গনপিটুনীতে ডাকাত নিহতের জের : উত্তর সিলেটে আতংক
সিলেট অফিস : গনপিটুনীতে ডাকাত নিহতের জের ধরে উত্তর সদর সিলেটে বিরাজ করছে থমথমে অবস্থা । ঘটনার পর থেকে সংঘবদ্ধ ডাকাত আলতাবাহিনী চরম প্রতিশোধপরায়ন হয়ে উঠেছে। হাট-বাজারসহ বিভিন্নস্থানে ডাকাত বাহিনীর সশস্ত্র মহড়া এলকার জনমনে আতংক সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন গ্রামের লোকজনসহ স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা এখন চরম হুমকির মূখে। অনেকে ভয়ে দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্টান খোলতে সাহস পাচ্ছেন না।
জানা গেছে,গত ১১এপ্রিল ভোররাতে সিলেট সদরের হাটখোলার জাঙ্গাইল গ্রামে ডাকাতি করতে গিয়ে গনপিটুনীতে নিহত হয় আলতাবাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড ডাকাত জয়নাল। ঘটনার পর এলাকার জনমনে স্বস্তি ফিরে আসে এবং এলাকার শান্তিকামী মানুষ মিষ্টি বিতরন করেন ও বিকেলে স্থানীয় বাজারে আনন্দ মিছিল করেন। এসময় ডাকাতসর্দার আলতার নেতৃত্বে তার বাহিনীর সদস্যরা জনতার মিছিলে হামলা চালায়। ডাকাত জয়নাল নিহতের ঘটনায় এসএমপির জালালাবাদ থানায় পৃথক মামলা হয়েছে। স্থানীয় শিবেরবাজার পুলিশ ফাড়ির এসআই মো. আক্তারুজ্জামান বাদী হয়ে ডাকাত জয়নাল নিহতের ঘটনায় একটি হত্যামামলা (০৯(৪)১৬) দায়ের করেন। মামলায় ৮০ থেকে ১শ’ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করেন তিনি। মামলায় জয়নালকে দূর্ধর্ষ ডাকাত আখ্যায়িত করে চুরি করতে গিয়ে গনপিটুনীতে নিহতের কথা উল্লেখ করা হয়। এ ঘটনায় জাঙ্গাইল গ্রামের জনৈক আতাউর রহমান বাদী নিহত ডাকাত জয়নালকে প্রধান আসামী করে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা (০৮৯৪)১৬) করেন।
গনপিটুনীতে ডাকাত নিহতের ঘটনায় এলাকার জনমনে স্বস্তি ফিরে এলেও তা স্থায়ী থাকেনি। ঘটনার পর থেকে নিহতের পিতা ডাকাতসর্দার আলতা ও তার বাহিনীর ডাকাত এবং দোসররা নচেচড়ে বসেছে। তারা প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে সশস্ত্র মহড়ার মধ্যদিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছে। ডাকাত সর্দার আলতা ও তার ভাই কানা শফিকসহ এলাকার সংঘবদ্ধ ডাকাতদল তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়দাতাদের নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে। তারা এলাকার শান্তিকামী লোকজনকে হত্যা গুম ধর্ষন চুরি-ডাকাতিসহ মিথ্যে মামলায় হয়রানীর প্রকাশ্যে হুমকি ধমকি দিয়ে চলেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় এলাকার লোকজনের আরামের ঘুম এখন হারাম হয়ে গেছে। প্রতিটি গ্রামে এখন ডাকাত প্রতিরোধে রাতে-দিনে বসানো হয়েছে সশস্ত্র প্রহরা। ডাকাতবাহিনী ও তাদের দোসর চক্রের হামলা-মামলার ভয়ে স্থানীয় শিবেরবাজারের অনেক ব্যবসায়ী ব্যবসা প্রতিষ্টান বন্ধ করে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন।
সিলেট সদর উত্তর ও কোম্পানীগঞ্জে ডাকাত সর্দার আলতাবাহিনীর চুরি-ডাকাতি ধর্ষন ও খুনের কারনে এলাকাবাসী অতিষ্ট হয়ে ১৯৯৬ সালে গড়ে তুলেন গনপ্রতিরোধ। সে সময়ে ডাকাত সর্দার আলতা ও তার দূর্ধর্ষ ডাকাতবাহিনীর প্রায় ২০ সদস্যকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেন তারা। পুলিশও স্থানীয় ছাত্রশিক্ষকদের সহায়তায় ডাকাতদের গ্রেফতারে চালায় সাড়াঁশি অভিযান। ফলে গত কয়েকবছর এলাকার মানুষজন শান্তিতে বসবাস করেন। অতি সম্প্রতি ডাকাত সর্দার আলতা ও তার বাহিনী আবারো সক্রিয় হয়ে উঠে এবং ডাকাতবাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডের দায়িত্বে আসে ডাকাত সর্দার আলতার পুত্র জয়নাল ডাকাত। গত ১১এপ্রিল ডাকাতি করতে গিয়ে ডাকাত জয়নাল গনপিটুনী খেয়ে মারা যায়। পুলিশ জানিয়েছে নিহত ডাকাত জয়নালের বিরুদ্ধে সিলেট সদরসহ জেলার বিভিন্ন থানায় চুরি ডাকাতি খুুন ও ধর্ষনের ডজনঅধিক মামলা রয়েছে।
সিলেট সদর উপজেলার হাটখোলা ইউপি চেয়ারম্যান জমির উদ্দিন ও নবনির্বাচিত চেয়ারম্যন আজির উদ্দিন ডাকাতিকালে গনপিটুনীতে জয়নাল নিহতের সত্যতা স্বীকার করে এলাকার শান্তিকামী মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের আহ্বান জানিয়েছেন।