লেখকদের প্রতি অনুরোধ, দয়া করে চুপ করে থাকবেন না
খুরশীদ শাম্মী (সিবিএনএ) দেশে কিংবা বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশের এবং বাংলা ভাষার সকল লেখকদের প্রতি অনুরোধ, দয়া করে চুপ করে থাকবেন না। জাতি আজ বড় একটা দুঃসময় অতিক্রমণ করছে। দেশ স্বাধীনতার চার দশক পরে যখনই স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাজ শুরু হলো এবং সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাংলাদেশ জামাতে ইসলামী সংগঠনের নিবন্ধন অবৈধ এবং একে নির্বাচনে অংশগ্রহনের অযোগ্য ঘোষনা করা হলো। তখনি ইসলাম ধর্ম নামটির অপব্যবহার করে জামাত শিবিরের রক্ত পিপাসুরা শুরু করে লেখক এবং ব্লগারদের প্রতি হুমকি এবং পরবর্তিতে হত্যা। এবং হত্যার পরে বাংলাদেশের অধিকাংশ অর্ধশিক্ষিত ধার্মিক মানুষদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে ব্লগাররা ইসলাম বিরোধী লেখা লিখে বলে তাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের গ্রাম কিংবা মফস্বলের অধিকাংশ মানুষই হয়তো এটাই সত্য বলে ধরে নিবেন, কারণ বাস্তবে তারা জানেন না যে ব্লগার কথাটার অর্থ কি? অথবা কখন, কোন যুক্তিতে তাঁরা কি-ই-বা লিখেছিলেন? দেশের এমন অবস্থায় সর্বস্তরের লেখকদের সর্বপ্রথম কর্তব্য হবে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে ব্লগ এবং ব্লগার সম্পর্কে অবগত করা। “ব্লগ একটি ইংরেজী শব্দ। বাংলায় ব্লগ শব্দটির অর্থ, এক ধরণের অনলাইন ব্যক্তিগত দিনলিপি বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক পত্রিকা। যিনি ব্লগে লেখেন কিংবা পোস্ট করেন তাকে ব্লগার বলা হয়। ব্লগাররা সাধারণত তাদের ওয়েবসাইটে যুক্তিসংগত বিষয় এবং যুক্তিযুক্ত লেখা লেখেন এবং আপলোড করেন আর ব্যবহারকারীরা সেখানে তাদের মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও সাম্প্রতিক কালে ব্লগ ফ্রিলান্স সাংবাদিকতার একটা মাধ্যম হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক ঘটনাসমূহ নিয়ে এক বা একাধিক ব্লগাররা এটি নিয়মিত আপডেট করেন। বেশিরভাগ ব্লগই কোন একটা নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ধারা বিবরণী বা খবর জানায়।”
যে কোন একজন লেখকের উপর হামলা কিংবা তাঁকে হত্যা করা অনেক বড় একটা অন্যায়। আর সে হামলা যদি হয় কোন একটা মুক্তচিন্তার বিশেষ দলের লেখকদের উপর, তখন এই অন্যায় আর ব্যক্তি পর্যায়ে থাকে না, সেটা দেশ এবং জাতির নিরাপত্তার ইস্যুতে পরিণত হয় এবং দেশের সরকার এবং বুদ্ধিজীবীদের প্রধান বিবেচনাধীন বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। সুতরাং এই ব্যাপারে অন্যান্য লেখক কিংবা সাংবাদিকদের নিরপেক্ষ স্থানে অবস্থানের কোন স্থান নেই। চুপ করে থেকে নিজেকে রক্ষা করতে চাইলেও, পারবেন না। কারণ জঙ্গিরা আপনার চুপ করে থাকাকেই আপনার দুর্বলতা হিসেবে ব্যবহার করবে এবং সময় মতো আপনাকেও হত্যা করতে দ্বিধা করবে না। একটু গভীরভাবে বিচার করলেই দেখবেন, খুব সুপরিকল্পিত প্যাটার্ণ করে আগাচ্ছে সন্ত্রাসীরা। এখন লেখকদের পাশাপাশি প্রকাশকদের উপর হামলা এবং হত্যা করা শুরু করেছে। ভবিষ্যতে বই ক্রেতাদের অনুসরণ করে তাদেরও হত্যার হুমকি দিচ্ছে। একবার ভাবুন এবং নিজেদের ভিতরের চোখে জঙ্গীদের ভিতরের পশুটাকে দেখার চেষ্টা করুণ। সময় হয়েছে হুঙ্কারের জবাবে গর্জন তোলার। তবে অবশ্যই তা রক্তাক্ত নয়। কলমের কালিতে সমাজের মানুষকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে। সঠিক ম্যাসেজ প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে।