নদীর ভাঙ্গনে বদলে যাচ্ছে জকিগঞ্জের মানচিত্র
জকিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতাঃ সীমান্তবর্তি উপজেলা জকিগঞ্জ কুশিয়ারার নদীর করাল গ্রাসে এখন পড়েছে অস্তিত্ব সংকটে। নদী তীরবর্তী সাধারণ মানুষ ভাঙ্গনের আতংকের মধ্যে জীবন যাপন করছেন। কুশিয়ারা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে জকিগঞ্জের মানচিত্র বদলে যাচ্ছে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে জকিগঞ্জ কয়েকটি নতুন দ্বীপে রুপান্তরিত হয়ে পড়বে। তখন এসব দ্বীপের অবস্থান নিয়ে দেখা দিবে নানা জটিলতা। কুশিয়ারা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনের ফলে প্রতিনিয়ত গড়ে উঠা বড় বড় চর এখন চলে যাচ্ছে ভারতের নিয়ন্ত্রনে। নদী ভাঙ্গন রোধে জকিগঞ্জবাসী অব্যাহত আন্দোলন সংগ্রাম করছেন।
জকিগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশের মানচিত্র যেমন ছোট হয়ে আসছে। ফলে কমে যাচ্ছে জকিগঞ্জের আয়তন ও সীমানা। জানা যায়, ১৯৭৮ সালে ভারত সরকার জকিগঞ্জ উপজেলা সদরের পার্শ্বে বড় একটি গ্রোয়েন নির্মাণ করতে চাইলে জকিগঞ্জের কৃতি সন্তান মরহুম এম.এ.হকের বলিষ্ট পদক্ষেপের ফলে ভারত সরকার গ্রোয়েন নির্মাণ করতে পারেনি।
১৯৭৭-৭৮ সালে এম এ হকের আপ্রান চেষ্টায় নদী ভাঙ্গন রোধ কার্যক্রম শুরু হয়। সে সময়ে ভুইয়ারমুড়া, হায়দ্রাবন্ধ জকিগঞ্জ থানা সদরের উভয় পার্শ্ব ছয়লেন সহ কিছু স্থানে ভাঙ্গন রোধে পাথর ফেলা হয়। কিন্তু নদী ভাঙ্গন রোধে বাস্তবমুখী কোন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। সুরমা-কুশিয়ারা নদীর উৎস মূখ থেকে প্রায় ২৬ মাইল গজুকাটা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের ভিতরে কুশিয়ারা সদী অসংখ্যক মোড় নিয়েছে। এ মোড় গুলোর মধ্যে রারাই, মানিকপুর, মাইজকান্দি, ছয়লেন, হায়দ্রাবাদ, ভুইয়ারমুড়া, সুপ্রাকান্দি পীরনগর পর্যন্ত ৩টি স্থানে বড় ধরনের ভাঙ্গনের আশংকা রয়েছে।
কুশিয়ারা অব্যাহত ভাঙ্গনের ফলে জকিগঞ্জ বাজার সংলগ্ন ছয়লেন গ্রামের হাজী কালা মিয়ার বাড়ী বিলীন হতে চলেছে। ছয়লেনের এ ভাঙ্গন রোধে ব্যর্থ হলে জকিগঞ্জ উপজেলা সদর বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন এলাকাবাসী।
জকিগঞ্জ সীমান্তিক নদী কুশিয়ারার অব্যাহত ভাঙ্গনে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষের বসতঘর, মসজিদ, মন্দির ফসলের মাঠসহ কোটি কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ নদীতে বিলীন হচ্ছে। অব্যাহত ভাঙ্গনে হাজার হাজার গৃহহীন মানুষ যাযাবরের মতো জীবন যাপন করছে। কুশিয়ারা নদীর সীমান্ত ছয়লেনসহ অন্যান্য স্থানগুলোর ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্ট বিভাগ এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন জকিগঞ্জ উপজেলাবাসী।