ভয়ার্ত ২ শিশুর মুখ : কাঁদছিলেন বাবাও
ইয়াহইয়া মারুফ : দুই শিশু। একজনের বয়স মাত্র ১৮ মাস। আরেকজন স্কুল পড়–য়া। দুই শিশুকে নিয়ে বাবা রওনা করেছিলেন। সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি মিরের ময়দানে পৌঁছা মাত্র ককটেল নিক্ষেপ। বাবার কোলে শিশুও আআন্ত। ভয়ার্ত শিশুর মুখ দেখে বাবাও চিৎকার করছিলেন। জানালেন, পুলিশ লাইনের পাশেই ছিলেন তারা। অবস্থা দেখে পাবলিক এসেছে উদ্ধারে। কিন্তু একজন পুলিশও এলো না। এভাবেই বলছিলেন গোবিন্দগঞ্জের মাহবুবুর রহমান লায়েক। গতকাল সিলেট নগরীর মীরের ময়দানে দুইশিশু আহত হন। গতকাল সোমবার বেলা ১টা ৫ মিনিটের সময় এ ঘটনা ঘটে। আহতদেরকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন- সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জের শেখপুর গ্রামের মাহবুবুর রহমান লায়েকের মেয়ে আফরিদা মাহবুব নাফিসা (৮), ছেলে হাফিজুর রহমান (১৮ মাস) ও সিএনজি অটোরিকশা চালক সৈয়দ আহমদ (৩৬)। সৈয়দ আহমদ বিশ্বনাথ উপজেলার মাহতাবপুর গ্রামের মৃত রবিউল ইসলামের ছেলে।
প্রত্যক্ষর্দশী ও আহতদের পরিবার সুত্রে জানা যায়, বেলা ১টার সময় নগরীর মীরের ময়দানস্থ ব্লু-বার্ড স্কুলের সামনে কয়েকজন মোটর সাইকেল আরোহী ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে এসময় (সিলেট থ-১৩-৩৩৮) অটেরিকশা আসলে চলন্ত অবন্থায় অবরোধহরতাল সমর্থকরা সিএনজি লক্ষ্য করে কয়েকটি ককটেল নিক্ষেপ করে, একটি সামনের গ্লাসে অপরটি ভিতরে। সামনের ককটেল গ্লাস ভেঙ্গে চালকের গলায় ও হাতে লাগে ও ভিতরের টি দুইশিশুর গায়ে লাগে। আহতদের সাথে সাথে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মাহবুবুর রহমান লায়েক সবুজ সিলেটকে জানান, কুলাউড়া যাওয়ার জন্য তিনি গোবিন্দগঞ্জ থেকে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে রওয়ানা হন। সিলেট রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত আসার জন্য তিনি একটি সিএনজি ভাড়া করেন।
অটোরিকশাটি সিলেট নগরীর মীরের ময়দানে আসার পর মোটর সাইকেল আরোহী কয়েকজন যুবক এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে চলন্ত অবস্থায় তাদের সিএনজিতে ককটেল হামলা চালায়। ককটেল বিস্ফোরণে তার দুই শিশুসন্তান ও চালক গুরুতর আহত হন। তাদেরকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিশু দু‘জনই ওসমানী হাসপাতালের ৫ম তলায় ২৩ নং ওয়ার্ডের শিশু সার্জারী ইউনিটের পি-৩ নং বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তবে চালক সৈয়দ আহমদের অবস্থা খুব গুরুতর, তার গলায় ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে। সে বর্তমানে ওসমানি হাসপাতালের ৪র্থ তলায় ৭নং ওয়ার্ডের ৮নং বেডে ভর্তি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সার্জারী ইউনিটের কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, ককটেলের বিস্ফোরিত অংশ তার গলা ডুকেছে অপরেশন করে তা বের করা হয়েছে। ডান হাতের কবজি ভেঙ্গে গেছে। ককটেল বিসাক্ত হওয়ায় সে আশঙ্কাজনক।
শিশুদের ব্যাপারে ওসমানী হাসপাতালের শিশু বিষয়ক সার্জন ডা. আফসার উদ্দিন বলেন, হাফিজুরের মাথায় আঘাত ও নাফিসার হাতে চিকিৎসা চলছে। তাদের অবস্থা ২৪ ঘন্টা পর্যবেক্ষনে রাখা হবে।
ঘটনার সত্যতা শিকার করে সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার রহমত উল্লাহ সবুজ সিলেটকে বলেন, এ ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে আজই একটি মামলা দায়ের করা হবে।