তিন এসআইয়ের বিরুদ্ধে পরোয়ানা
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ পুলিশি হেফাজতে জনি নামে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগের মামলায় পুলিশের তিন এসআইসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। রবিবার ওই আদালতের বিচারক মো. কামরুল ইসলাম মোল্লা এই পরোয়ানা জারি করেন।
যাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি হয়েছে তারা হলেন, পল্লবী থানার এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদ, এসআই রাশেদুল ইসলাম ও এসআই কামরুজ্জামান মিন্টু এবং পুলিশের সোর্স রাশেদ ও সুমন। একই সঙ্গে বিচারক পল্লবী থানা ওসি জিয়াউর রহমান, এসআই আব্দুল বাতেন, শোভন কুমার সাহা, কনস্টেবল নজরুলকে অব্যাহতি দেন।
ওই আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শাহ আলম তালুকদার বলেন, পল্লবী থানার ওসি জিয়াউর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু বিচার রিভাগীয় তদন্তে ৫ জন অভিযুক্ত হয়। এদের মধ্যে এজাহারের চারজন এবং এজাহারের বাইরের একজন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ওসি জিয়াউর রহমান, এসআই আব্দুল বাতেন, শোভন কুমার সাহা, কনস্টেবল নজরুলকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন করে মারার অভিযোগে ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। নিহতের ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
ওইদিন আদালত মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ হোসেন বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
মামলার অভিযোগে বলা, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে পল¬বী থানার ইরানি ক্যাম্পে জনৈক বিল্লালের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান ছিল। নিহত জনি, তার ভাই মামলার বাদী রকিসহ অন্যান্য সাক্ষীরা সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
রাত ২টার দিকে পুলিশের সোর্স এ মামলার ৭ নম্বর আসামি সুমন মদ খেয়ে স্টেজে উঠে মেয়েদের উত্যক্ত করছিলেন। জনি তাকে প্রথমে স্টেজ থেকে নামিয়ে দেন। কিন্তু দ্বিতীয়বার সুমন একই কাজ করলে সুমনের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জনি সুমনকে থাপ্পড় দিলে তিনি আধা ঘণ্টা পর এসআই জাহিদসহ ২৫/২৬ জন পুলিশ নিয়ে বিয়ে বাড়িতে এসে ভাঙচুর করে নিহত জনি, রকিসহ বেশ কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যান।
এরপর এসআই জাহিদসহ অপর আসামিরা তাদের পল¬বী থানা হাজতে হকিস্টিক ও ক্রিকেটের স্ট্যাম্প দিয়ে বেদম প্রহার করেন। জাহিদ জনির বুকের ওপর চড়ে লাফালাফি করেন। জনি এ সময় একটু পানি খেতে চাইলে জাহিদ তার মুখে থুথু ছুড়ে মারেন। নির্যাতনে মামলার বাদী রকি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তার বড় ভাই জনিকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে ইরানি ক্যাম্প ও রহমত ক্যাম্পের মধ্যে মারামারির মিথ্যা কাহিনী দেখিয়ে জনি নিহত হয় বলে দেখানো হয়।
উল্লেখ্য, ঝুট ব্যবসায়ী সুজনকে পুলিশ হেফাজতে একইভাবে মৃত্যুর ঘটনার আরেক মামলায়ও আসামি এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদ বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।