কোম্পানীগঞ্জে জলমহাল নিয়ে দু’পক্ষের গোলাগুলি
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে জেলা প্রশাসনের দেয়া ইজারাকৃত জলমহাল দখলের চেষ্টা চালিয়েছে স্থানীয় একটি চক্র। গতকাল শুক্রবার ভোরে তারা জলমহালে গিয়ে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিও ছুঁড়েছে। ‘ছোট দুলাইন সিংগাইর’ নামের এ জলমহালটি ২০১০সাল থেকে ইজারা মূলে ভোগ করে আসছে উপজেলার শিমুলতলা নোয়াগাঁও অগ্রগামী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ১২নং সালদিঘারকান্দি মৌজার ১নং দাগ ও ১৩ নং উত্তর জাঙ্গাইল মৌজার ৭৮ ও ৭৪ দাগ সমন্বয়ে ১২৭.৫৪ একরের এ জলমহালটি এক সময় অতি মূল্যবান ও প্রতিষ্টিত জলমহাল ছিল। স্বল্পমেয়াদী ইজারাসহ কালের বিবর্তনে চারদিক থেকে ভরাট হয়ে প্রায় আস্তিত্বহীন হয়ে গিয়েছিল। জলমহালটির সংস্কার ও উন্নয়নের স্বার্থে ২০১০সালে ভুমি মন্ত্রনালয়ের অনুমোদনে সিলেটের জেলা প্রশাসন থেকে ৬ বছর মেয়াদী উজারা গ্রহন করে উপজেলার শিমুলতলা নোয়াগাঁও অগ্রগামী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি।
গত ২০১২ সালে সিলেটের জেলা প্রশাসন ও বনবিভাগ সমন্বয়ে এক সভায় পূর্নাঙ্গ জলমহালটি জেলা প্রশাসনের বলে স্বীকৃতিও দেয়া হয়েছিল। সেই হিসেবে ইজারাদার সমিতি সন সন খাজনা ও নির্ধারিত ইজারামূল্য দিয়ে জলমহালটি ভোগদখল ও ব্যবহার করে আসছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বন বিভাগ উপরোক্ত ‘ছোট দুলাইন সিংগাইর’ এর আওতাধীন সকল দাগ ব্যতিত বনবিভাগের মালিকানা অন্য একটি মহাল ইজারা প্রদান করে। ক্রমশঃ বন বিভাগ ইজারার আওতায় নিয়ে আসে ‘ছোট দুলাইন সিংগাইর’ জলমহালস্থ একটি দাগ। বনবিভাগ থেকে ওই মহালের ইজারার জন্য দরপত্র ক্রয় করেন জনৈক তোরাব আলী। তিনি ওই দাগের দখল দাবি করলে এ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা হয়।
মামলায় জেলা প্রশাসনের ইজারাদারের পক্ষে স্থিতাবস্থার আদেশ দেয়া হয়। এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে লীভ টু আপীল ( নং-২৬৯১/২০১৪) করে বনবিভাগ। আপীল বিভাগের ২৯.১০.২০১৪ তারিখের আদেশে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা বহাল রাখেন সুপ্রীম কোর্ট। হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্টের আদেশ ও স্থিতাবস্থা লংঘন করে বনবিভাগের লোকজন জেলা প্রশাসনের ইজারা দেয়া জলমহালে প্রবেশের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
এ নিয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থানার ওসির সামনে একাধিকবার বন বিভাগের লোকজনকে উচ্চ আদালতের আইন মান্য করে কাজ করার আহবান জানান। কিন্তু বিন বিভাগের আশির্বাদ থাকায় তোরাব আলী গংরা বার বার জলমহাল দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে জলমহাল নেয়ার ইজারাদার আবদুল হক সরকার জানান, প্রথম থেকে তোরাব আলী গংরা অন্যায় ভাবে জলমহাল দখলের চেষ্টা চালালেও পরে এর দায়িত্ব নিয়ে নেয় স্থানীয় তাজ উদ্দিন নামের এক সন্ত্রাসী। একপর্যায়ে সে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে জলমহালে আক্রমণের হুমকি দেয়। কিন্তু চাঁদা না দেয়ায় তার বাহিনী নিয়ে
গতকাল ভোরে জলমহালে গিয়ে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে জলমহালে অবস্থানরত ইজারাদার পক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে ইজারাদার আবদুল হক সরকার বাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি এজাহার দাখিল করেছেন।