অনলাইনে খালেদার ভিডিও বার্তা (ভিডিও সহ)
ডেস্ক রিপোর্টঃ টেলিভিশন নয় অনলাইনে দেখা যাচ্ছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ভিডিও বার্তা। ২৬ সেকেন্ডের এই ভিডিও বার্তায় বিএনপি চেয়ারপারসন ভোটারদের কাছে ধানের শীষে ভোট চেয়েছেন।
ভিডিও বার্তায় তার বক্তব্য হচ্ছে, ‘প্রিয় পৌরবাসী ভাই ও বোনেরা, দেশব্যাপী পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সকলে ভোট কেন্দ্রে যাবেন, আপনার ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য; শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য বিএনপির মনোনীত প্রার্থীকে ধানের শীষ মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করুন।’
ঢাকায় নাগরিকদের ‘নিরাপত্তার’ কারণ দেখিয়ে আগামীকাল নয়াপল্টনে বিরোধী জোটকে গণজমায়েত করতে না দিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ঘোষণার পরপরই বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া যে কোনো মূল্যে কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানান। গত মঙ্গলবার এই কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে তিনি নিজেও অনেকটা অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের
বিদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালানোর নির্দেশ দেন তিনি।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয়ের মাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আগামী ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় পতাকা হাতে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমবেত হওয়ার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ করছি। আমি আশা করি, সকল প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে আপনারা ২৯ ডিসেম্বরের এই সমাবেশে শরিক হবেন।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘আমি আপনাদের পাশে আছি, থাকব সব সময়। যদি আমি আপনাদের পাশে থাকতে না-ও পারি, তাহলে আপনারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। এ সরকারের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।’
দেড় মিনিটের ওই ভিডিও বার্তায় দৃঢ়কণ্ঠে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এ দেশে আমরা গণতন্ত্র এনেছি, আবারও গণতন্ত্র আনবো। ইনশাল্লাহ সেদিন বেশি দূরে নয়, বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত।’
দেশবাসীর উদ্দেশে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘২৯ ডিসেম্বরের সমাবেশে শরিক হয়ে এই সরকারের প্রহসনের নির্বাচনকে ‘না’ এবং গণতন্ত্র ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে ‘হ্যাঁ’ বলতে আহ্বান জানাচ্ছি।
গত মঙ্গলবার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে খালেদা জিয়া ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা অভিমুখে ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ ঘোষণা করেন। গণতন্ত্র অভিযাত্রার এই কর্মসূচিতে সব শ্রেণী-পেশার মানুষসহ দেশবাসীকে লাল-সবুজ পতাকা হাতে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এ কর্মসূচি ঘোষণার পরই খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয় ও বাসভবনের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ভেতরে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। বিএনপির নেতাকর্মী, পরিবারের সদস্য, এমনকি কর্তব্যরত সাংবাদিকদেরও প্রবেশে বাধা দেয় পুলিশ। পরদিন বুধ ও বৃহস্পতিবার রাতে রাজনৈতিক কার্যালয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাব ও ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধিদল খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত্ করে। এছাড়া তেমন কাউকে বাসভবন ও অফিসে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। আর বুধবার রাতে গুলশান অফিসের সামনে থেকে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য শাম্মী আকতার, সাবেক এমপি সাখাওয়াত হোসেন বকুলসহ অন্তত ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
অনেকটা অঘোষিতভাবে অবরুদ্ধ রাখা হয়েছে বিরোধীদলীয় নেতাকে। বাসভবন ও অফিসের ফটকের দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছে পুলিশ। আর এমন পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়া টেলিভিশনের মাধ্যমে কর্মসূচি সফল করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানালেন। আগামীকালের গণতন্ত্র অভিযাত্রায় তাকে (খালেদা জিয়া) অংশ নিতে দেয়া হবে না বলেও তিনি এ বার্তায় আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তবে এমন দুঃসময়েও ‘আপসহীন’ এই নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন দৃঢ়কণ্ঠ।
তার ব্যক্তিগত স্টাফরা জানিয়েছেন, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) চলমান আন্দোলনে বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। তিনি দৃঢ় মনোবল নিয়ে সারাদেশের নেতাকর্মীকে নির্দেশনা দিচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার নামে ফেসবুকে পেজ খোলা হচ্ছে। সেখানেও এই ভিডিও বার্তাসহ নির্বাচনী প্রচারণাসহ বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যক্রম সেখান থেকে জানা যাবে।