বরখাস্ত ৩ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ শিশু রাজন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়া জালালাবাদ থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত আলমগীর হোসেনসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এবার বিভাগীয় মামলা হচ্ছে। পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে সিলেট মহানগর পুলিশ। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া) রহমত উল্লাহ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এসএমপির এই মুখপাত্র বলেন, বিভাগীয় মামলার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কৈফিয়ত তলব করে তাদের কাছে নোটিশ পাঠানো হচ্ছে।
এদিকে, বিভাগীয় মামলা রুজু করার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার কামরুল আহসান বলেছেন, এই প্রক্রিয়া আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে শুরু হবে। আর এটি সম্পূর্ণ দেখভাল করবে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটি রাজন খুনের ঘটনার পর সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ওই তিন পুলিশ কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়ে তদন্ত করবে। ওই তিন কর্মকর্তা বিভাগীয় তদন্ত কমিটিতে দোষী সাব্যস্ত হলে তারা স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত হতে পারেন।
সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর শিশু রাজন হত্যাকাণ্ডে দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগে সোমবার সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয় জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেনকে। এর আগে একই অভিযোগে একই থানার আরও দুই কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক (সাব ইন্সপেক্টর) জাকির হোসেন ও আমিনুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়।
উল্লেখ্য, ৮ জুলাই বুধবার শহরতলির কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় শিশু রাজনকে পিটিয়ে খুন করা হয়। হত্যাকাণ্ডের আগে ধারণ করা নির্যাতনের ভিডিও চিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়া হয়। এতে তোলপাড় শুরু হয় বিশ্বব্যাপী। কেবল স্থানীয় কিংবা জাতীয় নয় ঘটনাটি আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রকাশ হলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন দেশ-বিদেশের লোকজন।
আলোচিত এ ঘটনায় পুলিশের গাফলতি ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ তুলেন নিহত রাজনের বাবা আজিজুর রহমান। এ নিয়ে সিলেটের স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার কামরুল আহসান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রোকনউদ্দিন আহমদকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দেন। এই কমিটি সিলেট পুলিশের কমিশনারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন, উপ পরিদর্শক (সেকেন্ড অফিসার) জাকির হোসেন ও রাজন হত্যার মামলা দায়েরকারী কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে গাফলতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এ কারণে তদন্ত জমা দেয়ার পরদিনই পুলিশ কমিশনার ওসি (তদন্ত) আমিনুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে নেন।
একই সঙ্গে এসআই জাকির হোসেন ও এসআই আমিনুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এরপর সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার কামরুল আহসান তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে ওসি আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পুলিশ সদরদপ্তরে পত্র পাঠান। তার পত্রের প্রেক্ষিতে রবিবার পুলিশ সদরদপ্তর থেকে ওসি আলমগীর হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আর রাতেই বরখাস্তের আদেশটি সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনারের কার্যালয়ে পৌঁছে। আর সোমবার সকালে সেটি নথিভুক্ত করে আদেশ কার্যকর করেন পুলিশ কমিশনার।