রুবেল হাও মাও করে কেঁদে দিলো : হ্যাপী
নাজনীন আক্তার হ্যাপী : অনেকদিন আগের কথা রাত ৯টার দিকে আমি আর রুবেল ঘুরছিলাম হঠাৎ কোনো একটি কারনে ঝগড়াঝাঁটি শুরু হলো। যদিও ঝগড়াটা খুব সাধারণ ছিল আমাদের মধ্যে। মিরপুরের শেওড়াপারা পার হতে হতে ঝগড়া বেগবান হতে লাগল। ও তখন গাড়ি চালাচ্ছিল। মিরপুর থানা থেকে একটু সামনেই গাড়িটা থামাল,ঝগড়া তখনও চলছে। একটা সময় রুবেল আমাকে কুত্তার বাচ্চা বলল।
তখন আমার মাথাটা আরও বেশি গরম হয়ে গেল, আমি তখনই রুবেলকে বললাম “খবরদার আমার ফোনে তোর কল যেন না দেখি এবং আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করবি না” বলেই চলে যাওয়ার চেষ্টা করলাম তখন আমাকে থামিয়ে পর পর অনেকগুলো থাপ্পর দিলো। জীবনে ঐটা ছিল আমার গায়ে প্রথম হাত তোলা। তারপরও অনেকবার থাপ্পর খেয়েছি। আসল কথায় আসি,ও যখন আমাকে থাপ্পর দেয় তখন আমি একদম চুপ হয়ে গেলাম কি বলব বুঝতে পারছিলাম না।
চোখে অন্ধকার লাগছিল তখনই রুবেল হাওমাও করে কেঁদে দিল আমাকে হাত দুটো ওর বুকে লাগিয়ে খুবই অসহায়ভাবে বলতে লাগল“ আমাকে ছেড়ে তুই কোথায় যাবি? বাবু আমি তোরে ছাড়া বাচঁবো না। আমার জীবন থেকে চলে যাওয়ার আগে আমারে খুন করে যা।তুই শুধু আমার আর কারও না বাবু,তুই আমার জীবনে না থাকলে আমি শেষ হয়ে যাব। ” কথাগুলো বলার সময় রুবেল অঝরে কেঁদে যাচ্ছিল। তখন মনে হত আমি খুব ভাগবতী কেউ আমাকে এত ভালবাসে। তারপর যদিও স্বাভাবিক হয়েছিলাম।এইসব যখন মনে পড়ে তখন পাগল হয়ে যাই।
কারন এই রকম যে কত স্মৃতিকথা আছে যা বলে শেষ করা যাবে না। এই সব স্মৃতি সারাদিন রাত তুষের আগুনের মত আমাকে পোড়াতে থাকে। আর আজ সে যখন সবাইকে বলে বেড়াই আমি এটেনশন সিকার একটি মেয়ে,খারাপ মেয়ে,বাজে মেয়ে,ফালতু মেয়ে,ওকে ফাসানোর জন্য আমি সব করেছি তখন মনে হয় আল্লাহ যেন আমাকে আর এক মুহূর্তও বাচিঁয়ে না রাখে। আমি আর এত কষ্ট সহ্য করতে পারি না। দম বন্ধ হয়ে আসে। কি অদ্ভুত !ভালবেসে ঠকেছি এটা বলাতে সমাজ আমাকে দোষ দেয়,আমাকে খারাপ বলে অথচ রুবেলকে সবাই বাহ! বাহ! দেয়।
তার সুরে সবাই সুর মিলিয়ে আমাকেই খারাপ বলে! আমি সবার কাছে হাসির পাত্রী বনে গেলাম। আমার কিছু বলার নেই, সত্যিই নেই। সারা পৃথিবী আমাকে খারাপ বললে আমার কষ্ট লাগে না কিন্তু রুবেল আমাকে খারাপ বললে সেটা সহ্য করার ক্ষমতা আমার নেই। কারন আমি বিশ্বাস করি যে,কেউ না জানুক রুবেল জানে আমি কেমন মেয়ে। আল্লাহকে খুব জিজ্ঞাসা করতে ইচ্ছা হয়, হে আল্লাহ তুমি কি অন্ধ? তুমি তো মনের খবর সব জানো তবুও কেন চুপ আছো? আমি আর কাদঁতে পারছি না। এর চেয়ে আমাকে এই দুনিয়া থেকে মুক্তি দাও। সূত্র : ‘একটি স্মৃতিচারণ’ অভিনেত্রীর ফেসবুক আইডি থেকে।