মেয়াদোত্তীর্ন গোলাপগঞ্জ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা : কার্যক্রম স্থবির
গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যনির্বাহী কমিটি মেয়াদোত্তীর্ন হওয়ার প্রায় ২বছর অতিবাহিত হলেও নির্বাচন না হওয়ায় কার্যক্রমে স্থবিরতা চলে এসেছে । বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৩ সালের শুরুর দিকে। ক্রীড়ামোদীদের আবেদন সত্ত্বেও নির্বাচনে কালক্ষেপন করছে স্থানীয় প্রশাসন ফলে ব্যাহত হচ্ছে ক্রীড়া উন্নয়ন কার্যক্রম। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক প্রনীত স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার গঠনতন্ত্রের ১১নং অনুচ্ছেদের ধারা( খ) অনুযায়ী কার্যনির্বাহী পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার নূন্যতম ১ মাস পূর্বে নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচ্যসূচীর আলোকে নির্বাচনী সভা আহবান করিয়া তফসীল ঘোষনা করতে হবে। পদাদিকার বলে ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সাধারন সম্পাদক সহ অন্যান্য পদে ( উপজেলার বিভিন্ন সরকারী ,বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের মনোনিত প্রতিনিধি ) সংস্থার সদস্যদের মধ্য থেকে নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিতরা স্থান পান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্রীড়া সংস্থার বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির দ্বায়ীত্বশীল এক সদস্য এ প্রতিবেদককে জানান , গত মেয়াদে প্রায় ৯বছর থেকে সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়ীত্ব পালন করছেন গোলাপগঞ্জের ব্যবসায়ী শামীম আহমদ রাসেল। ধন্যাঢ্য ও প্রভাবশালী ব্যাক্তি হওয়ায় এই পদে এতদিন আর কেউ আগ্রহ দেখায়নি ফলে একপ্রকার গুজামিল দিয়ে ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম চলছে। বর্তমান কমিটির কোষাধক্ষ্য ও গোলাপগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক সালেহ আহমদ , গোলাপগঞ্জ প্রেসকাব সভাপতি শহীদুর রহমান সুহেদ , ‘আমরা গোলাপগঞ্জবাসী ’ নামক সামজিক সংগঠনের সভাপতি এস এ মালেক , উপজেলার বাঘা ইউনিয়নের ক্রীড়ামোদী ইকবাল আহমদ , ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ক্রীড়ামোদী মুজিবুর রহমান মুজিব , সাবেক ক্রিকেটার ও ক্রীড়া সংগঠক মুছা আহমদ চৌধুরী ছায়েম জানান , উপজেলায় নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টি ও খেলাধুলা প্রসারের স্বার্থে ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম গতিশীল হওয়া প্রয়োজন। নির্বাচন হলে নতুন নেতৃত্ব আসবে পাশাপাশি সংস্থার কার্যক্রমে গতি আসবে। এই ক্রীড়া সংস্থার প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে টানা ৩বার নির্বাচিত হয়ে প্রায় ৯বছর সাধারন সম্পাদকের দ্বায়ীত্ব পালন করেন উপজেলার ঢাকাদক্ষিন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বশর ছদরউলা চৌধুরী। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ‘ আমার সময়ে ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম সচল ও নিয়মিত ছিল কিন্তু বর্তমানে দীর্ঘদিন থেকে স্বার্থনেষী মহল ক্রীড়া সংস্থাকে অকার্যকর করে রেখেছে। ’ তিনি আরো বলেন গোলাপগঞ্জ উপজেলায় স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য ধারাবহর এলাকায় প্রায় ৩শত৫০শতক ভুমি জনৈক ব্যাক্তি দান করলেও তাতে স্টেডিয়াম নির্মাণে কোন ভুমিকা নিচ্ছেনা উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা। অভিলম্বে নির্বাচন দিয়ে যোগ্য ও ক্রীড়ামোদী ব্যক্তিদের নিকট দ্বায়ীত্ব হস্তানান্তরের দাবী জানান তিনি। ২০১০ সালের সর্বশেষ ভোটার তালিকা অনুযায়ী গোলাপগঞ্জ ক্রীড়া সংস্থার মোট ভোটার সদস্য ৯৮জন। অভিযোগ রয়েছে এই তালিকায় অনেক ক্রীড়ামোদী ও ক্রীড়া সংগঠকের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। ভোটার তালিকায় উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় / উচ্চবিদ্যালয় / কলেজ / মাদ্রসার অধ্যক্ষ / প্রধান শিক্ষক , ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান , বিভিন্ন ক্রীড়া কাবের সভাপতি বা মনোনিত প্রতিনিধি রয়েছেন। এদিকে গত ২০ জানুয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ক্রীড়ামোদিদের পক্ষে মেয়াদোত্তীর্ন ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন দেওয়ার জন্য একটি আবেদন দিলেও আজ পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেয়নি উপজেলা প্রশাসন। এব্যাপারে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে গোলাপগঞ্জ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান জানান , “ একটি সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন দিতে হয় , নির্বাচনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আশা করছি নির্বাচন হবে। ”