কমলগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন প্রার্থীদের কৌশলী প্রচারনা
বিশ্বজিৎ রায়, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই সরব হয়ে উঠছে কমলগঞ্জ পৌর নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা। সম্ভাব্য প্রার্থীরা পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই নানামুখী কৌশলে প্রচারণা শুরু করেছে। সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা পৌর নাগরিকদের মন জয়ের চেষ্টায় তৎপর। আওয়ামী লীগ, বিএনপি”র একাধিক নেতার পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ও বসে নেই। নিমন্ত্রণ-দাওয়াত বাদ দিচ্ছেন না কেউ। প্রতিটি সামাজিক অনুষ্ঠানে ভিড় করেন প্রার্থীরা। পাশাপাশি সমর্থকদের দিয়ে ডিজিটাল পোস্টার, ব্যানার টানানো হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পেজ-গ্রুপ খুলে কৌশলী প্রচারণায় নেমেছেন প্রায় সবাই। শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে অনেকে তাদের প্রার্থিতা হওয়ার বিষয়টি সাধারণ ভোটারের সামনে তুলে ধরতে চাইছেন। অনেক ব্যানার ও বিলবোর্ড টাঙ্গিয়ে পৌরবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে দোয়া কামনা করেছেন। এদিকে দেশে প্রথমবারের মতো স্থানীয় নির্বাচন দলীয় মনোনয়ন ও প্রতীকে আয়োজনের আইন পাস হওয়ায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের ও নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। অনেক প্রার্থী এ নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়েছেন। আবার অনেক প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আশায় নিজ নিজ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে লবিং শুরু করেছেন। শীর্ষ নেতাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন বলে ও নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। এবার দলীয় প্রতীকে প্রার্থী মনোনয়ন হওয়াই বিদ্রোহী হওয়ার সুযোগ না থাকায় সব দলের শীর্ষ নেতারা রয়েছেন ফুরফুরে মেজাজে। নেতাদের মতে, এবার তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারের মন জয় করতে মাঠে নেমে পড়েছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। তারা তৃণমূলের কার্যক্রম ঠিক রেখে হাইলেভেলে জোর তদবির ও লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশি প্রার্থীর মধ্যে চমক সৃষ্টি করেছেন তরুন সমাজসেবক যুবনেতা জুয়েল আহমদ। পৌর এলাকার এমন কোন সামাজিক অনুষ্টান নেই যে স্ব-শরীরে উপস্থিত হন না।
এবার কমলগঞ্জ পৌরসভায় মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দিতা করতে নির্বাচনী মাঠে ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে ৩ জন এবং বিএনপি থেকে ৩ জন প্রার্থীতা ঘোষনা করেছেন। এদিকে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার সরকারি সিদ্ধান্তে মাঠ পর্যায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থকরা বিষয়টিকে স্বাগত জানালেও বিএনপি নেতাকর্মীরা কেন্দ্রের সঙ্গে সুর মিলিয়ে এর বিরোধিতা করছেন। অনেকেই মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত শুরুতে দলীয় প্রার্থী নির্বাচনে বিশৃংখলা দেখা দেবে। বৃদ্ধি পাবে মনোনয়ন বাণিজ্যের। তারপরও বসে নেই উভয় দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পেতে নিজ নিজ দলের শীর্ষ পর্যায়ে লবিং শুরু করেছেন। এ নিয়ে পৌরবাসীর মধ্যে চলছে নানা হিসাব নিকাস। দল থেকে কাকে সমর্থন দেয়া হবে তা নিয়ে তৈরী হয়েছে এক ধরণের অনিশ্চয়তা। কমলগঞ্জ পৌরসভা ৩০টি গ্রামের সম্মনয়ে ৯টি ওয়ার্ডে বিভক্ত। মোট ভোটার সংখ্যা ১১হাজার ৬শ ৬৮টি। মেয়র পদে লড়াই করতে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র ও পৌর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি আবু ইব্রাহিম জমসেদ, কমলগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন সম্পাদক ও সাপ্তাহিক কমলগঞ্জের কাগজ পত্রিকার প্রকাশক মো. জুয়েল আহমেদ,উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আছলম ইকবাল মিলন,সাবেক মেয়র ও সাবেক উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক হাছিন আফরোজ চৌধুরী,উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন ,সমাজ সেবক জাকারিয়া হাবিব বিপ্লব, ও, পৌর নাগরিক কমিটির আহবায়ক প্রভাষক নজরুল ইসলাম নির্বাচনী মাঠে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান মেয়র আবু ইব্রাহিম জমসেদ উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে আবার তাকে মেয়র নির্বাচিত করতে আহবান করছেন। নতুন প্রার্থীদের মধ্যে যুবনেতা জুয়েল আহমেদ মাঠে চমক সৃষ্টি করছেন। তিনি এখন থেকে আওয়ামীলীগ তৃনমুল কর্মীদের সাথে ঘরো বৈঠক করে তাকে সহযোগীতা হাত বাড়িয়ে দেয়ার প্রত্যাশা করছেন এবং প্রতিটি ওয়ার্ডের জোরোসোরে গন সংযোগ করছেন। তার নামটি বেশি উচ্চারিত হচ্ছে মাঠে। দলীয় প্রতিকে নির্বাচন হওয়ায় উপজেলা আওয়ামীলীগের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের কাছে মনোনায়ন পেতে লবিং অব্যাহত রেখেন। দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী মোঃ জুয়েল আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা, তৃণমূল কর্মী, সুশীল সমাজ ও সাধারণ জনগণ আমার পাশে আছে। তাদের মতের প্রতি সম্মান রেখেই নির্বাচন করার ইচ্ছা রয়েছে। প্রত্যাশা করি আমার যোগ্যতা ও অবস্থা বিবেচনা করে দলীয় সমর্থন পাব। পর দিকে আওয়ামীলীগের আরো দুই মনোয়ন প্রত্যাশি নেতা মাঠে জোরোসোরে না প্রচার চালালেও দলীয় হাইকমান্ডের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। অপর প্রার্থীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে নির্বাচনকে ঘিরে পৌরসভার বিভিন্ন জনসাধারণের মধ্যে নির্বাচনী আমেজ তৈরি হয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরাও পৌর এলাকার পাড়া-মহল্লায়,সভা ও উঠান বৈঠক করে বেড়াচ্ছেন। বাজারের চায়ের দোকান ও গ্রামের দোকান সমুহে এখনই গভীর রাত্র পর্যন্ত কে প্রার্থী হচ্ছেন,কে প্রার্র্থী হলে ভালো হবে তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করছেন। আওয়ামী লীগের হয়ে জোরেসোরেই মাঠে নেমেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশিরা মাঠে নামলেও দলীয় সিন্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন।তবে প্রার্থী নির্ধারণে উপজেলা নেতা ও তৃণমূলের সমর্থনের অপেক্ষা মাত্র