সবার অসুবিধা প্রমাণ করে ইসি ‘নিরপেক্ষ’
ডেস্ক রিপোর্টঃ পৌর ভোটের প্রচারণার মাঠে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, দশম সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি এমনকি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের অবস্থানকে বিএনপি শুরু থেকেই বলছে ‘আজ্ঞাবহ’, এরপর জাতীয় পার্টি বলে ‘মেরুদণ্ডহীন’, এখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও সমালোচনামুখর। কমিশনের অবস্থান সম্পর্কে দলগুলার এমন বক্তব্যকে নিজেদের ‘নিরপেক্ষতার’ প্রমাণ হিসেবে দেখছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেছেন, “আমরা অ্যাকশন নিচ্ছি। সবার কিছু যখন অসুবিধা হচ্ছে, বুঝতেই হবে সবার প্রতি আমরা অ্যাকশন নিচ্ছি। আমাদের নিউট্রাল অবস্থা আরও স্পষ্ট হচ্ছে।’’
বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল দেখা করে বিএনপিকে ‘বাড়তি সুবিধা’ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়ে আসার পর সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় পৌর ভোটে সমান সুযোগ না দিয়ে ইসি সরকারের ‘আজ্ঞাবহ’ প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে বলে অভিযোগ সংসদ নির্বাচন বর্জনের পর স্থানীয় সরকারের এই ভোটে আসা বিএনপি।
মন্ত্রী-এমপিদের বিধিভঙ্গ ঠেকাতে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাওয়ার পর ইসিকে ‘মেরুদণ্ডহীন’ বলেন সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ।
বৃহস্পতিবার বিকালেও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধি ইসিতে এসে সাংবাদিকদের বলেন, সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট হওয়া দুরূহ হয়ে পড়েছে।
ইসিকে নিয়ে বিরোধী দলের ক্রমাগত সমালোচনার মধ্যে বৃহস্পতিবার ক্ষমতাসীন দলের একটি প্রতিনিধি দল সিইসির সঙ্গে দেখা করতে যায় দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফের নেতৃত্বে।
সিইসির সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে হানিফ সাংবাদিকদের বলেন, “নির্বাচন কমিশন বিএনপির প্রতি অতি সদয় হয়ে আমাদের ওপর নির্দয় আচরণ করছে।”
সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। কারও চেহারা দেখে বা কারও প্রতি সদয় বা কারও প্রতি নির্দয়ের প্রশ্ন আসছে না। সবাইকে সাংবিধানিক অধিকার দেওয়ার চেষ্টা করছি।
ইতোমধ্যে অনিয়মের বিষয়ে জরিমানা, শোকজ, কর্মকর্তাদের বদলিসহ ইসির নেওয়া পদক্ষেপও তুলে ধরে তিনি বলেন, “সব দিক থেকে আমরা কঠোর থাকব। বিধি লঙ্ঘন হলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি।”
বিধি ভঙ্গের জন্য ইসি সরাসরি কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উপর দিয়ে নিজেদের দায় এড়াচ্ছে বলেও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এদিকে বিধি লঙ্ঘনকারী এমপি-মন্ত্রীদের তালিকা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে চাওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এমন কোনো চিঠি আমরা পাইনি।’’