চুরির চেষ্টার অভিযোগে ৩ শিশুকে বেঁধে নির্যাতন
ডেস্ক রিপোর্টঃ নাটোরের বাগাতিপাড়ায় চুরির চেষ্টার অভিযোগে তিন শিশুকে রশি দিয়ে বেঁধে লাঠিপেটা করা সহ অর্থদণ্ড করেছে বাজার কমিটি। শুক্রবার বিকালে উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের মাকুপাড়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের মাকুপাড়া বাজারে রাত ১২টার দিকে স্থানীয়রা রহমান মার্কেটের পিছন থেকে সন্দেহজনক বসে থাকা দেখে চোর সন্দেহে পাঁকা গ্রামের রমজানের ছেলে ও পাঁকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র রুমনকে আটক করে। আটকের পরে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। পরে চুরি করার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে মাকুপাড়া গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে আইডিয়াল স্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্র মেহেদী এবং একই গ্রামের সিদ্দিকের ছেলে ও মাকুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির ছাত্র ফিরোজকেও আটক করা হয়।
এ নিয়ে শুক্রবার বিকালে মাকুপাড়া বাজার কমিটির উদ্যোগে স্থানীয় মাকুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক শালিস বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে চোর সন্দেহে আটক তিন শিশুকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক লাঠি দিয়ে পেটান ওই বাজার কমিটির সভাপতি ইমাজ এবং সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান পিয়া। এ সময় তারা রুমনকে ৫ হাজার, মেহেদীকে ৫ হাজার এবং ফিরোজকে ২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন।
এ বিষয়ে মাকুপাড়া বাজার কমিটির সভাপতি ইমাজ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, চোর সন্দেহে ওই তিন শিশুকে আটক করা হয়। এরপর শুক্রবার বিকালে সালিশ বৈঠকে তারা চুরি করার পরিকল্পনার কথা স্বীকার করলে তাদের হালকা মারপিট এবং অর্থদণ্ড করা হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাগাতিপাড়া মডেল থানার ভারপপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৈয়ব আলী খান জানান, এ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ এখন পর্যন্ত পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন বাগাতিপাড়া উপজেলা শাখার সভাপতি এ্যাড. সোহেল রানা জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে শিশুদের রশি দিয়ে বেঁধে মারপিট করা সুষ্পষ্ট মানবাধিকার লংঘন এবং এটি শিশু নির্যাতনের সামিল। শালিসবর্গ এ ধরনের কাজ করতে পারেন না। এটা বেআইনি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।