এই সরকারই শেষ সরকার নয়, নতুন সরকার আসবে
জিয়া ওয়ের উদ্যোগক্তা নান্টুর সংবাদ সম্মেলনে খোকা
নিউইয়র্ক থেকে এনা: বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষকের নামে শিকাগোতে অনারারী জিয়াউর রহমান ওয়ে নামকরণের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ও বর্তমান সরকারের অপপ্রচার ও মামলায় পরাজয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জিয়াউর রহমান ওয়ের উদ্যোগক্তা শাহ মোয়াজ্জেম নান্টু ও স্থানীয় বাংলাদেশী কম্যুনিটির আয়োজনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ঢাকার সাবেক মেয়র এবং বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট সাদেক হোসেন বলেছেন, ওয়াশিংটনের রাষ্ট্রদূত জিয়া উদ্দিনের বুঝা উচিত তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা। বাংলাদেশের মানুষের ট্যাক্সের অর্থেই তার চাকরি। তিনি কীভাবে দলীয় কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত হলেন। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিনের স্মরণ রাখা উচিত এই সরকারই শেষ সরকার নয়, আরো সরকার আসবে। সেই সময় এই সব কর্মকান্ডের জন্য তাকে জবাবদিহি করতে হবে। তিনি রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন এ সব কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ মামলা করে শুধু জিয়াউর রহমানকে অপমান করেনি সমস্ত মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লুর পরিচালনায় সাংবাদিক সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, শিকাগো জিয়াউর রহমান ওয়ের উদ্যোগক্তা শাহ মোজাম্মেলন নান্টু। সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র যুব দলের সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সহ সভাপতি আলহাজ্ব সোলায়মান ভুইয়া, মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী, আনোয়ার হোসেন, বিএনপি নেতা সরোয়ার খান বাবু, হেলাল উদ্দিন, জসীম ভূইয়া, জাসাসের কেন্ত্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গোলাম ফারুক শাহীন, তারেক ফোরামের সভাপতি অধ্যক্ষ নূরুল আমিন পলাশ, সাবেক সভাপতি রাফেল তালুকদার, বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি শামসুল ইসলাম মজনু, সৈয়দুল হক, নিউজার্সি বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব সৈয়দ জুবায়ের আলী, এডভোকেট কাইয়্যুম চৌধুরী, শিকাগো বিএনপি নেতা শাহ মোয়াজ্জেম নান্টু, শিকাগো বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডেইজি বেগম, দুদু মিয়া প্রমুখ।
সাংবাদিক সম্মেলনে ঢাকা সিটির সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকন শিকাগো বিএনপি নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা যারা বাংলাদেশে রাজনীতি করি তাদের মধ্যে দ্বিমত এবং দ্বন্দ্ব থাকতে পারে। কিন্তু এই দ্বন্দ্ব বা প্রতিহিংসা এই প্রবাসে কেন? তিনি বলেন, শিকাগো সিটি কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করেই শেখ মুজিবুর রহমানের নামে রাস্তা করেছিলো তখনতো যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কোন নেতা- কর্মীর তার প্রতিবাদ করেনি। কিন্তু যখনই স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্টের নামে রাস্তার নামকরণ করা হচ্ছে তখনই কেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ এবং সরকার এর বিরুদ্ধে মামলা করে? যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, সরকার এবং রাষ্ট্রদূত জিয়া উদ্দিনের ভূমিকা বা বিরোধীতা দেখে আমি অবাক হই। একজন রাষ্ট্রদূত কীভাবে এই ন্যাক্কারজনক কাজ করতে পারলেন। রাষ্ট্রদূত জিয়া উদ্দিনের বুঝা উচিত তিনি দলীয় নয় সরকারি একজন কর্মকর্তা। তার বেতন আসে বাংলাদেশের মানুষের ট্যাক্সের পয়সা। তার উচিত বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করা কোন দলের পক্ষে নয়। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিনকে স্মরণ করে দিতে চাই এই সরকারই শেষ সরকার নয়। বাংলাদেশে নতুন সরকার আসবে।
তিনি বলেন, আমি যখন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ছিলাম তখন আমারা ঢাকা শহরে অনেক মুক্তিযোদ্ধার নামে রাস্তার নামকরণ করেছি। সেখানে আমরা দল বিবেচনা করিনি। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের অনেক নেতার নামও রয়েছেন। এই নামকারণ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অনুমোদন নিয়ে করেছি। তিনি বলেন, সরকার জিয়াউর রহমান ওয়ে নিয়ে মামলা করে যে জঘন্য কাজ করেছে এর ফলে জিয়াউর রহমানকে নয় সমস্ত মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে, অবজ্ঞা করা হয়েছে, খাটো করা হয়েছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র খোকা বলেন, আমার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ডাক্তার বলবেন। তবে শারীরিকভাবে সুস্থ হলে অবশ্যই বাংলাদেশে যাবো। স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে এমন কোন আন্দোলন বা সংগ্রাম নেই যেখানে আমি অংশগ্রহণ করিনি। শরীর সুস্থ হলে বাংলাদেশে গিয়ে আবার সংগ্রামে অংশ নেন। মামলা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যতই মামলা দিক না কেন, তাতে আমি বিচলিত নই। তারা ভয় পাচ্ছে বলেই আমিসহ অন্যান্য নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করছে। তারা চায় না আমি দ্রুত বাংলাদেশে ফিরে যাই। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন কান্তিকাল চলছে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে।। শেখ মুজিব বড় রাজাকার তারেক রহমানের বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি প্রশ্নটি এড়িয়ে যান এবং প্রশ্নের উত্তরে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, তারেক রহমান নিজে কোন বক্তব্য দেননি, তিনি এ কে খন্দকার ও শারমিন আহমেদসহ অন্যান্য বই থেকে লেখাগুলো তুলে ধরেছেন। গাজিপুরে বেগম খালেদা জিয়ার সভাস্থলে ছাত্রলীগের পাল্টা সভা ডাকা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে খোকা বলেন, এটা করে আওয়ামী লীগ প্রমাণ করছে তারা বাকশালী সরকার। সাদেক হোসেন খোকার ডাক্তার জানান, তার ক্যান্সার চতুর্থ স্টেজে রয়েছে, তিনি কেমো থেরাপি দিচ্ছেন ম্যানহাটনের স্লোন ক্যাটারিং হাসপাতালে।
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, বাংলাদেশে ইতিহাস বিকৃতি শুরু করেছে এবং করছে আওয়ামী লীগ কিন্তু দোষা চাপানো হচ্ছে বিএনপির উপর। তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাবা শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার হিসাবে জিয়াউর রহমানকে পদক দিয়েছিলেন, এখন তিনি কীভাবে রাজাকার বা পাকিস্তানের দালাল হন। তিনি বলেন, বিএনপিই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দল। অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামী লীগের নেতারা কালকাতায় আরাম আয়েশ করেছিলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জিয়াউর রহমান ওয়ের উদ্যোগক্তা শাহ মোয়াজ্জেম নান্টু।