মুক্তিযুদ্ধে সিলেটের নারীদের ভূমিকা
ডেস্ক রিপোর্ট :: মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির জীবনে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর আমরা অর্জন করি লাল সবুজের পতাকা, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন, সম্ভ্রম হারিয়েছেন ২ লাখ মা বোন। যুদ্ধে পুরুষের পাশাপাশি এ অঞ্চলের নারীরাও অংশ নিয়েছেন। নানা ভাবে নানা মাত্রায় তাদের অংশগ্রহন মুক্তিযুদ্ধকে করেছিল বেগবান। নারীদের কেউ অস্ত্র হাতে ঝাপিয়ে পড়েছেন শত্র“র উপর আবার কেউ কেউ করেছিলেন সংগঠকের ভূমিকা। পাক হায়নাদের লালসার শিকার হয়েছেন এ দেশের অসংখ্য নারী। সেই সাথে শত্র“র হাতে ঝরেছে তাদের প্রাণ। কিশোরী, তরুণী,যুবতী,বৃদ্বা কেউই রেহাই পাননি বর্বরদের হাত থেকে।
দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো সিলেটের নারীরাও রাজপথে ছিলেন সক্রিয়। মুক্তিকামী সাধারণ মানুষকে উজ্জীবিত করতে অনুপ্রেরণা যোগাতে মিছিলের অগ্রভাগে থেকে তারা শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত করেছিলেন রাজপথ। উত্তাল মার্চে সিলেটে যে ক’টি মিছিল সমাবেশ হয়েছিল তার প্রতিটিতেই নারীদের উপস্থিতি ছিল উলে¬খ করার মতো। নারীরা শুধু পুরুষের কাঁেধ কাঁধ মিলিয়ে অংশগ্রহনই করেননি নিজেরাও নানা কর্মসূচি পালন করেন পরাধীনতার শৃংখল ভাঙার আন্দোলনে। অগ্নিগর্ভ মার্চে মিছিল সভা সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্টান সবকিছুতেই নারীর অংশগ্রহন স্বাধীনতা আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করেছিল।
সিলেটে স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত যে সব নারী অক্লান্ত পরিশ্রম করে মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে জোবায়দা খাতুন চৌধুরী, সিরাজুন্নেছা চৌধুরী, সুহাসিনী দাশ, প্রীতিরানী দাশ পুরকায়স্ত, হেনা দাশ, ঊষা দাশ পুরকায়স্ত, ষোড়শী চক্রবর্তী, আলম রওশন চৌধুরী, দীপালি চক্রবর্তী, ফাহমিদা রশীদ চৌধুরী, খোদেজা কিবরিয়া, আবেদা চৌধুরী, জেবুন্নেছা হক, ফাতেমা চৌধুরী, জাহানারা আফসার, রায়হানা শফি, নিবেদিতা দাশ পুরকায়স্ত, রতœা চক্রবর্তী, নিবেদিতা দাশ, রাখী দাশ পুরকায়স্তের নাম বিশেষভাবে উলে¬খযোগ্য। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এসব মহিয়সী নারী দেশ গঠনেও ভূমিকা রাখেন। কিন্তু দুংখজনক হলেও সত্য বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই জানে না এইসব নারীদের বীরত্বগাঁথা।