আমার মৃত্যু হলে এই নশ্বর দেহটি যেন কোনো মেডিকেলে দিয়ে দেয়া হয় : সামাদ
ডেস্ক রিপোর্টঃ খুন হওয়া অনলাইন এক্টিভিস্ট নাজিমুদ্দিন সামাদের একটি ডাইরি তার বাসা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আর সেখানেই তিনি লিখে গেছেন না বলা অনেক কথা। ডাইরির শুরুতেই তিনি লিখে গেছেন—
গতকাল-ই এই ডাইরিটা কিনলাম। হঠাৎ করে মনে হলো আরে আমি কী করছি! নিজের জীবনের অনেক interesting বিষয় ভুলে যাচ্ছি। যদি কোনো দিন বুড়ো হই তাহলে এই ডাইরিটা কাজেও আনতে পারে। আমি এমনিতেই ভুলোমনা।
সব যদি স্মৃতির গর্ভে হারিয়ে যায় তবে আজ থেকে ৩০-৪০ বছর পর ঘটনাবিহীন এক ধূসর অতীতকেই দেখতে হবে। এর চেয়ে ভয়ঙ্কর বেদনাদায়ক জীবন আর কী হবে। আমি নিজেকে ব্যক্তিগতভাবে একজন সৎ মানুষ মনে করি। তাই এখানে যা লিখব তার সত্যতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকবে না আমর মনে।
ডাইরি লিখাটা আমি হাইস্কুলেই শুরু করতে পারতাম। অনেকগুলো ডাইরি আমি কিনেছিলামও। কিন্তু হাতের অসুন্দর লেখা নিয়ে সব সময় একটু হীনমন্বতায় ভুগতাম এবং এখনো ভোগী।
‘my will- আমার ইচ্ছা’
কার, কখন, কোথায়, কিভাবে মৃত্যু হয় কেউ জানে না। মৃত্যু আমার কাছে ভয়ের কোনো বিষয় নয়। এটা জীবনেরই একটা শ্বাসত প্রক্রিয়া। আমার কাছে মৃত্যু একটা গভীর ঘুম- যেখানে কোনো শব্দ-বর্ণ-অনুভূতি ও স্বপ্ন থাকে না। মৃত্যু মানে একটি রূপের চূড়ান্ত ধ্বংস। যদি ধ্বংসের রেসে যেতে পারো তবে প্রাণ চলে যাবে অন্য ‘রূপে’।
এভাবেই যদি প্রাণ নতুন ‘রূপ’ লাভ করে ‘প্রাকৃতিক নির্বাচনে’ নতুন প্রজাতির উৎপত্তি করে ও লক্ষ লক্ষ প্রজাতিতে পৃথিবী মুখরিত হয়। আমার মৃত্যু হলে এই নশ্বর দেহটি যেন কোনো মেডিকেলে দিয়ে দেয়া হয়। কবরে কীট পতঙ্গে খাওয়ার চেয়ে অথবা আগুনে জ্বলার চেয়ে তা কোনো মানব হিতৈকর কাজে লাগুক। জয় হোক মানবতার।
উল্লেখ্য, নাজিমুদ্দিন সামাদ (২৭) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে সান্ধ্যকালীন মাস্টার্সের ছাত্র ছিলেন। বুধবার (৬ এপ্রিল) রাত সোয়া ৮টার দিকে সূত্রাপুরের একরামপুরে তাকে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করা হয়। সামাদ ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনলাইনে লেখালেখিতে সক্রিয় ছিলেন।