যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের শিশু নয়, সে সাতক্ষীরার ম্যাজিস্ট্রেটের কাজের মেয়ে!
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ ছবিটি দেখে অনেকেরই মনে হবে এটি কোনো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অভুক্ত শিশুর। যেখানে চলছে চরম খাদ্য সঙ্কট। নেই চিকিৎসাসহ ন্যূনতম মৌলিক অধিকারের বালাই। কিন্তু না, সে কোনো যুদ্ধশিশু নয়, এক বিচারকের বাসার কাজের মেয়ে। যাকে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন করা হয়েছে। খাবার না দিয়ে শরীরের এ অবস্থা করেছে ওই বাড়ির লোকজন।
সাতক্ষীরা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল ইসলামের বাড়ির কাজের এ মেয়েটির নাম বিথী (১০)। সে ঝিনাইদাহ জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার বড় আসিয়ান গ্রামের রসুল আলীর মেয়ে।
ম্যাজিস্ট্রেটের বাড়িতে শিশু বিথীকে অভুক্ত রেখে নানাভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরে- এমন একটি গোপন সংবাদ আসে পুলিশের কাছে। পরে অভিযান চালিয়ে বুধবার বিকেলে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। অভিযানে গেলে প্রথমে ম্যাজিস্ট্রেট তার বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি পুলিশকে। উদ্ধারের পর বিথীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ার সাঈদ বাংলামেইলকে জানান, শিশুটি দীর্ঘদিন ধরে ওই ম্যাজিস্ট্রেটের বাড়ি থাকে। বেশ কিছুদিন ধরে তার ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতে থাকে ম্যাজিস্টেটের পরিবারের সদস্যরা। তাকে ঠিকমত খেতেও দিত না। নির্যাতনের ফলে তার শরীরে বড় বড় ঘাঁ সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি স্থানীয়রা জানতে পেরে পুলিশ খরব দিলে সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ার সাঈদের নেতৃত্বে বুধবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালাতে যায় পুলিশ। কিন্তু পুলিশকে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে দেননি ম্যাজিস্ট্রেট।
এ অবস্থায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে খরব দেয়া হয়। পরে তিনি আসার পর তার নেতৃত্বে পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটের বাড়ি থেকে শিশু বিথীকে নিস্তেজ অবস্থায় উদ্ধার করে। বর্তমানে বিথী চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।
তবে এ ব্যাপারে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল ইসলাম বলেন, ‘তার ওপর কোনো প্রকার নির্যাতন করা হয়নি। সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’