কোচিং সেন্টারে ছাত্রদের উপর জয়ের যৌন নির্যাতন..অতঃপর…
ডেস্ক রিপোর্টঃ কোচিং সেন্টারে পড়াতেন রাজিব বিশ্বাস ওরফে জয়। কিন্তু শিক্ষকতার মতো মহান পেশার অন্তরালে হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে তিনি। বিভিন্ন কায়দায় ছাত্রদের জিম্মি করে দিনের পর দিন যৌন নির্যাতন করতেন জয়। কিন্তু এবার বিধিবাম। এক অভিভাবক হাটে হাঁড়ি ভেঙ্গে দেন তার। এলকাবাসী তাকে রামধোলাই দিয়ে জুতার মালা দিয়ে ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়ায়।
নাটো্র শহরের ফৌজদারী পাড়ার ভুক্তভোগী ছাত্র নাইমুল ইসলাম নিরবের বাবা রেন্টু তার অভিযোগে জানান, সদর থানার হাজরা-নাটোর এলাকার রাজিব বিশ্বাস ওরফে জয় দীর্ঘদিন থেকেই শহরের কানাইখালী এলাকার চাল পট্টিতে আইডিয়াল কোচিং সেন্টার খুলে ছাত্র-ছাত্রী পড়ানোর নামে প্রায়ই বিভিন্ন ছাত্রদের আলিঙ্গন ও যৌন কামনা চরিতার্থ করে আসছিল। ছাত্রদের ওপর সে গোপনে কোচিং সেন্টারের মধ্যে যৌন পিড়ন করতো। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার সকাল সাড়ে আটটার দিকে নিরবকে পড়ানোর নাম করে কোচিং সেন্টারের মধ্যে নিয়ে তার ওপর যৌন কামনা চরিতার্থ করার সময় নিরবের চিৎকারে আশে পাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা কোচিং প্রধান রাজিব বিশ্বাস ওরফে জয়কে গণপিটুনি দেয়। এর আগেও অভিযুক্ত কোচিং প্রধান নিরবের ওপর একাধিকবার যৌন নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ভুক্তভোগী নিরব জানায়, প্রায় দুইবছর থেকে সে জয় স্যারের কোচিং সেন্টারে পড়ছে। পড়া শুরুর প্রায় ৬ মাস পর প্রতিবেশী এক বিয়ের অনুষ্ঠানে দাওয়াত খেয়ে সে এক জাতীয় সফট্ কোল্ড ড্রিংক পান করে। তার বন্ধুরা বিষয়টি স্যারকে জানানোর পর স্যার তাকে ধমকের পর ধমক দিয়ে বলে যে, তিনি যা বলবেন তা যদি সে না করে তবে তাকে বেত দিয়ে পেটানো হবে।
এরপর স্যারের কথামত একটা সাদা কাগজে আমি নেশাখোর, আমার বাবা খারাপ—-ইত্যাদি কথা লিখতে হয়। পরে স্যার কাগজগুলো রেখে দেয়। এরপর স্যার যা বলে তা না করতে চাইলেই স্যার ভয় দেখায় যে, তার নিজের হাতে লেখা কাগজগুলো তার বাড়িতে পাঠিয়ে বাবা-মাকে দিয়ে মার খাওয়ানো হবে। ভয়ে সে স্যারের কথামত কাজ করে। স্যার তাকে দিয়ে বাড়ির বাজার করানো, মন্দিরে রং করানো, ওষুধের দোকান থেকে ঘুমের ওষুধ কেনা ইত্যাদি কাজও করিয়ে নেয়।
গত ৩১ তারিখে জেএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট বের হওয়ার আগের দিন স্যার তার এক সহপাঠীকে দিয়ে খবর পাঠায় তাকে দেখা করতে। এরপর স্যার তাকে বলে যে, তার সহপাঠী অমিত যা বলবে তাকে তাই করতে হবে। পরে কোচিং সেন্টারের মধ্যে অমিতকে দিয়ে তার নগ্ন ছবি তোলানো হয়। এরপর আরেক দিন চার-পাঁচজন সহপাঠীর সামনে জোর করে তার নগ্ন ছবি তোলায় স্যার। এরপর স্যার বলে যে, কথা না শুনলে তার নগ্ন ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়া হবে। এরপর স্যার বিভিন্ন সময় তার ওপর যৌন নির্যাতন চালিয়ে আসছিল।
নিরব আরো দাবি করে, তার মতো অনেক সহপাঠীর ওপরই রাজিব দীর্ঘদিন থেকে যৌন নির্যাতন চালায়।
স্থানীয় লোকজন জানান, এর আগেও শহরের জয়কালীবাড়ি এলাকায় কোচিং চালানোর সময় একই রকম কথা জানাজানি হলে, স্থানীয়রা রাজিবকে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল।
সদর থানা পুলিশের ওসি মিজানুর রহমান জানান, রেন্টু বাদী হয়ে রাজিবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ রাজিবকে গ্রেফতার করেছে।