপ্ত হন। সম্প্রতি এমআরআই রিপোর্টে পুনরায় মাথা ও মেরুদন্ডের মাঝামাঝি স্থানে কয়েকটি ক্রেক ইনজুরি ধরা পড়ে। আরিফ পত্নী শ্যামা হক চৌধুরী বলেন, মেয়র আরিফের অবস্থা গুরুতর। ঢাকা মেডিকেলের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তাঁর স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ব এমনকি জীবনের ঝুঁকিও হতে পারে। আরিফুল হক চৌধুরীর সুস্থতার জন্য তিনি সিলেট নগরবাসীসহ দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেন।