সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক নায়ক রাজ রাজ্জাক
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ ঢাকাই ছবির সোনালী দিনের বাদশ ছিলেন তিনি। রাজ করেছেন ঢাকাই সিনেমার রূপালি পর্দায়। এজন্যই সকলের কাছে তিনি রাজ্জাক থেকে নায়ক রাজ নামেই সমাদৃত। তাঁর অসুস্থতা ভক্ত-দর্শক-শুভাকাঙ্খিদের মনে বেদনা সঞ্চারিত করেছে। দেশব্যাপী সবাই তার জন্যে প্রার্থনা করছেন, তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরে আসুন। রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি আছেন নায়করাজ রাজ্জাক। হাসপাতালের সামনে ভক্তদের ভিড়, প্রতি মুহুর্তের উৎকণ্ঠা, ভালো আছেন তো প্রিয় নায়ক? শোবিজ অঙ্গনেও থমথমে অবস্থা বিরাজমান। সকলের মনে এখন একটাই প্রার্থনা, ‘সুস্থ হয়ে সকলের সকলের মাঝে ফিরে আসুক নায়ক রাজ’।
কবরী
রাজ্জাকের সঙ্গে অনেক ছবিতে আমি অভিনয় করেছি। কখনো কখনো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে মনোমানিল্যও হতো। আবার আমরা নিজেদের মতো করে সমাধান করে নিতাম। তার সঙ্গে আমার স্মৃতি বলে শেষ করা যাবে না। হঠাৎ তার এ অসুস্থতার খবর আমাকে বেশ চমকে দিয়েছিলো। কারণ তার শরীরতো এতা বেশী খারাপ না। তার জন্য দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। সুস্থ হয়ে আবার চলচ্চিত্রে ফিরে আসুক আমাদের সবার প্রিয় নায়ক রাজ।
মিশা সওদাগর
রাজ্জাক ভাইতো আমাদের কাছে সবসময় একটি দেয়াল বা স্তম্ভের মত।শুধু তাই নয় তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের একজন স্তম্ভ। যখন থেকে শুনেছি তখন থেকেই তার জন্যে মনে প্রানে দোয়া করছি তিনি খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসুক। এছাড়া কিছু বিবেক বুদ্ধিহীন লোক না জেনে না শুনে তার মৃত্যুর গুজব ছড়াচ্ছে যা খুবই দুখঃজনক।
আমিন খান
রাজ্জাক ভাই তার অভিনয় দক্ষতা দিয়ে দর্শকদের মধ্যে যেভাবে জায়গা করে নিয়েছিলেন তা অন্য আর কেউ করতে পারে নি। শুধু অভিনয় নয়, তার ব্যাক্তিত্বসহ সবকিছুতেই অন্যরকম একটি বিষয় লক্ষ করা যায়। তার অসুস্থতা খবর শুনে আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি তাকে যেন দ্রুত সুস্থ করে দেয়। বাংলা চলচ্চিত্রে তার অবদান অনস্বীকার্য। তিনি আমাদের প্রেরণা।
পপি
নায়কতো অনেকেই হয়। তিনি আমাদের নায়কদের রাজ। আমাদের চলচ্চিত্রের পিতার মত। তার যে অভিনয় বা কর্মদক্ষতা ছিলো তা তো অন্য কারও মধ্যে কখনও লক্ষ করা যায় নি। তার অসুস্থতার খবর শোনার পর থেকেই আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি তাকে আল্লাহ দ্রুত সুস্থ করে দেয়। আবার চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয়ে ফিরতে পারেন তিনি।
ফেরদৌস
আমি তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। রাজ্জাক ভাইতো বাংলা চলচ্চিত্রের পিতা। আমার অভিনয়ের আদর্শ। যার অভিনয়ে আমাকে অভিনয়ে আসতে আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। আমাকে অনেক স্নেহ ও ভালোবাসতেন। তিনি চলচ্চিত্রের জন্য যা দিয়ে গিয়েছেন তা কখনো পূরণ হওয়ার মত নয়। রাজ্জাক ভাই সুস্থ হয়ে আবার অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসুক।
চঞ্চল চৌধুরী
বাংলা চলচ্চিত্রে অনেক নায়কই আছেন। কিন্তু তার মত নায়ক রাজতো নেই। তিনি একজনই। তারা নামটি অনেক বড় একটি বিষয়। সবাইতো পৃথিবিতে চিরদিন বেঁচে থাকবে না। কিন্তু এত অল্প সময়ের ব্যাবধানে তার এ ধরনের অসুস্থতা মেনে নেওয়া যায় না। তার আরোগ্য কামনা করছি। বাংলা সিনেমার প্রান পুরুষ এ অভিনেতা দীর্ঘদিন আমাদের মাঝে বেঁচে থাকুক।
আরেফিন শুভ
আমার কাছে মনে হয় প্রত্যেকটা বিষয়ের একটি স্তম্ভ থাকে। রাজ্জাক ভাই আমাদের চলচ্চিত্রের একজন স্তম্ভ। দ্রুত সুস্থ হয়ে তিনি আবার অভিনয়ে ফিরতে পারেন এ দোয়াই করছি। যার অভিনয় দেখে আমরা মন্ত্র মুগ্ধের মত তাকিয়ে থাকতাম। যার অভিনয় আমাকে চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। তিনি আজ অসুস্থ। আল্লাহ যেন তাকে দ্রুত সুস্থ করে দেয়।
আনিসুর রহমান মিলন
গতকাল গুজব ছড়িয়েছিলো, রাজ্জাক ভাই আর নেই। একথা শোনার পরে মনে হয়েছিলো নায়ক রাজকে হারিয়ে ফেললাম। এরপর তার ছেলের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম তিনি সুস্থ আছেন। একটা কথা আছে না, বারবার মৃত্যুর খবর মানুষের হায়াত বাড়ে। আমার কাছে মনে তার ক্ষেত্রে তাই হবে। রাজ্জাক ভাইয়ের মত একজন মানুষ চলচ্চিত্রের জন্য অনেক কিছু দিয়ে গিয়েছেন, আরও অনেক কিছু দেয়ার আছে।
উল্লেখ্য, রাজ্জাকের জন্ম ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়। স্কুলে মঞ্চ নাটকের মধ্য দিয়ে অভিনয়ে তার যাত্রা শুরু।এরপর ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশে পাড়ি জমানোর পর বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে টেলিভিশনে অভিনয় শুরু করেন। যদিও তার টান ছিল চলচ্চিত্রের দিকে। ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগর লেন’ চলচ্চিত্রে ছোট একটি চরিত্রে রূপায়নের মধ্য দিয়ে নিজের অভিনয়ের দক্ষতার প্রমাণ দেন। এরপর তিনি ৩০০টি’র বেশি বাংলা ও উর্দু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। অভিনয় ও প্রযোজনার পাশাপাশি ১৬টির বেশি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন রাজ্জাক।চলচ্চিত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৪ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন রাজ্জাক। চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য তিন বছর আগে তাকে আজীবন সম্মাননাও দেয় বাংলাদেশ সরকার।