জাতিসংঘে ভাষণ দিলো কুলাউড়ার মনি বেগম
বিশ্বজিৎ রায়, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি : জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ‘সেভ দ্যা চিলড্রেন’ সেমিনারে বক্তব্য দিলেন বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার একজন রিক্সাচালকের মেয়ে মনি বেগম। ২৬ সেপ্টেম্বর শনিবার ‘সেভ দ্যা চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ’ এর ফেসবুক পেজে মনি বেগমের ভাষণ দেয়ার বেশ ক’টি ছবি প্রকাশ করা হয়। মনি বেগম জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাল্য বিবাহ রোধ সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন। মনি বেগম তিন বছর থেকে বাল্যবিবাহের ভয়াবহতা এবং মা ও শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন।
মনি নিজ দেশের এমনকি সারা বিশ্বের হয়ে শিশু বিবাহ রোধে ‘এ্যাডভোকেসি’ করেন। এ সম্মেলনে তার শ্লোাগান হয় ‘তাকে বড় হতে দাও’। ব্যাখ্যা হিসেবে মনি বেগম জানায়, এর মানে হলো প্রত্যেকের বড় হওয়ার জন্য মৌলিক চাহিদা পুরণ, সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা যার মধ্যে নিজেকে শিক্ষিত করবে এবং দেশের জন্য কাজ করবে।
উল্লেখ্য, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার সুলতানপুর বালিকা বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী মনি বেগম ১৯ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ১০টায় মনি বেগম জাতিসংঘের উদ্দেশ্য বাংলাদেশ থেকে রওনা দেয়। মনি বেগম জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ (ইউএনজিএ) ৭০ এ যোগদান করে। সেখানে ২১ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবস্থান করবে। ‘তাকে বড় হতে দাও’ এই শ্লোগানের উপর ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেন। এছাড়া তিনি জাতিসংঘ প্রতিনিধি, সুধিজন, বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তাসহ, জাতীয় ও আন-র্জাতিক বিশ্বের নানা গুণীজনের সাথে এবং বিশ্বের আরও ১৯ জন শিশু প্রতিনিধির সাথে সাক্ষাৎ করবেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মনি বেগম স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তিতে সহজগম্যতা এবং মা ও শিশুদের নাগালের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদেরকে পৌছানোর চাহিদা উপস্থাপন করবেন। ৫ বছরের নিচের শিশু মৃত্যু কমানোর বিষয়ে এবং শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ও বন্ধের বিষয়েও কথা বলবেন। জাতিসংঘের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার আগে মনি বেগম বলেন, যারা কিশোরী বয়সে বিয়ে করেছে, তাদের শিক্ষিত করার জন্য উৎসাহিত করা। কারণ তারাই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গড়বে। তারা তাদের সমাজ ও পরিবারকে সমঅধিকার প্রাপ্তিতে সহায়তা করবে। বাংলাদেশের প্রতিটি কন্যাশিশু বড় হওয়ার জন্য সমসুযোগ পাবে যাতে সমাজ ও দেশের কাজে লাগতে পারে। বেসরকারি সংস্থা ঢাকা আহসানিয়া মিশনের এভরিওয়ান ক্যাম্পেইনের প্রকল্প সমন্বয়কারী মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, সে সেভ দ্যা চিলন্ডেনের অর্থায়নে আহসানিয়া মিশন পরিচালিত এভরিওয়ান ক্যাম্পেইন প্রোগ্রামের আওতায় বাংলাদেশের একমাত্র শিক্ষার্থী হিসেবে যোগদানের জন্য চিঠি পায়। তবে এর সাথে প্রধানমন্ত্রীর টিমের কোন সম্পৃক্ততা নেই। সে পৃথকভাবে আহসানিয়া মিশনের তত্ত্বাবধানে নিউইয়কে গিয়েছে।