বাজেটে সংবিধান পরিপন্থি সুবিধা থাকে
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সংবিধান পরিপন্থি হওয়া সত্ত্বেও প্রতি বাজেটেই কালো টাকা সাদা করার বিধান রাখা হয়। এর মাধ্যমে রাষ্ট্রই দুর্নীতিকে উৎসাহিত করছে বলে মন্তব্য করেছেন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
বুধবার দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত ‘রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও প্রশাসনিক সংস্কার, দুয়ে মিলে হতে পারে দুর্নীতির প্রতিকার’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রতিবছর বাজেটে কালো টাকা সাদা করার যে বিধান চালু করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণভাবে সংবিধান পরিপন্থি। এখন রাষ্ট্র বলছে তুমি চুরি করো, দুর্নীতি করো, তুমি যেভাবেই অর্জন করো, জরিমানা দিলেই তোমার অবৈধ টাকা বৈধ হয়ে যাবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থেকে যখন আমাদের বলা হয় যে- ক্ষমতায় থাকলে তো সম্পদ বাড়বেই। সংসদের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান থেকে যখন বলা হয়- ক্রেস্ট নয়, ক্যাশ আনতে হবে। অপরদিকে মুক্তিযুদ্ধে যাদের উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য যখন স্বর্ণের ক্রেস্ট দেয়া হয়, সেই ক্রেস্টে আবার দুর্নীতি হলে বলা হয়- সোনার কারবারে তো জালিয়াতি থাকবেই। তাহলে কিন্তু এদেশে দুর্নীতি হবেই। যা দমন করা সম্ভব হবে না।’
দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রে জাতীয় সংসদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যে সংসদ কার্যকারী হয় না, সংসদীয় কমিটি যেখানে কাজ করে না, সে দেশে কখনই দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না বা দমন করা সম্ভব হয় না। আর দুর্নীতি দমনের প্রধান কাজ হলো- যারা যেভাবেই দুর্নীতি করছেন তাদেরকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’
দুর্নীতি দমনের জন্য দুদকের পাশাপাশি অন্য সংস্থাগুলো যেমন: বিচারিক সংস্থা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোসহ মন্ত্রণালয়গুলোকে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে কাজ করতে হবে এবং পাশাপাশি দুদকের কাজের ব্যপারে সহযোগিতার সুযোগ সৃষ্টি করার পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যখন বলি দুর্নীতি বিরোধি সামাজিক আন্দোলনের কথা বলি, এটা শুধু তাত্ত্বিক কথাই না, এটা আমাদের রাজনৈতিক ভিত্তি আছে। যেমন: বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে…এসব ব্যাপারে বলেছিলেন। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো বঙ্গবন্ধু যে রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেছেন, সেই দলের ম্যানিফেস্টোতে এখনো পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো কথা দেখিনি।’