‘চুরি করা গল্পে’ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার!
বিনোদন ডেস্কঃ বৃহস্পতিবার ঘোষণা হয়েছে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৪’। এবার সেরা ছবি নির্বাচিত হয়েছে মুরাদ পারভেজের ‘বৃহন্নলা’। একই ছবির জন্য সেরা কাহিনীকার ও সংলাপ রচয়িতা হিসেবে দুটি বিভাগে পুরস্কার জিতেছেন মুরাদ পারভেজ। কিন্তু পুরস্কার ঘোষণার একদিনের মাথায় সমালোচনার মুখে পরেছে ছবিটি। প্রশ্ন উঠেছে, ছবিটির গল্প চুরি করা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা ঝড়।
বেশ ক’জন নির্মাতা দাবি করেছেন, ছবির কাহিনিটি সৈয়দ মুস্তফা সিরাজের গল্প ‘গাছটা বলেছিল’ থেকে নেয়া। তার পরিবারে সদস্যদের অনুমতি ছাড়াই গল্পটা ব্যবহার করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মুস্তফা সিরাজের পরিবারের পক্ষ থেকে বেশ কবার অভিযোগ করা হয়েছে।
গতবছর টাইমস অব ইন্ডিয়ায় দেয়া এক সাক্ষাতকারে সৈয়দ মুস্তফা সিরাজের পুত্র অভিজিৎ সিরাজ অভিযোগ করেছেন, বাবার গল্প ব্যবহার করলেও ক্রেডিট লাইন তার বাবার নাম দেয়া হয়নি।’ উপরন্তু ছবির পোস্টারে কাহিনিকার হিসেবে নিজের নাম জুড়ে দিয়েছেন মুরাদ পারভেজ। চুরি করা গল্পের সিনেমা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়?-এমন প্রশ্ন মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে ঘুরফিরে। চুরি করা গল্পে একটি সিনেমাকে রাষ্ট্রীয় সন্মানে ভূষিত করা হয় কিভাবে? রাষ্ট্র কি তাহলে চুরি বিদ্যাকে পরোক্ষে প্রশ্রয় দিচ্ছে? এমন প্রশ্নই ঘুরেফিরে ভাসছে ভার্চুয়াল জগতে।
অথচ সরকারী অনুদান নীতিমালার ২১ অনুচ্ছেদে বলা হচ্ছে, ‘দেশী/গল্প কাহিনীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট লেখক/সংস্থা/প্রকাশকের লিখিত সম্মতি/অনুমতি নিতে হবে। বিদেশী গল্প বা কাহিনীর ক্ষেত্রে কপিরাইট আইন এর আওতায় সংশ্লিষ্ট লেখক/সংস্থা/প্রকাশকের লিখিত অনুমতি নিতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র দাখিল করতে হবে।’
২৪ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে ‘অনুদানে নির্মিত চলচ্চিত্র মৌলিক নয় বলে প্রমানিত হলে প্রযোজক অনুদান হিসেবে গৃহিত সমুদয় অর্থ ও সেবার মূল্য রাষ্ট্রীয় কোষাগারে প্রচলিত সুদসহ ফেরৎ দিতে বাধ্য থাকিবে- এ মর্মে একটি অঙ্গীকারপত্র প্রযোজ্য স্ট্যাম্প পেপারে আবেদনের সঙ্গে দিতে হবে। অবৈধ পন্থা অবলম্বন ও অনুদানের শর্ত লংঘনের ক্ষেত্রে সরকার সংশ্লিষ্ট নির্মাতা/অনুদান গ্রহণকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।’
চলচ্চিত্ররা সংশ্লিষ্টরা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘বৃহন্নলা’ সিনেমার কাহিনীটি মুরাদ পারভেজের নয়, তা সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘গাছটা বলেছিল’ গল্প থেকে নেয়া। পরিচালক কোথাও তা স্বীকার করেনি বরং তা নিজের বলে প্রচার করেছে। এক্ষেত্রে সরকার নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালক/প্রযোজকের বিরুদ্ধে ২১ ও ২৪ নং নীতিমালা প্রয়োগ করবেন, সেই আশা কি করতে পারি?
এব্যাপারে নির্মাতা মুরাদ পারভেজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
সূত্র: বাংলামেইল