মুচিকে উচ্ছেদ করতে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর সুপারিশ
মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার মোকামবাজারে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বসবাসরত একজন মুচির বসতঘর উচ্ছেদ করতে এবার সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী স্থানীয় ইউএনওকে সুপারিশ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রশাসন কতৃক উচ্ছেদকৃত নিজের গড়া ভিঠেমাঠিতে গত ৪ দিন যাবৎ খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবন-যাপন করছে ভুমিহীন এ মুচি পরিবারটি। এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, উপজেলার মোকামবাজার ব্রীজের নিকটে রাজনগর-বালাগঞ্জ সড়কের পাশে ১৯৯৯ ইংরেজী থেকে সিতারাম নামে একটি ভুমিহীন মুচি পরিবার মাঠি ভরাট করে চন-বাঁশ দিয়ে ঘর তৈরি করে বসবাস করে আসছিল। জমির মালিকানা দাবীদার পার্শ্ববর্তী শীলবাড়ীর লোকজনই তাদেরকে মানবিক কারনে ঐ জমিটুকু মৌখিকভাবে দান করেছিল। নুন আনতে পানতা পুরায়, এমন অবস্থায় পরিবারটি দু,বেলা দু,মুঠো ভাতের জন্য গ্রামে-গঞ্জে পায়ে হেঁটে জুতা সেলাই সহ চামড়া সংগ্রহের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। রাস্তার পুর্বপাশে রয়েছে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি লন্ডন প্রবাসী মখদ্দছ আলী,র একটি একতলা মার্কেট। মুচি পরিবারটির বসতঘরের কারণে লন্ডনপ্রবাসী ঐ প্রভাবশালী ব্যক্তির মার্কেটের সৌন্দর্য্য রক্ষার অজুহাতে দীর্ঘদিন ধরে মুচি পরিবারটিকে সেখান থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র শুরু করে। মুচি পরিবারের বসতঘরটি সরকারি জমি বলে দাবী করে উচ্ছেদ করার জন্য গত বছর মখদ্দছ আলীর ভাতিজা স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা জবরুল ইসলাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে দরখাস্ত করে।উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সহকারী কমিশনার ভুমিকে দায়িত্ব দিলে জমির মালিকানা দাবীদার শীলবাড়ীর লোকজন তাদের স্বপক্ষে কাগজপত্র ভুমি অফিসে দাখিল করেন,এবং তদন্তের কাজ সেখানেই থেমে যায়। কিন্তু প্রভাবশালী মখদ্দছ আলী তার মার্কেটের সৌন্দর্য্য রক্ষার্থে মুচি পরিবারটিকে উচ্ছেদ করতে উঠে পড়ে লাগেন। একটি সুত্র জানায়, চালাকচতুর মখদ্দছ আলী বিএনপি সমর্থক হলেও মুচি পরিবারটিকে উচ্ছেদ করতে তিনি স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামীলিগ নেতার সাথে মোঠা অংকের রফা-দফা করেন। চুক্তি মোতাবেক আওয়ামীলিগ নেতারা সীতারাম এর বসত ঘরটি সরকারী ভুমিতে স্থানীয় বিএনপি নেতা কমরুদ্দিন মেম্বার বানিয়ে দিয়েছেন বলে গত কুরবানীর ঈদের ২ দিন আগে মৌখিক অভিযোগ করেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীর কাছে। অভিযোগ শুনে সমাজকল্যাণমন্ত্রী তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেন। তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুজিবুর রহমানকে ফোন দিয়ে সরকারী ভুমি দখলমুক্ত করার কড়া নির্দেশ দেন। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুজিবুর রহমান ফোনের সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান, সরকারী ভুমি দখলমুক্ত করতে মাননীয় মন্ত্রী,র নির্দেশনা বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব সহকারী কমিশনার ভুমিকে প্রদান করি। এবং গত ৪ ডিসেম্বর মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মুচি পরিবারের বসতঘর সহ মোকামবাজারে আরো ৪ টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এলাকাবাসী জানায়,মোকামবাজারে ফতেপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দের জমিতে গড়ে উঠা দুঠি দোকান উচ্ছেদ করা হলে ঐদিনই উচ্ছেদকৃত জমি আবার দখল হয়ে গেছে। তাছাড়া গত কয়েকবছর ধরে হাসপাতালের জমিতে গড়ে উঠা স্থায়ী দোকানপাট গুলো সেদিন অজ্ঞাত কারণে উচ্ছেদ করা হয়নি।ফতেপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রের উপ-পরিচালক ডাঃ দিলিপ কুমার জানান, হাসপাতালের জমি দখলমুক্ত করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে সকল কাগজপত্র দাখিল করা হয়েছে। কখন উচ্ছেদ হবে সেটা জানিনা।