ঢাবিতে দরজা ভেঙে ছাত্রকে ধরে এনে ৩ তলা থেকে ফেলল ছাত্রলীগ
ডেস্ক রিপোর্টঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এএফ রহমান হলের এক ছাত্রকে কক্ষের দরজা ভেঙে ধরে এনে রড দিয়ে পিটিয়ে ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে তিনতলা থেকে নিচে ফেলে দিয়েছে ছাত্রলীগ।
গুরুতর আহত ওই ছাত্রের নাম মাহমুদুল হাসান তুষার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্র। নিচে ফেলে দেওয়ায় তার মাথা ফেটে গেছে এবং মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে গেছে।
তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্বরত চিকিৎসক। শনিবার রাত ৩টার দিকে এ বর্বরোচিত ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাত্রলীগের মারধরে আরো ৫ জন ছাত্র আহত হয়েছেন। আহতদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তারাও ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করছে সংগঠনটি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৩টার দিকে হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীনের অনুগত কয়েকজন ক্যাডার ৫১২ নং রুমের বাসিন্দা অন্য একটি গ্রুপের ছাত্রলীগ নেতা মাসুদকে ডেকে রুমের বাইরে নিয়ে আসে।
এসময় কথাবার্তার এক পর্যায়ে মাসুদের সাথে তর্কাতর্কি শুরু হয় রুহুলের অনুগত কর্মীদের। তর্কাতর্কির মাঝেই হঠাৎ করে আশপাশের কয়েকটি রুমে আগে প্রস্তুত হয়ে থাকা আরো কয়েকজন লাঠিসোটা, রড ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসে মাসুদকে মারধর করতে থাকে। একই সাথে মাসুদের অনুগত কর্মীদের বিভিন্ন রুমে ভাঙচুর করে তাদেরকে হল থেকে তাড়িয়ে দেয়। এসময় তারা ৬টি রুমে ব্যাপক ভাঙচুর করে। ৩০৩ নং রুমের দরজা ভেঙ্গে ঢুকে মাহমুদুল হাসান তুষারকে মারধর করতে করতে তিনতলা থেকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়। এতে তুষারের মাথা ফেটে যায় এবং মেরুদণ্ডে বড় ধরনের ফ্রাকচার হয়েছে বলে ডাক্তাররা জানিয়েছেন।
এছাড়া ৩১২ নং রুমে হুমায়ুন কবির নামে দর্শন বিভাগের এক ছাত্রকে ঘুমন্ত অবস্থায় বেধড়ক পেটানো হয়। একটি সূত্র জানিয়েছে, রুহুলের অনুগত এবং একাধিক মামলার আসামি দুই ছাত্রলীগ কর্মী সংস্কৃত ও পালি বিভাগের তানভীর এবং ইতিহাস বিভাগের সাদ্দামকে মাসুদের নিয়ন্ত্রিত একটি রুমে জোর করে তোলা নিয়েই বিরোধের সূত্রপাত।ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতারা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং তাড়িয়ে দেয়া কর্মীদের হলে উঠিয়ে দিয়ে যান। শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন আহতদের দেখতে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে যান।