বিয়ানীবাজারে দু’বাসের সংঘর্ষ : আহত অর্ধশতাধিক, তিন ঘন্টা পর চালক উদ্ধার
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ বিয়ানীবাজারে যাত্রীবাহি দু’বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে এতে বাসের চালকসহ প্রায় অর্ধশতাধিক যাত্রী আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার ৩ ঘন্টা পর দুপুর ১টার দিকে বাস কেটে মারাত্মক আহত চালককে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চালকের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে।
সোমবার সকাল ১০ টায় সিলেট-বিয়ানীবাজার-বারইগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের বিয়ানীবাজার আদর্শ মহিলা কলেজ সংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বিয়ানীবাজার থেকে ছেড়ে যাওয়া ঢাকাগামী বাস ‘এনা’র (ঢাকা মেট্টো ব ১৪-৬৪১২) সঙ্গে বিপরীত থেকে আসা সিলেটগামী যাত্রীবাহি বাসের (সিলেট জ ১১-০৪৮১) মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এ সংঘর্ষে সিলেটগামী বাসের সামনের অংশ ভেতরের দিকে ধেবে যায়। এতে ওই বাসের চালক মুজম্মিল আলী (৫১) নিজ আসনে স্টিয়ারিং চাপা পড়ে আটকা পড়েন। দুর্ঘটনার পর ঢাকাগামী এনার চালক ও সহযোগি (হেল্পার) পালিয়েছেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ, বিয়ানীবাজার ফায়ার ও ডিফেন্স সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন। এদিকে আহত বাস চালককে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয় ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বশীলরা। আহত চালক যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন দেখে তার সহকর্মী চালকরা প্রথমে দড়ি দিয়ে বাসের সামনে অংশ সরানোর চেষ্টা করেন। এতে ব্যর্থ হলে বিয়ানীবাজার পৌরশহরের একটি ওয়ার্কসপ থেকে ইলেক্ট্রিক কাটার যন্ত্র নিয়ে বাসের সামনের অংশ কেটে চালক মুজম্মিলকে প্রায় তিন ঘন্টা পর উদ্ধার করেন। উদ্ধার কাজে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সাথে স্থানীয় জনতারাও অংশ নেন। চালকের কোমর ও একটি পা ভেঙ্গে গেছে। এছাড়া তার হাত ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ মারাত্মক জখম হয়েছে। চালক মুজম্মিল আলীর বাড়ি বিয়ানীবাজার উপজেলার বৈরাগীবাজারের খশির গ্রামে।
বিয়ানীবাজার ফায়ার সার্ভিস ইউনিটের মহরম আলী বলেন, বাসের সামনের অংশ কেটে চালকে উদ্ধার করার প্রয়োজন দেখা দেয়। এ কাজে ব্যবহৃত কাটার যন্ত্রটি আমাদের কাছে নেই। সিলেট থেকে যন্ত্রটি নিয়ে একটি গাড়ি রওয়ানা হয়েছে। গাড়ি পৌছার পর চালককে উদ্ধার করার উদ্যোগ নিই।
এ দুর্ঘটনায় চালক মুজম্মিল আলী ছাড়াও গুরুতর আহত লাউতা ইউনিয়নের বাহাদুরপুর এলাকার আবুল কাসেম (২০) কে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নুনু মিয়া (৪১), আবুল কাশেম (২১), জাহেদ আহমদ (২৪), সিরাজ উদ্দিন (৭০), এমাদ আাহমদ (২৬), নাহিদ আহমদ (২০), জামাল উদ্দিন (৪০), হানিফ আহমদ (৩০), কামিল উদ্দিন (১৯), সুমন আহমদ (১৯), সাহেদ আহমদ (২০), আবদুর রহমান (৬৫) নয়ন হোসেন (২৩), অলিউর রহমান (২৫) শাহজাহান আলী (৩২) ছালেহ আহমদ (৩৫)সহ প্রায় অর্ধতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের হাত-পা, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম রয়েছে।
বিয়ানীবাজার থানার এস.আই জসিম উদ্দিন বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কাটার যন্ত্র না থাকায় স্থানীয় জনতার সাহায্যে বাসের সামনের অংশ কেটে চালককে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে এবং দুর্ঘটনা কবলিত বাস দুটিকে জব্দ করা হয়েছে।